বাংলাদেশের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলবেন। ম্যাচ দুটি কতটা কঠিন হবে ভুটানের জন্য?
নাকামুরা: অবশ্যই কঠিন ম্যাচ। তবে সব দিক মাথায় রেখেই খেলার চেষ্টা করব। আক্রমণ যেমন করব, রক্ষণের দিকেও মনোযোগ রাখব। একটা ফুটবল ম্যাচ জিততে দুটিই খুব গুরুত্বপূর্ণ।
থিম্পুর চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে খেলা মানে তো ভুটান বাড়তি সুবিধা পাবে...
নাকামুরা: তা তো পাবেই। সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়েই জিততে চাইব। ভুটান জাতীয় দলের হয়ে এটি হবে আমার প্রথম ম্যাচ। কোনো দেশের জাতীয় দলের হয়েও প্রথম। বাংলাদেশকে হারিয়ে নিশ্চিতভাবেই সিনিয়র বিভাগে অভিষেকটা রাঙাতে চাই। ভুটানের মানুষও তা-ই চায় আমার কাছে।
ভুটানের ফুটবলে সবচেয়ে বড় তারকা এবং দেশটির সর্বকালের সেরা গোলদাতা চেনচো গাইসেন কি খেলবেন বাংলাদেশের বিপক্ষে?
নাকামুরা: সে ভুটানে নেই। ইন্দোনেশিয়ায় পালেমবাং ভিত্তিক দল শ্রীউইজায়ার হয়ে খেলতে গেছে, যারা ইন্দোনেশিয়ার লিগ টুতে খেলে। বাংলাদেশের বিপক্ষে তাকে আমরা পাচ্ছি না।
বাংলাদেশ ম্যাচের প্রস্তুতি কেমন?
নাকামুরা: আমাদের এখানে ঘরোয়া লিগ চলছিল। এই সময়ে লিগের খেলা দেখে বাংলাদেশ ম্যাচের জন্য খেলোয়াড় বাছাই করেছি। ফলে সেভাবে খুব ভালো প্রস্ততি নিতে পারিনি। প্রথম ম্যাচের আগে আসলে আমরা তিন দিন একসঙ্গে অনুশীলন করতে পেরেছি। আরও কয়েকটা দিন সময় পেলে ভালো হতো।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ভুটান ১৪ ম্যাচ খেলে ১১টিতে হেরেছে। দুটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। ভুটান জিতেছে একটি মাত্র ম্যাচ। সেটি ২০১৬ সালে থিম্পুতেই, ৩-১ গোলে। চোনচো সেবার দুই গোল করেছিলেন...
নাকামুরা: তাই নাকি! ২০১৬ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভুটানের জয়ের বিয়ষটা আমার জানা নেই। এ নিয়ে কেউ আমাকে কিছু বলেওনি। তবে অতীত না ভেবে বর্তমানের দিকে তাকাতে হবে।
বাংলাদেশের ফুটবল, কোনো ফুটবলার কোচ সম্পর্কে জানেন? দলটার খেলার কোনো ভিডিও কি দেখেছেন?
নাকামুরা: কয়েকদিন আগ পর্যন্ত সবগু প্রশ্নেরই উত্তরই ছিল ‘না’। বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে আমার তেমন কোনো ধারণা ছিল না। এখন ম্যাচের আগে একটু আধটু খোঁজখবর নিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশ গত সাফ ফুটবলে ভালো খেলেছে শুনেছি। ২০১৮ সালে আমি যখন ভুটান অনূর্ধ্ব-১৮ দলের কোচ ছিলাম, তখন সম্ভবত এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে বাইরাইনে বাংলাদেশ যুব দলকে দেখেছিলাম।
দুই দলের সর্বশেষ চারটি ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে ভুটান হেরেছে। সেই হারের বৃত্ত কি ভাঙতে পারবেন এবার?
নাকামুরা: চেষ্টা তো থাকবেই। তবে আমি বাংলাদেশকে নিয়ে ভাবছি না। ভাবছি আমার দল নিয়ে। কীভাবে খেলব, সেই পরিকল্পনা করছি। আসলে মাত্র একমাস আগে আমি ভুটানে এসেছি। তবে ভুটান আমার কাছে অচেনা কোনো দেশ নয়। এখানকার অনেক কিছুই আমার চেনা।
পাঁচ বছর আগে আপনি ভুটানের ফুটবল একাডেমির প্রধান কোচ ছিলেন। আপনার হাতে তৈরি অনেক ফুটবলারই ভুটানের জাতীয় দলে খেলছেন, তাই না?
নাকামুরা: ঠিকই বলেছেন। পাঁচ বছর আগে আমি ভুটান ফুটবল ফেডারেশনের অধীনে ফুটবল একাডেমির প্রধান ছিলাম। সেটা ছিল দারুণ এক অভিজ্ঞতা। এদেশের তরুণ প্রজন্মকে গড়ে তোলার ব্যাপারে কিছু ভূমিকা আমি রাখতে পেরেছি।
একজন কোচ হিসেবে আপনার দর্শন কী?
নাকামুরা: শুধু আক্রমণ বা শুধু রক্ষণ নয়। দুটোর সমন্বয় আমার পছন্দ। এই নীতিতেই আমি পরিকল্পনা সাজাতে ভালোবাসি।
ভুটানে জীবন কেমন কাটছে?
নাকামুরা: ভালোই। পাহাড়ঘেরা ছোট্ট দেশটির মানুষজন বেশ আন্তরিক। কোনো সমস্যা নেই। নতুন জায়গায় যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, জাপানের চেয়ে তা আলাদা। প্রসঙ্গক্রমে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি?
প্লিজ বলুন...
নাকামুরা: বাংলাদেশ নাকি দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে দেখলাম। কী অবস্থা আপনাদের দেশের এখন? আশা করি, দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ভালো একটা দেশ হবে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল ১৯৭১ সালে। ২০২৪ সালে এসে ছাত্রজনতার গণআন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের প্রায় ১৬ বছরের শাসনামলের পতন হয়েছে। এখন দেশে একটি অন্তবর্তীকালীণ সরকার এসেছে। দেশ স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
নাকামুরা: আচ্ছা। শুভকামনা বাংলাদেশের জনগণের জন্য।