ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পে—এই হলো গত ১২ মাসে বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত তিন অ্যাথলেট। যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকী ফোর্বস গতকাল রাতে ২০২৩ সালের বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অ্যাথলেটদের তালিকা প্রকাশ করেছে। অন্য সব খেলাকে টেক্কা দিয়ে এ তালিকার শীর্ষ তিনে রাজত্ব ফুটবলারদের। রোনালদো শীর্ষে, দুইয়ে মেসি, তিনে এমবাপ্পে।
রোনালদো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে গত জানুয়ারিতে যোগ দেন সৌদি আরবের ক্লাব আল–নাসরে। প্রায় দ্বিগুণ বেতনে ক্লাবটিতে যোগ দেন ৩৮ বছর বয়সী পর্তুগিজ তারকা। এরপরই পারিশ্রমিকে উঠে আসেন সবার ওপরে।
ফোর্বস জানিয়েছে, রোনালদো ক্লাবটিতে এ পর্যন্ত মোট আয় করেছেন ১৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার। সৌদি ক্লাবটিতে তাঁর বার্ষিক বেতন আনুমানিক ৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ফোর্বস রোনালদোর আয়কে দুই ভাগে ভাগ করেছে—মাঠ থেকে অর্থাৎ খেলার জন্য আয় আর স্পনসর, প্রচারণা ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি থেকে আয়। মাঠের খেলায় রোনালদোর আয় ৪ কোটি ৬০ লাখ আর আনুষঙ্গিক থেকে আয় ৯ কোটি ডলার। আল–নাসরের সঙ্গে ২০২৫ পর্যন্ত চুক্তি রোনালদোর। রয়টার্স জানিয়েছে, সংবাদমাধ্যমের হিসাব অনুযায়ী রোনালদোর এই চুক্তিপত্রের মূল্য প্রায় ২২ কোটি ডলার।
৩৫ বছর বয়সী মেসির মোট আয় ১৩ কোটি ডলার। রোনালদোর পরই দুইয়ে আছেন আর্জেন্টাইন তারকা। মাঠ থেকে মেসির আয় ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং মাঠের বাইরে আয় করেছেন আরও ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার। তৃতীয়স্থানে থাকা এমবাপ্পের বেতন বেশি হওয়ায় মাঠ থেকে তাঁর আয় মেসি ও রোনালদোর চেয়ে বেশি।
ফোর্বস জানিয়েছে, পিএসজির এই ফরাসি তারকা মাঠ থেকে আয় করেছেন ১০ কোটি ডলার। আর মাঠের বাইরে থেকে আয় ২ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে ১২ কোটি ডলার আয় করে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অ্যাথলেটদের তালিকায় তিনে ফরাসি ফুটবল তারকা।
ফুটবলের বাইরে অন্য কোনো খেলোয়াড় জায়গা করে নিতে পেরেছেন তালিকার চারে। বাস্কেটবল কিংবদন্তি ও লস অ্যাঞ্জেলস লেকার্সের তারকা লেব্রন জেমস মোট ১১ কোটি ৯৫ লাখ ডলার আয় করে এ তালিকায় চতুর্থ। মেক্সিকোর বক্সার ক্যানেলো আলভারেজ ১১ কোটি ডলার আয় করে পাঁচে। শীর্ষ দশে বাকি পাঁচজনের মধ্যে দুজন গলফার—সাবেক নাম্বার ওয়ান ডাস্টিন জনসন ছয়ে (১০ কোটি ৭০ লাখ ডলার) ও সাতে ইতিহাসের সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মেজর চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের রেকর্ড গড়া ফিল মিকেলসন (১০ কোটি ৬০ লাখ ডলার)।
তালিকার শীর্ষ দশে শেষ তিনজনের দুজন বাস্কেটবল কিংবদন্তি এবং আরেকজন টেনিসের কিংবদন্তি। গোল্ডেন স্টেট ওয়ারিয়র্সের তারকা ও বাস্কেটবল কিংবদন্তি স্টিফেন কারি ১০ কোটি ৪ লাখ ডলার আয় করে অষ্টম স্থানে আছেন। ৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার আয় করে নবম টেনিসের সুইস কিংবদন্তি রজার ফেদেরার। আর ফোনিক্স সানসের তারকা কেভিন ডুরান্ট দশম স্থানে আছেন ৮ কোটি ৯১ লাখ ডলার আয় করে।
ফোর্বস জানিয়েছে, শীর্ষ এই দশ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত খেলোয়াড় কর এবং এজেন্ট ফির হিসাব বাইরে রেখে গত ১২ মাসে আয় করেছেন মোট ১১১ কোটি ডলার। গত বছরের তুলনায় শীর্ষ দশের এই আয় বেড়েছে ১২ শতাংশ। গত বছর শীর্ষ দশ মিলে আয় করেছিল মোট ৯৯ কোটি ডলার। আর ২০১৮ সালের রেকর্ডও এবার ভেঙেছেন শীর্ষ দশে থাকা অ্যাথলেটরা। সে বছর ১০৬ কোটি ডলার আয় করেছিলেন তাঁরা, এবার আয়ের অঙ্কে তা বেড়েছে ৫ শতাংশ।
২০২২ সালের ১ মে থেকে এ বছরের ১ মে পর্যন্ত খেলোয়াড়দের আয়ের এই হিসাব করেছে ফোর্বস। মাঠের আয়ের মধ্যে প্রাইজমানি, বেতন ও বোনাস হিসাব করা হয়েছে। মাঠের বাইরের আয়ের মধ্যে স্পনসর চুক্তি, নিবন্ধনভুক্ত আয়, হাজিরা ফির পাশাপাশি খেলোয়াড়টি কোনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকলে সেই ব্যবসা থেকে যে পরিমাণ টাকা ফেরত পেয়েছেন, সেসবও হিসাব করেছে ফোর্বস। সাময়িকীটি এসব তথ্য বের করেছে সংশ্লিষ্ট শিল্পের ভেতরকার সূত্র মারফত তথ্য নিয়ে।