কৃষ্ণাকে নিয়েই সাফের কঠিন মিশনে বাংলাদেশ, আগাম প্রতিশ্রুতি দেননি বাটলার
২০২২ সালে নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের ফুটবলকে আনন্দে ভাসিয়েছিল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। ঠিক দুই বছর পর সেই অর্জন ধরে রাখার কঠিন লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে বাংলাদেশকে সেই নেপালের মাটিতেই। আরও একটি সাফ খেলতে আগামীকাল নেপাল যাবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।
আজ বাফুফে ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সেই কঠিন মিশনের আগে নিজেদের প্রস্তুতি ও লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন নারী দলের ইংলিশ কোচ পিটার বাটলার ও অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। কোচ বাটলার কোনো প্রতিশ্রুতি দিলেন না, তবে তিনি বলেছেন, ‘দলের খেলোয়াড়দের যদি সততা ও নিষ্ঠা থাকে, তারা যদি আমার পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারে, তাহলে সাফল্য পাওয়া সম্ভব। তবে আমি আগাম কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে চাইছি না।’
অধিনায়ক সাবিনার মতে, এবারের সাফ কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং হতে যাচ্ছে, ‘আমরা গত সাফে ভারত ও নেপালকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিলাম। গ্রুপ পর্বে ভারতকে হারিয়েছিলাম ৩-০ গোলে। আমি তো মনে করি, ভারত, নেপাল এবার আরও বেশি প্রস্তুতি নিয়ে আসবে, এবারের সাফ অবশ্যই কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং হতে যাচ্ছে।’
কোচ বাটলার আগেও বলেছেন, তিনি অতীতে পড়ে থাকতে চান না। একই কথা বলেছেন আজও, ‘আমি অতীতে বাস করি না। হ্যাঁ, দুই বছর আগে শিরোপা জিতেছিলাম, তবে এবার সবকিছু নতুন করেই করতে হবে। এই দলে নতুন কয়েকজন খেলোয়াড় আছে, পুরোনো, অভিজ্ঞরা আছে। আমাদের কয়েক ধরনের পরিকল্পনা থাকবে। অন্যরা কী করবে, তারা কেমন দল, এসব নিয়ে ভেবে লাভ নেই। নিজেদের যা শক্তি আছে, সে অনুযায়ী খেলতে পারলে সাফল্য পাব, আশা করি।’
দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় কৃষ্ণা রানী সরকারকে নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে গত বুধবার ভোরের অনুশীলন সেশনে কৃষ্ণা দলে থাকবেন কি না, তা নিয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি কোচ বাটলার। আজ সাফের জন্য ২৩ জনের যে চূড়ান্ত দল দিয়েছেন তিনি, তাতে কৃষ্ণা আছেন। গত সাফের ফাইনালে এই কৃষ্ণাই নেপালের বিরুদ্ধে জোড়া গোলসহ টুর্নামেন্টে মোট ৪ গোল করেছিলেন।
প্রথমবারের মতো সাফ খেলতে যাচ্ছেন ৯ জন—আফঈদা খন্দকার, মোসাম্মাৎ সাগরিকা, ইয়ারজান বেগম, আইরিন খাতুন, মুনকি আক্তার, কোহাতি কিসকু, শাহেদা আক্তার রিপা, মিলি আক্তার ও মাতসুশিমা সুমাইয়া। সাগরিকা গত ফেব্রুয়ারিতে অনূর্ধ্ব-১৯ সাফে ঝড় তুলেছিলেন। গত জুলাইয়ে ভুটানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে অভিষেকেই করেছিলেন হ্যাটট্রিক। কোচ বাটলারও তাঁর দল নিয়ে সন্তুষ্ট। সাবিনা, সানজিদা, মাসুরা, ঋতুপর্ণা, মারিয়া, মনিকা, রুপনাদের পাশাপাশি নতুনদের নিয়েও তিনি দারুণ আশাবাদী।
গতবারের শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ কি এবার দলের ওপর বড় চাপ? বাটলার তেমন মনে করেন না, ‘আমরা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করব সাফে। আমরা শিরোপা ধরে রাখার মিশনে যাচ্ছি। এটাকে আমরা মোটেও চাপ মনে করি না। ফুটবল আমাদের দলের খেলোয়াড়দের জন্য, আমার জন্য মোটেও চাপ নয়; বরং আনন্দের ব্যাপার। গৌরবের ব্যাপার।’
১৭ অক্টোবর কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে শুরু হবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। বাংলাদেশের গ্রুপে আছে ভারত ও পাকিস্তান। ২০ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ পাকিস্তানের বিপক্ষে। ২৩ অক্টোবর দ্বিতীয় ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে।
বাংলাদেশ দল : রুপনা চাকমা, মাসুরা পারভীন, আফঈদা খন্দকার, শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার সিনিয়র, নীলুফা ইয়াসমিন নীলা, আইরিন খাতুন, কোহাতি কিসকু, মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্দা, স্বপ্না রানী, মাতসুশিমা সুমাইয়া, সানজিদা আক্তার, মুনকি আক্তার, ঋতুপর্ণা চাকমা, শাহেদা আক্তার রিপা, সাবিনা খাতুন, তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহার জুনিয়র, কৃষ্ণা রানী সরকার, মোসাম্মৎ ইয়ারজান, মিলি আক্তার, মোসাম্মৎ সাগরিকা।