সমর্থকের মৃত্যুতে জয়ের আনন্দ ম্লান বায়ার্ন মিউনিখের
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে আগের ২ ম্যাচেই হার। অ্যাস্টন ভিলার মাঠে হারের ব্যবধানটা ছিল ১–০ গোলে, বার্সেলোনার কাছে ৪–১ গোলে বিধ্বস্ত।
এমন বাজে অভিজ্ঞতা ভুলে যাওয়ার সবচেয়ে কার্যকর উপায় কী? অবশ্যই জয়। বার্য়ান মিউনিখ কাল কাজটা ভালোভাবেই করতে পেরেছে। নিজেদের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় বেনফিকাকে তারা হারিয়েছে ১–০ গোলে। তবে বায়ার্নের এই জয়ের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে মাঠে খেলা দেখতে যাওয়া এক সমর্থকের মৃত্যুর খবরে।
বায়ার্ন মিউনিখ কর্তৃপক্ষ ও ক্লাবটির সমর্থকগোষ্ঠী ‘ক্লাব এনআর. ১২’ জানিয়েছে, ম্যাচ শুরু হওয়ার ৩ মিনিট পরেই আলিয়াঞ্জ অ্যারেনার দক্ষিণ পাশের গ্যালারিতে (জার্মান ভাষায় সুডকুর্ভে নামে পরিচিত) বসা এক সমর্থক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে স্টেডিয়ামের ওই অংশে নেমে আসে নীরবতা।
ওই সমর্থকের আশপাশে থাকা অন্য সমর্থকেরা প্যারামেডিক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রায় আধা ঘণ্টা পর একটি স্ট্রেচারে করে তাঁকে স্টেডিয়ামের বাইরে নেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ওই সমর্থকের নাম–পরিচয় কোনো সংবাদমাধ্যম এখনো জানাতে পারেনি।
বায়ার্ন–ভক্তের মৃত্যুর খবরে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় শোকের আবহ নেমে আসে। তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে গ্যালারিতে থাকা সমর্থকেরা গান গাওয়া বন্ধ করে দেন। কেউ কোনো ধরনের স্লোগানও দেননি।
এক বিবৃতিতে বায়ার্ন মিউনিখ জানিয়েছে, ‘আলিয়াঞ্জ অ্যারেনার গ্যালারিতে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ায় ম্যাচটা শুরুর পরপরই আড়ালে চলে যায়। স্টেডিয়ামের ওই অংশের সমর্থকেরা যতটা উল্লসিত থাকেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাঁরা অতটা উল্লাস করেননি। ক্লাবও ম্যাচের কাভারেজ কমিয়ে দেয়।’
সমর্থকের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বায়ার্ন আরও লিখেছে, ‘রেফারি শেষ বাঁশি বাজানোর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে জার্মানির রেকর্ড চ্যাম্পিয়নরা দুঃসংবাদটি জানতে পারে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে আমাদের এক সমর্থক মারা গেছেন। ওই সমর্থকের স্বজনদের পাশাপাশি বায়ার্নও শোকে মুহ্যমান।’
বায়ার্ন সমর্থকগোষ্ঠী ‘ক্লাব এনআর. ১২’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছে, ‘(একজন সমর্থকের) জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ায় আমরা আজ (গত রাতে) দলকে স্বাভাবিক সমর্থন জানাতে পারছি না। আগে জীবন, পরে খেলা। তার পরিবারের সবাই এবং বন্ধুরা যেন শক্ত থাকতে পারে, আমরা সেই কামনা করছি।’
ম্যাচের ৬৭ মিনিটে হ্যারি কেইনের কাছ থেকে বল পেয়ে হেডে জয়সূচক গোলটি করেন জামাল মুসিয়ালা। খেলোয়াড়দের মতো সমর্থকেরাও গোল উদ্যাপন করেছেন। তবে পরক্ষণেই গোটা স্টেডিয়াম আবারও নীরব হয়ে যায়।
ম্যাচ শেষে বায়ার্ন মিডফিল্ডার কোনার্ড লাইমার বলেন, ‘খেলার সময় (সমর্থকের মৃত্যুর খবর) আমাদের জানা ছিল না, খেলা শেষ হওয়ার পরপরই জেনেছি। আমরা তাঁর পরিবারের পাশেই আছি।’