আজ শুরু আফ্রিকার ফুটবল যুদ্ধ, জানার আছে যা
আজ থেকে শুরু হবে আফ্রিকা কাপ অব নেশনসের ৩৪তম আসর। শিরোপা লড়াইয়ে ২৪ দল আগামী এক মাস ধরে মুখোমুখি হবে এ ফুটবল যুদ্ধে। যেখানে মোহাম্মদ সালাহ, সাদিও মানে ও ভিক্তর ওসিমেনের মতো তারকারা প্রতিনিধিত্ব করবেন নিজ নিজ দেশের। আজ প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক আইভরিকোস্ট ও গিনি বিসাউ। আফ্রিকা কাপ অব নেশনস নিয়ে আরও জানার আছে—
২০২৩–এর আয়োজন ২০২৪ সালে
২৪ দল নিয়ে এবারের আসরটি মাঠে গড়ানোর কথা ছিল আরও ৬ মাস আগে, ২০২৩ সালের জুন-জুলাইয়ে। তবে আইভরি কোস্টের প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সেটি পিছিয়ে যায়। টুর্নামেন্টের নামে অবশ্য ‘২০২৩’–ই থাকছে।
আয়োজক আইভরিকোস্ট
দ্বিতীয়বারের মতো আফ্রিকান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের আয়োজন করছে আইভরিকোস্ট। এর আগে ১৯৮৪ সালে প্রথমবার এই প্রতিযোগিতার আয়োজক দেশ হয়েছিল তারা। আয়োজক হিসেবে প্রথমবার ভালো করতে পারেনি আইভরিকোস্ট। টোগোর বিপক্ষে জিতলেও, মিসর ও ক্যামেরুনের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল তারা। সেবার ৮টি দেশ ১৫ দিন ধরে মেতেছিল শিরোপা লড়াইয়ে। শেষ পর্যন্ত শিরোপা জিতেছিল ক্যামেরুন, রানার্সআপ হয়েছিল নাইজেরিয়া। আর তৃতীয় সেরা দল ছিল আলজেরিয়া।
যেভাবে অংশ নিচ্ছে যারা
এবার ২৪ দল ছয় গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। ৩০ দিন ধরে ৫২ ম্যাচের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হবে শিরোপাভাগ্য। প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল ও তৃতীয় হওয়া চারটি দল উঠবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। এরপর কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল।
গ্রুপ ‘এ’: আইভরিকোস্ট, নাইজেরিয়া, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, গিনি বিসাউ
গ্রুপ ‘বি’: মিসর, ঘানা, কেপ ভার্দে, মোজাম্বিক
গ্রুপ ‘সি’: সেনেগাল, ক্যামেরুন, গিনি, গাম্বিয়া
গ্রুপ ‘ডি’: আলজেরিয়া, বুরকিনা ফাসো, মৌরিতানিয়া, অ্যাঙ্গোলা
গ্রুপ ‘ই’: তিউনিসিয়া, মালি, দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া
গ্রুপ ‘এফ’: মরক্কো, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, জাম্বিয়া, তানজানিয়া
যেসব ভেন্যুতে ম্যাচ
আইভরিকোস্টের ৫টি শহরের ৬টি ভেন্যুতে আয়োজিত হবে এবারের প্রতিযোগিতা। বাণিজ্যিক শহর আবিদজানের দুটি ভেন্যুতে খেলা হবে ২০ ম্যাচ। বুয়াকেতে হবে ৯ ম্যাচ, সান পেদ্রো ও ইয়ামোসুকরোতে হবে ৮ ম্যাচ করে এবং কোরহোগোতে হবে ৭ ম্যাচ। আইভরিকোস্ট–গিনি বিসাউয়ের উদ্বোধনী ম্যাচ এবং ১১ ফেব্রুয়ারির ফাইনাল আবিজানের ৬০ হাজার আসনবিশিষ্ট আলহাসানে আউত্তারা স্টেডিয়ামে। সান পেদ্রো, কোরহোগো ও ইয়ামোসুকরোর ২০ হাজার আসনবিশিষ্ট মাঠগুলো অবশ্য নতুন করে বানানো হয়েছে এ প্রতিযোগিতার জন্য। আর আবিদজানের অন্য মাঠ ফেলিক্স–বোইগনি স্টেডিয়ামের দর্শক আসন সংখ্যা ৪০ হাজার। এ ছাড়া বুয়াকের অন্য স্টেডিয়ামটির আসন সংখ্যা ৪০ হাজার।
কে কতবার চ্যাম্পিয়ন
১৯৫৭ সালে প্রথমবারের মতো বসেছিল আফ্রিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। এখন পর্যন্ত ৩৩ বার মাঠে গড়িয়েছে এ আয়োজন। যেখানে সর্বোচ্চ সাতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মিসর। ৫ বার জিতেছে ক্যামেরুন, ৪ বার ঘানা আর ৩ বার নাইজেরিয়া। ২ বার করে জিতেছে আইভরিকোস্ট, আলজেরিয়া ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্র। একবার করে জিতেছে জাম্বিয়া, তিউনিসিয়া, সুদান, সেনেগাল, ইথিওপিয়া, মরক্কো, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কঙ্গো।
ফেবারিট
গতবারের দুই ফাইনালিস্ট সাদিও মানের সেনেগাল এবং মোহাম্মদ সালাহর মিসরকেই ভাবা হচ্ছে অন্যতম ফেবারিট। এরপর আগ্রহ আছে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা মরক্কোকে নিয়েও। তবে এই প্রতিযোগিতায় নাইজেরিয়া ও আলজেরিয়ার মতো দলও দারুণ কিছু করে দেখাতে পারে।
তারকা খেলোয়াড়
এবারের আসরে অন্যতম দুই সেরা তারকা মোহাম্মদ সালাহ ও সাদিও মানে। আছে আফ্রিকার বর্ষসেরা খেলোয়াড় ভিক্তর ওসিমেনও। অন্যদের মধ্যে আলজেরিয়ার রিয়াদ মাহরেজ, মরক্কোর ইউসেফ এন নেসিরি, গিনির সেরহাউ গুইরাসি এবং সেনেগালের এদোয়ার্দো মেন্দি উল্লেখযোগ্য।
তারকা কোচ
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সেনেগাল আলিউ সিসের হাত ধরেই প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছিল। এবারও চোখ থাকবে তাঁর ওপর। আছেন মরক্কোকে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে নিয়ে যাওয়া ওয়ালিদ রেগেরুই। কৌশল এবং খেলোয়াড়দের সেরাটা বের করে কীভাবে দলকে সাফল্য এনে দিতে হয়, তা ভালোই জানা আছে তাঁর। এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে মিসরের রুই ভিতোরিয়া, আইভরিকোস্টের ইয়ান লুইস গ্যাসেট, নাইজেরিয়ার জোসে পেসেইরোও কৌশলে বাজিমাত করার ক্ষমতা রাখেন।
প্রাইজমানি
রেকর্ড ৭০ লাখ ডলার পাবে বিজয়ী দল, যা কিনা আগের আসরের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি। আর রানার্সআপ দল পাবে ৪০ লাখ ডলার।