লিভারপুলে ক্লপের ইউরোপ-অধ্যায়ের ইতি
ফুটবল–রোমান্টিকেরা ভেবে রেখেছিলেন অন্য কিছু। ডাবলিনে ২২ মে ফাইনাল। লিভারপুল সমর্থকেরা নিশ্চয়ই এই ম্যাচ দিয়েই ইয়ুর্গেন ক্লপকে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় জানাতে চাইবেন। কিন্তু সেটি আর হচ্ছে না। বার্গামোয় গতকাল রাতে ইউরোপা লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল ফিরতি লেগে আতালান্তার বিপক্ষে ১–০ গোলে জিতেছে লিভারপুল। কিন্তু সেমিফাইনালে ওঠার জন্য এই জয় যথেষ্ট হয়ে ওঠেনি।
অ্যানফিল্ডে গত সপ্তাহে প্রথম লেগ ৩–০ গোলে হেরেছিল লিভারপুল। দুই লেগ মিলিয়ে ৩–১ ব্যবধানের হারে ইউরোপা লিগ থেকে লিভারপুলের বিদায়ের পাশাপাশি ইংলিশ ক্লাবটির সঙ্গে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ক্লপের অধ্যায়ও ফুরোল। মৌসুম শেষেই যে লিভারপুল ছাড়ার ঘোষণাটা গত জানুয়ারিতেই দিয়ে রেখেছেন এই কোচ। ইউরোপিয়ান ট্রফি দিয়ে ক্লপকে বিদায় জানানোর ভাগ্যটা আর হলো না অ্যানফিল্ডের ক্লাবটির।
ক্লপের বিদায়টা রাঙিয়ে দিতে মোট চারটি ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা ছিল লিভারপুলের—লিগ কাপ, এফএ কাপ, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও ইউরোপা লিগ। লিগ কাপটা জেতা হয়েছে, কিন্তু এফএ কাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে হেরে। প্রিমিয়ার লিগ পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে ২ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে তৃতীয় লিভারপুল। হাতে আছে ৬টি ম্যাচ। আর গতকাল রাতে তো বিদায় ঘটল ইউরোপা লিগ থেকে। লিভারপুলকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানো ক্লপের এই ক্লাবে ৯ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে এটা ছিল ৯১তম ইউরোপিয়ান ম্যাচ।
ম্যাচের ৭ মিনিটে পেনাল্টি থেকে মোহাম্মদ সালাহর গোলে এগিয়ে যায় লিভারপুল। ট্রেন্ট–আলেক্সান্দার আর্নল্ডের ক্রস থেকে বক্সে হ্যান্ডবল করেন আতালান্তার ডিফেন্ডার। স্পটকিক থেকে সহজেই গোল করেন সালাহ। কিন্তু এরপর আর গোল পায়নি লিভারপুল। প্রথমার্ধে আতালান্তা গোলকিপার হুয়ান মুসোকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি সালাহ। বিরতির পর এই সালাহর পাস থেকেই বল আতালান্তার আইজ্যাক হিয়েনের হাতে লেগেছিল। কিন্তু পেনাল্টির আবেদন করেও সফল হতে পারেনি লিভারপুল। শেষ পর্যন্ত দুই লেগ মিলিয়ে তুলে নেওয়া জয়ে সেমিফাইনালে মার্শেইয়ের মুখোমুখি হওয়া নিশ্চিত করেছে ইতালিয়ান ক্লাব আতালান্তা।
ইউরোপা লিগ থেকে বিদায়ের মধ্য দিয়ে লিভারপুলের ১২ দিনের বাজে একটা সময়ের চক্রও শেষ হলো। এ সময়ের মধ্যে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে ড্র এবং ঘরের মাঠে ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে হেরে লিগ শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বড় ধাক্কা খায় ক্লপের দল। ইউরোপে দ্বিতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা থেকেও বিদায়ের পর লিভারপুল কোচ ক্লপ বলেছেন, ‘মিশ্র অনুভূতি হচ্ছে। আমরা বাদ পড়েছি। তবে ম্যাচ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। আমাদের সামনে লক্ষ্যটা (প্রথম লেগের জন্য) কঠিন ছিল। ডাবলিনে যাওয়ার আশা করেছিলাম। কিন্তু সেটা ঘটল না। এখন আমাদের সামনে শুধু একটি প্রতিযোগিতাই (প্রিমিয়ার লিগ) আছে। সেখানে নিজেদের আমরা নিংড়ে দেব।’
প্রিমিয়ার লিগে ৩২ ম্যাচে ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে সিটি। সমান ম্যাচে ৭১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় আর্সেনাল এবং লিভারপুলও ৭১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়। গোল ব্যবধানে আর্সেনালের চেয়ে পিছিয়ে লিভারপুল। রোববার এই প্রতিযোগিতায় ফুলহামের মুখোমুখি হবে লিভারপুল।