‘ঠেকা’ কোচ দিয়ে কাজ চালাচ্ছে ব্রাজিল
ঘোষণাটা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতেই দিয়েছিলেন তিতে। জানিয়েছিলেন, কাতার বিশ্বকাপ শেষে ব্রাজিল কোচের পদ ছাড়বেন। নতুন কোচ বেছে নেওয়ার জন্য সময়টা তখন থেকেই পেয়েছে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)।
এর মধ্যে নেইমাররা কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বাদ পড়ার পর তিতে চাকরিও ছাড়লেন। সব মিলিয়ে তিতের সেই ঘোষণার পর পেরিয়ে গেছে ৪৫৫ দিন। এখনো নতুন কোচের সন্ধান পায়নি ব্রাজিল। পূর্ণ মেয়াদের কোচ ছাড়াই ঠেকা কাজ চালাতে হচ্ছে।
একেকটি বিশ্বকাপ শেষে পরের বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় নিজেদের ঘর গোছায় দলগুলো। আর্জেন্টিনা যেমন কাতারে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ২০২৬ বিশ্বকাপ সামনে রেখে কাজ শুরু করেছে। কোচ লিওনেল স্কালোনিকে আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত বহাল রেখে নতুন প্রজন্ম তৈরির কাজে নেমেছে আর্জেন্টিনা। কাতারে রানার্সআপ হওয়া ফ্রান্সও তাই কোচ দিদিয়ের দেশমকে আগামী মৌসুম পর্যন্ত ধরে রাখা নিশ্চিত করেছে।
কিন্তু পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল সে পথে এগোনো দূরের কথা, নতুন কোচই এখন পর্যন্ত ঠিক করতে পারেনি। ফিফার সদস্যভুক্ত ২১১টি দেশের মধ্যে ২০২৬ বিশ্বকাপ সামনে রেখে যে ৭টি দল এখনো নতুন কোচ খুঁজে বের করতে পারেনি, ব্রাজিল তাদের একটি।
ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে, নেইমারদের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে শুক্রবার আবারও র্যামন মেনেজেসের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য যে ছয়টি দেশ এখনো পূর্ণ মেয়াদের কোচ নিয়োগ দিতে পারেনি, সেসব দেশের পাশে ব্রাজিলের নামটা একটু বেমানান লাগতে পারে—নিউজিল্যান্ড, ফিজি, জিবুতি, যুক্তরাষ্ট্র, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রানাডা এবং সৌদি আরব।
গত মার্চে হার্ভে রেনার্ড সৌদি আরবের দায়িত্ব ছেড়ে ফ্রান্স নারী জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব নেন। আগামী মাসেই বিশ্বকাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ফ্রান্স নারী দল। অন্যদিকে তিতে কাতার বিশ্বকাপ শেষ করে ব্রাজিলের দায়িত্ব ছাড়ার আগাম ঘোষণা দেন গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি। এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও তিতের শূন্যস্থান পূরণ হয়নি।
কার্লো আনচেলত্তিকে নিয়ে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। সিবিএফ সভাপতি এদনালদো রদ্রিগেজ এর আগে আনচেলত্তির প্রতি আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। কিন্তু ইতালিয়ান কোচ ব্রাজিলের দায়িত্ব নেবেন কি না, তা এখনো অনিশ্চিত। আনচেলত্তির আটলান্টিক পাড়ি না দেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। একাধিকবার স্পষ্ট করেই বলেছেন, রিয়ালের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ মেয়াদ তিনি পূর্ণ করতে চান। বর্তমানে স্প্যানিশ ক্লাবটির সঙ্গে ২০২৪ পর্যন্ত চুক্তি আছে তাঁর।
গ্লোবো জানিয়েছে, কাতার বিশ্বকাপের পর ৫০টি দেশ কোচ পাল্টেছে, ১৭ জন কোচের চাকরি টিকে গেছে, মানে বিশ্বকাপের পর ছাঁটাই হননি। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশে নতুন কোচ এসেছেন আটজন। র্যামন মেনেজেস ছিলেন ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২০ দলের কোচ, সেখান থেকে তাঁকে জাতীয় দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব দেওয়া হলেও এখন তিনি আছেন আর্জেন্টিনায়। সেখানে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের দায়িত্বে আছেন। অর্থাৎ, ব্রাজিল জাতীয় দলের সঙ্গে এই মুহূর্তে কেউ নেই। কাতার বিশ্বকাপের পর নতুন বছরে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশে শুধু আর্জেন্টিনাই কোচ পাল্টায়নি। সর্বশেষ এ মাসে কোচের শূন্যতা পূরণ করেছে উরুগুয়ে। মার্সেলো বিয়েলসাকে দেওয়া হয়েছে এই দায়িত্ব।
আর্জেন্টিনা থেকে মেনেজেস আগামী রোববার ফিরবেন বলে জানিয়েছে গ্লোবো। জুনে দুটি প্রীতি ম্যাচ আছে ব্রাজিলের। তখন এ দুটি ম্যাচের স্কোয়াড ঘোষণা করবেন তিনি। ১৭ জুন বার্সেলোনায় প্রথম ম্যাচে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ গিনি এবং তিন দিন পর লিসবনে প্রতিপক্ষ সেনেগাল।