মেসিকে দেখলেই ‘বার্সেলোনা’কে দেখেন অঁরি
লিওনেল মেসি যখন দুই বছর আগে বার্সেলোনা ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তখন অনেকেই বলেছিলেন অন্য দলের জার্সিতে মেসিকে দেখতে একটু অদ্ভুত লাগতে পারে! আর্জেন্টাইন তারকা পিএসজিতে প্রায় দুই বছর কাটিয়ে দিয়েছেন। আর্জেন্টিনা ও বার্সেলোনার জার্সি ছাড়া অন্য দলের জার্সিতে তাঁকে কেমন দেখায়, সেই অভ্যাস সবারই হয়ে গেছে। কিন্তু থিয়েরি অঁরির অভিজ্ঞতা ভিন্ন। এখনো মেসির দিকে তাকালে নাকি বার্সেলোনাকেই দেখেন ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এ স্ট্রাইকার।
ফ্রান্সের হয়ে ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী অঁরি বলেছেন, ‘মেসির দিকে তাকালেই আমি বার্সেলোনাকে দেখি।’ অঁরির চাওয়া, মেসি যেন পিএসজি ছেড়ে বার্সায় চলে যান।
মেসির শুরুর বছরগুলোতে বার্সেলোনাতে খেলেছেন আর্সেনালে কিংবদন্তিতুল্য অঁরি। আর্জেন্টাইন তারকার সঙ্গে তিন মৌসুম কাটিয়েছেন এই ফরাসি তারকা। ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বার্সায় খেলেছিলেন। অ্যামাজন প্রাইমের ‘দিমাঁশে সোয়ার ফুটবল’ নামে এক অনুষ্ঠানে অঁরি পিএসজি সমর্থকদের মেসির প্রতি ক্ষোভ এবং তাঁকে লক্ষ্য করে শিস দেওয়া নিয়ে বলেছেন, ‘আমি সেই শিসের অর্থ বুঝি। কিন্তু সেটি মেনে নেওয়ার কোনো মানে নেই। এই প্রথম মেসিকে উদ্দেশ করে গ্যালারি থেকে শিস দেওয়া হয়নি। কেউ কেউ বলতে পারে, এই শিস মেসির প্রাপ্য। পিএসজির সমস্যা মেসি নয়, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে মেসি আমাকে কিছু শিরোপা জিতিয়েছে, যা আমার লক্ষ্য ছিল। কিন্তু আমি মনে করি মেসির অনুশীলন ফাঁকি দেওয়াটা উচিত হয়নি। কোনো খেলোয়াড়ই ক্লাবের চেয়ে বড় নয়। তবে আমি কখনোই কোনো শিরোপা জেতা ক্লাবের সমর্থকদের তাঁর দলের খেলোয়াড়কে উদ্দেশ করে শিস দিতে দেখিনি। এটা নজিরবিহীন।’
৩০ জুন পিএসজির সঙ্গে মেসির দুই বছরের চুক্তি শেষ হয়ে যাবে। ফরাসি ক্লাবটির সঙ্গে তাঁর চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির কথা ছিল। ডিসেম্বরে বিশ্বকাপ জেতার পর থেকেই নতুন চুক্তি নিয়ে কথা চলছিল। কিন্তু নানা কারণে ব্যাপারটি আটকে যায়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেসি যে অঙ্কের বেতন দাবি করেছিলেন, সেটি নাকি পিএসজি দিতে চায়নি। নতুন চুক্তির মেয়াদ নিয়েও নাকি দুই পক্ষের দ্বিমত ছিল। আলোচনায় অচলাবস্থার মধ্যেই পিএসজির সঙ্গে মেসির সম্পর্কের অবনতি হয়। এ মাসের শুরুতে ক্লাবের অনুমতি ছাড়া আর্জেন্টাইন তারকা সৌদি আরব সফরে যান। সৌদির পর্যটনদূত হিসেবে তাঁর সৌদি সফর ভালোভাবে নেয়নি পিএসজি কর্তৃপক্ষ। মেসিকে নিষিদ্ধ করা হয় দুই সপ্তাহের জন্য। যদিও সেই নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে তাঁকে খেলানো হয়েছে একটি ম্যাচ, তবে সেই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই খবর বের হয়, সৌদি আরবের কোনো এক ক্লাবের সঙ্গে মেসি নাকি চুক্তি চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। কিন্তু সেই খবর অস্বীকার করেন মেসির ঘনিষ্ঠজনেরা।
এদিকে পিএসজির সঙ্গে মেসির সম্পর্কের অবনতির মধ্যেই পুরোনো ক্লাব বার্সেলোনায় তাঁর ফেরার কানাঘুষা শুরু হয়। খবর বের হয়, মেসিও নাকি বার্সেলোনায় ফিরতে চান। কিন্তু মেসিকে ফেরাতে হলে বার্সেলোনাকে কিছু ব্যাপারে সমন্বয় করতে হবে। আর্থিক সংগতি নীতি অনুযায়ী কিছু খেলোয়াড়কে ছেড়ে দিতে হবে। সব মিলিয়ে মেসি বার্সেলোনায় আদৌ ফিরবেন কি না, সেটি নিশ্চিত নয়। যদিও এবারের লা লিগায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বার্সেলোনা সমর্থকেরা মেসিকে ফেরানোর দাবি তুলেছেন। ক্লাব সভাপতি হোয়ান লাপোর্তাও মেসিকে ফেরানোর ব্যাপারে কথা বলছেন, কিন্তু তারপরও নিশ্চিত বলে ধরে নেওয়া যাচ্ছে না কোনো কিছুকেই। এদিকে মেসি সৌদি ক্লাব আল হিলালের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের ক্লাব ইন্টার মায়ামির কাছ থেকেও প্রস্তাব পেয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। আল হিলালের প্রস্তাবটি নাকি রীতিমতো আকাশ ছুঁইছুঁই।