বাংলাদেশের ফুটবলের খোঁজ নিচ্ছে ফিফা
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের ফুটবলে কী ঘটছে, তা নিয়ে সজাগ ফিফা। বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা থেকে বাফুফের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছে। কোনো সমস্যা থাকলে ফিফাকে জানাতে, ফিফার তরফে বাফুফের কাছে এমন বার্তাও এসেছে।
বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘এরই মধ্যে ফিফা আমাদের সঙ্গে অফিশিয়ালি যোগাযোগ করেছে। ফিফার আঞ্চলিক ম্যানেজাররা সব সময় খোঁজখবর রাখছেন। পত্রিকার মাধ্যমে তাঁরা এখানকার খবর পাচ্ছেন। আমাকে জিজ্ঞাসা করছেন, কোনো সমস্যা আছে কি না। আমি ইতিবাচকভাবেই তাঁদের বলেছি সবকিছু।’
‘ইতিবাচক’ বলতে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক বুঝিয়েছেন, দেশে সরকার বদলের পর বাফুফের নেতৃত্বের পদত্যাগের যে দাবি উঠেছে, তা নিয়ে এখনো কোনো সমস্যা হয়নি। ফিফাকে নেতিবাচক কিছু বললে কঠিন কোনো পরিস্থিতির মুখে পড়তে হতে পারে।
তবে একটা অস্থিরতা চলছে দেশের ফুটবলে। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনের পদত্যাগের দাবি উঠেছে আগেই। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ‘মার্চ টু বাফুফে’ নাম দিয়ে মতিঝিল বাফুফে ভবনের সামনে বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাসের ২৫-৩০ সমর্থকের একটি দল বিক্ষোভ করেছে।
সালাহউদ্দিনের সঙ্গে বাফুফের সদস্য মাহফুজা আক্তারের পদত্যাগও দাবি করেছে তারা। সালাহউদ্দিনকে যেখানে পাওয়া যাবে আক্রমণ করারও হুমকি দিয়েছেন সমর্থকদের কেউ কেউ।
বাফুফে ভবনের সামনে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বাফুফের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে আন্দোলনকারীদের দাবি পৌঁছে দেবেন বলেছেন। এর অগ্রগতি সম্পর্কেও জানাবেন আন্দোলনকারীদের।
সাধারণ সম্পাদক আন্দোলনকারীদের বলেন, অপ্রীতিকর কিছু হলে দেশের ফুটবলেরই ক্ষতি। ফিফার নিষেধাজ্ঞা নেমে আসতে পারে, ‘কোনো কারণে বাফুফে নিষিদ্ধ হলে খেলোয়াড়দের ক্ষতি হবে। তাই সমর্থকদের বলেছি, ফুটবলে যেন কোনো ক্ষতি না হয়। ফুটবলকে তারা (সমর্থকেরা) ভালোবাসে বলেই এখানে এসেছে। তবে কোনোরকম হস্তক্ষেপ যেন না আসে। বাফুফেকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে।’
শুধু বাফুফেতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হলেই নিষিদ্ধ হবে না বাংলাদেশ। তৃতীয় কোনো পক্ষের হস্তক্ষেপও গ্রহণযোগ্য নয় জানিয়ে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক যোগ করেন, ‘বাফুফের নির্বাচন আগামী ২৬ অক্টোবর। কারও কোনো দাবি থাকলে তারা নির্বাচনে আসুক, গণতান্ত্রিকভাবে হোক সবকিছু।’
ফেডারেশনের কমিটিতে সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশকে নিষিদ্ধ করেছিল ফিফা। নির্বাচিত কমিটি ভেঙে সরকার তখন এডহক কমিটি করায় ওই শাস্তি নেমে এসেছিল। পরে এক মাসের মধ্যে নির্বাচিত কমিটি বহাল করা হলে ফিফা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
প্রশ্ন আসছে বাফুফে ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে। সেখানে নারী ফুটবলাররা থাকেন। তবে আপাতত ১০ দিনের জন্য নারী ফুটবলারদের ক্যাম্প বন্ধ করা হয়েছে। বাফুফে বলছে, মেয়েরা ছুটি চেয়েছেন। তবে সূত্র বলছে, নিরাপত্তাহীনতা, আর্থিক সমস্যা আছে বাফুফের। সুযোগ বুঝে ছুটির জন্য এই সময় বেছে নেওয়া হয়েছে। মেয়েরা ছুটিতে যাচ্ছেন আগামীকাল থেকে।