ঘড়ির কাঁটা ঘুরছে, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সময় আগামীকাল সকাল সাড়ে ৬টার দিকে। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে লিওনেল মেসির বুকটাও কি ধুকধুক করছে! ঘড়ির কাঁটার আগামীকালের এ সময়টা যে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের জন্য খুবই আবেগের। কেন? এ সময়ে যে যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে মেসির ইন্টার মায়ামি প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হবে তাঁর শৈশবের ক্লাব নিউয়েলস বয়েজের।
৮৯৯—ক্লাব ফুটবলে ২০০৩ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত বার্সেলোনা ‘সি’, বার্সেলোনা ‘বি’, বার্সেলোনা মূল দল, পিএসজি ও ইন্টার মায়ামির হয়ে এতগুলো ম্যাচ খেলেছেন মেসি। কত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কত দলের মুখোমুখি যে হয়েছেন তিনি। কিন্তু আগামীকাল ভোরের ম্যাচটি মেসির জীবনে সবচেয়ে আলাদাই হওয়ার কথা। এই প্রথম তিনি নিজের শৈশবের দলের মুখোমুখি হচ্ছেন। যে ক্লাবে তিনি কাটিয়েছেন ৫টি বছর।
১৯৯৫ সালে ৮ বছর বয়সে রোজারিওর সান্তা ফের ক্লাব নিউয়েলস বয়েজে নাম লেখান মেসি। ফুটবলে নিজের হাঁটিহাঁটি পা পা সময়টা এখানেই কাটে তাঁর। বার্সেলোনার একাডেমিতে যোগ দেওয়ার আগে ২০০০ সাল পর্যন্ত ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাব নিউয়েলস বয়েজে ছিলেন মেসি।
তা আবেগের এই ম্যাচে মেসি খেলতে পারবেন কি না, এ নিয়ে তাঁর ভক্তদের মধ্যে কিছুটা সংশয়ই ছিল। অ্যাডাক্টর পেশির সমস্যার কারণে ইন্টার মায়ামির এশিয়া সফরে ঠিকভাবে খেলতে পারেননি তিনি। হংকংয়ে হংকং একাদশের বিপক্ষে খেলেনইনি। জাপানে ভিসেল কোবের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন অল্প সময়ের জন্য। কিন্তু সবার সংশয় দূর করে ইন্টার মায়ামির কোচ জেরার্দো মার্তিনো জানিয়েছেন, নিউয়েলস বয়েজের বিপক্ষে মেসি শুরুর একাদশেই খেলবেন।
ইন্টার মায়ামির আর্জেন্টাইন কোচ মার্তিনো আজকের সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘তার এখন যেমন অবস্থা, এ রকম থাকলে আগামীকাল সে আরও বেশি সময় খেলতে পারবে। আশা করছি নিউয়েলস গুরুত্বপূর্ণ সব খেলোয়াড়কে নিয়েই খেলতে নামবে।’
গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন খেলোয়াড়ের একজন এভার বানেগা। নিউয়েলস বয়েজের ১০ নম্বর জার্সিটা তিনিই পরবেন আগামীকাল। মেসির সঙ্গে অনেক স্মৃতিময় সময় কেটেছে আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার বানেগার। এর মধ্যে অন্যতম ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিক ফুটবলের সোনা জয়। আর্জেন্টিনা দলে মেসির যেমন সতীর্থ ছিলেন বানেগা, তেমনি লা লিগার দল সেভিয়ায় খেলার সময় মেসির প্রতিপক্ষও ছিলেন।
সেভিয়ার হয়ে খেলার সময় বার্সেলোনার বিপক্ষে ম্যাচে মাঝমাঠেই মেসিকে থামিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব অনেকবারই নিতে হয়েছে বানেগাকে। সেই সব স্মৃতি মনে করে বানেগা বলেছেন, ‘মেসির বিপক্ষে খেলাটা আনন্দের। সবাই জানে যে ছোট থেকেই সে নিউয়েলসের ভক্ত। সে আমাদের অসাধারণ এক দূত।’
আরেকবার মেসিকে মাঝমাঠে আটকানোর দায়িত্ব হয়তো নেবেন বানেগা। কিন্তু মেসিকে বাজেভাবে ট্যাকল করবেন বলে মনে হয় না। বানেগা বলেছেন, ‘সে যা করে, সবই আমরা উপভোগ করি। সবাই তাকে ভালোবাসে।’ বানেগা এরপর যোগ করেন, ‘আমি যদি মেসির কিছু করি, তারা আমাকে খুন করবে। আমি কোথাও যেতে পারব না।’
মেসির প্যারিস অলিম্পিক খেলার বিষয় নিয়েও কথা বলেছেন বানেগা। তিনি চান, মেসি আরেকটি অলিম্পিক সোনা জিতুন। কিন্তু তিনি অলিম্পিকে খেলবেন কি খেলবেন না, এটা মেসির ওপর ছেড়ে দেওয়ারই পক্ষে বানেগা, ‘তাকে উপভোগ করতে দিন। অলিম্পিক আসতে এখনো সময় আছে। আমি জানি না, সে কী করবে। সে সেরা সিদ্ধান্তটাই নেবে।’