হঠাৎই অবসরের ঘোষণা সাফজয়ী স্বপ্নার
গত সেপ্টেম্বরে সাফ শিরোপা বিজয়ী বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিলেন সিরাত জাহান স্বপ্না। চার গোল করেছিলেন। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন তিনি। সেই স্বপ্না আজ হঠাৎ করেই ফুটবলকে বিদায় বলে দিয়েছেন!
বয়স তাঁর মাত্র ২২। ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়ে স্বপ্না ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দেন, ‘আমি নিজ ইচ্ছায় পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর নিলাম। প্রায় আট বছর পেশাদার ফুটবল খেলার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। ফুটবল–ক্যারিয়ারে আসার পর আমি অনেক কিছু পেয়েছি। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই মহান আল্লাহ তাআলার প্রতি। খেলার সুবাদে অনেকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে। তাই জেনে বা না জেনে যদি কারও মনে কষ্ট দিয়ে থাকি, প্লিজ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’
সিরাত জাহান স্বপ্নার হঠাৎ অবসর ঘোষণায় অবাক সবাই। জানা গেছে, গতকাল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ক্যাম্প থেকে তিনি নিজ জেলা রংপুরে চলে যান। এরপর আজ ফেসবুকে এসেছে তাঁর অবসরের ঘোষণা।
স্বপ্নার অবসরে অবাক জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনও। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘খুব সম্ভবত কোনো হতাশা থেকেই সে অবসরের ঘোষণা দিয়েছে। আমরা তার সঙ্গে কথা বলে বুঝিয়েছি। কিন্তু লাভ হয়নি। সে বলে, “স্যার খেলে কী হবে! সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর কেটে গেছে আট মাস। কিন্তু কোনো খেলা নেই। ফ্রাঞ্চাইজি লিগ শুরু হওয়ার কথা, সেটারও কোনো খবর নেই।”’
বিয়ের চাপ বা কোনো পারিবারিক সমস্যার কারণে স্বপ্না এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না, সেটি জানতে চেয়েছিলেন গোলাম রব্বানী, ‘আমরা তাকে বারবার এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছি। সে বলেছে, বিয়ের কোনো চাপ নেই। এমনকি কোনো পারিবারিক কারণেও সে ফুটবলকে বিদায় বলেনি।’
নারী ফুটবলের বেশ কিছু সাফল্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্বপ্নার নাম। ২০১১ সালে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট দিয়ে তাঁর যাত্রা শুরু। খেলেছেন বঙ্গমাতা টুর্নামেন্টের দুটি আসর। এরপর বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৬ নারী দলে ডাক পান। ২০১৪ সালে ঢাকায় খেলেন আঞ্চলিক বাছাইপর্ব। ২০১৫ সালে নেপালে এএফসি অনূর্ধ্ব–১৪ ফুটবলের আঞ্চলিক পর্বে বাংলাদেশ শিরোপা জিতেছিল। স্বপ্না ছিলেন সে দলের সদস্য। অনূর্ধ্ব–১৬ এএফসি বাছাইয়েও খেলেছেন ২০১৬ সালে। সে বছরই শিলং–গুয়াহাটি এসএ গেমসে জাতীয় নারী দলের জার্সি পরেন। ২০১৭ সালে নারী সাফে ৫ গোল করেছিলেন। ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব–১৮ নারী সাফে ৮ গোল করেছিলেন তিনি।