১০ লাখ ইউরো জমা দিয়ে জামিন পেলেন আলভেজ
অবশেষে জামিনে মুক্তি পেলেন দানি আলভেজ। ধর্ষণের অভিযোগে গত প্রায় ১৪ মাস কারাগারে আটক ছিলেন ব্রাজিলের এই ফুটবলার। বার্সেলোনার আদালত গত বুধবার জামিন দিয়েছিলেন আলভেজকে। কিন্তু জামিনের শর্ত হিসেবে আদালত যে ১০ লাখ ইউরো জমা দিতে বলেছিলেন, সেটি দিতে পারছিলেন না আলভেজ। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, জামিনের অর্থ শেষ পর্যন্ত পরিশোধ করতে পেরেছেন আলভেজ, তাই এখন আর মুক্তিতে বাধা নেই।
বার্সেলোনার নৈশ ক্লাবে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারিতে আটক হন আলভেজ। এরপর দীর্ঘ তদন্তপ্রক্রিয়া শেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি সাড়ে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে। রায়ের পর আলভেজের আইনজীবী সাজা মওফুক চেয়ে আপিল করেন। অন্যদিকে স্পেনের কৌঁসুলিরা ব্রাজিলিয়ান তারকার ৯ বছরের সাজা চেয়েছেন।
আদালত আপিল নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেন আলভেজকে। জামিনের জন্য নির্ধারিত অর্থের সঙ্গে ব্রাজিল ও স্পেনের পাসপোর্ট জমা দিয়ে বার্সেলোনাতেই অবস্থান করার নির্দেশ দেন আদালত। এ ছাড়া বিচারপ্রক্রিয়া প্রভাবিত হতে পারে, এমন কিছু থেকে বিরত থাকা এবং ভুক্তভোগীর এক হাজার মিটারের মধ্যে যাওয়ার ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এই ফুটবলারকে।
দুই দশকের বেশি সময়ের ফুটবল ক্যারিয়ারে সাফল্যের শিখর স্পর্শ করেছিলেন আলভেজ। ব্রাজিল, বার্সেলোনা, জুভেন্টাস ও পিএসজির হয়ে ৪৩টি শিরোপাও জিতেছেন এই ফুটবলার। ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপেও ব্রাজিলের স্কোয়াডে ছিলেন তিনি। তবে বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই বার্সেলোনায় ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে আলভেজের বিরুদ্ধে।
শুরুতে অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেন আলভেজ। ধর্ষণ মামলায় আটক হওয়ার সময় আলভেজ মেক্সিকান ক্লাব পুমাসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। পুমাস অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেয়। এরপর কারাগারে থাকা অবস্থায় তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান স্ত্রী হোয়ানা সাঞ্জ।
জামিন পেলেও জামানতের অর্থ জোগাড় করতে না পারার কারণে মূলত কারাগার থেকে বেরোতে পারছিলেন না আলভেজ। শুরুতে অবশ্য জামিনের অর্থ নেইমারের পরিশোধ করার কথা বলা হয়েছিল, যিনি এর আগে বিচারকাজ চলার সময় আলভেজকে অর্থসহায়তা করেছিলেন। তবে নেইমারের বাবা ধর্ষণ মামলায় আলভেজ দোষী প্রমাণিত হওয়ায় বিষয়টি থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন।
তিনি বলেছিলেন, ‘আমার জন্য, আমার পরিবারের জন্য বিষয়টি এখানেই শেষ।’
ফুটবল ক্যারিয়ারে বিপুল অর্থ আয় করলেও জামিনের অর্থ পরিশোধ করতে না পারা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে আলভেজের আইনজীবী জানান, স্পেনে তাঁর দুটি অ্যাকাউন্ট আছে। একটিতে কোনো অর্থ না থাকলেও অন্যটিতে ছিল ৫১ হাজার ইউরো। তবে এই অর্থ আদালতের নির্দেশে জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি এটি জামিনের নির্ধারিত অর্থের তুলনায় খুব সামান্যও।
অন্যদিকে ব্রাজিলেও সাবেক স্ত্রী দিনারো সান্তানা ও সন্তানদের প্রাপ্য না দেওয়ায় জব্দ করা হয় আলভেজের অ্যাকাউন্ট। এ ছাড়া ব্রাজিলে বেশ কিছু ধারদেনাও আছে তাঁর। যে কারণে জামিনের অর্থ জোগাড়ে হিমশিম খেতে হচ্ছিল আলভেজের পরিবারকে। শেষ পর্যন্ত আলভেজের মা ও ভাই ধারে জামিনের অর্থ জোগাড় করে তাঁকে কারাগার থেকে মুক্ত করেছেন।