৬৪ বছর পর বিশ্বকাপে ফেরাটা সুখকর হলো না ওয়েলসের। গ্যারেথ বেলদের বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হয়েছে কোনো জয় ছাড়াই। ৩ ম্যাচের ১টিতে ড্র করলেও অন্য দুটিতে দেখতে হয়েছে হার। সর্বশেষ আজ রাতে ইংল্যান্ডের কাছে ওয়েলস হেরেছে ৩–০ গোলে। ম্যাচের পুরোটা সময় দাপট দেখিয়েছে ইংলিশরা। প্রথমার্ধে না পারলেও দ্বিতীয়ার্ধে ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেছেন মার্কাস রাশফোর্ড ও ফিল ফোডেন। রাশফোর্ড আবার করেছেন জোড়া গোল। শেষ ষোলোয় ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ গ্রুপ ‘এ’তে রানার্সআপ হওয়া সেনেগাল।
আহমাদ বিন আলী স্টেডিয়ামে সুবিধাজনক অবস্থানে থেকেই ওয়েলসের মুখোমুখি হয়েছিল প্রতিবেশী ইংল্যান্ড। আর ওয়েলসের জন্য শুধু জেতাই যথেষ্ট ছিল না, নির্ভর করতে হচ্ছিল অন্য ম্যাচের ফলের ওপরও। ম্যাচের শুরুতেই মাঝমাঠের দখল নিয়ে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে ইংল্যান্ড।
দারুণভাবে প্রেসিং করে ওয়েলসকে পায়ে বল রাখতে দিচ্ছিলেন না ইংলিশ ফুটবলাররা। ম্যাচের ১০ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ এসেছিল ইংল্যান্ডের সামনে। হ্যারি কেইনের থ্রু বল ধরে ডি–বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন রাশফোর্ড। তবে সামনে এগিয়ে এসে দারুণভাবে রাশফোর্ডের শট রুখে দেন ওয়েলস গোলরক্ষক ড্যানি ওয়ার্ড।
ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিটে ইংল্যান্ড রক্ষণের ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারেনি ওয়েলস। উল্টো ইংলিশদের দারুণ গতিময় মিডফিল্ডের সামনে বারবার খেই হারাচ্ছিল তারা। ওয়েলস ডি–বক্সের আশপাশে ইংলিশ ফরোয়ার্ডরা হানা দিচ্ছিলেন ঠিকই, তবে ওয়েলসের ডিফেন্স ভাঙার কোনো সূত্রই যেন ইংলিশদের ফরোয়ার্ড লাইনের জানা ছিল না।
শুরুর চাপ সামলে ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছিল ওয়েলস। কয়েকবার চেষ্টাও করে আক্রমণে যাওয়ার। যদিও সেই চেষ্টাগুলো ইংল্যান্ডকে পরীক্ষায় ফেলার জন্য যথেষ্ট ছিল না। অন্যদিকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেও খুব বেশি নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না ইংল্যান্ড।
অ্যাটাকিং থার্ডে ক্রস কিংবা পাসগুলোও ঠিকঠাকভাবে দিতে ব্যর্থ হচ্ছিল তারা। এর মাঝে মাথায় আঘাত পাওয়া ওয়েলস ডিফেন্ডার নিকো উইলিয়ামস খেলা চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হলে তাঁকে তুলে নিয়ে কনর রবার্টসকে নামানো হয়।
৩৮ মিনিটে দারুণ ফ্লিক পাসে দারুণভাবে ওয়েলস ডিফেন্সের ভেতর ঢুকে শট নেন ফিল ফোডেন। তবে ম্যানচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ডের শট পোস্টের ওপর দিয়ে যায়। একটু পর রাশফোর্ডের বাইসাইকেল কিক পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। প্রথমার্ধের বেশির ভাগ সময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রাখলেও ইংল্যান্ডেকে খুব বেশি সুবিধা করতে দেয়নি ওয়েলস ডিফেন্স।
বিরতির পর শুরুতেই নিষ্প্রভ গ্যারেথ বেলকে উঠিয়ে নেয় ওয়েলস। আর খেলা শুরু হতে আড়মোড়া ভেঙে জাগে ইংল্যান্ড। বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি–কিক পায় তারা। সেই ফ্রি–কিকেই ডেডলক ভাঙেন রাশফোর্ড। দুর্দান্ত এক শটে লক্ষ্য ভেদ করেন এই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা।
এই গোলের রেশ কাটার আগে আবার গ্যালারিতে ইংলিশ–গর্জন। ওয়েলস ডিফেন্সের ভুলে বল পান হ্যারি কেইন। তাঁর পাস থেকে দারুণ ফিনিশিংয়ে ইংলিশদের লিড বাড়ান ফোডেন। জোড়া গোল হজম করে জাগার চেষ্টা করে ওয়েলস। কয়েকবার আক্রমণে গিয়ে পরীক্ষাতেও ফেলেন জর্দান পিকফোর্ডকে। তবে কাঙ্ক্ষিত গোলটি পাওয়া হয়নি। উল্টো ৬৮ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোলটি করেন রাশফোর্ড। এরপর ব্যবধান বাড়ানোর আরও সুযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ড। তবে আর কোনো গোল আসেনি।