আক্রমণভাগে সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় নিয়েও গোল করায় ব্রাজিল এত পিছিয়ে!
কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে ৩ ম্যাচে ৩ গোল করেছে ব্রাজিল। আরেকটু খোলাসা করে বলা যাক। সার্বিয়ার বিপক্ষে ২ গোল এবং সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১ গোল করেছে ব্রাজিল। কাল রাতে ক্যামেরুনের বিপক্ষে গোল করতে পারেনি। অর্থাৎ গ্রুপ পর্বে মাত্র ৩ গোল করেছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
আর এই ৩ গোলের ২টি করেন ব্রাজিলের ৯ নম্বর জার্সি পরা স্ট্রাইকার রিচার্লিসন। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে গোলটি ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার কাসেমিরোর। এই পারফরম্যান্সে সমালোচনা এড়াতে পারছে না ব্রাজিল। ১৯৭৮ বিশ্বকাপের পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে এবারই সবচেয়ে বাজে পারফর্ম করেছে ব্রাজিলিয়ান আক্রমণভাগ।
আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত ১৯৭৮ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ২ গোল করেছিল ব্রাজিল। সুইডেনের সঙ্গে ১–১ গোলে ড্রয়ের পর স্পেনের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে ও শেষ ম্যাচে অস্ট্রিয়াকে ১–০ গোলে হারিয়ে পরের ধাপে উন্নীত হয় ব্রাজিল। গ্রুপ পর্বে ব্রাজিলের হয়ে গোল করেন রেইনালদো ও রবার্তো দিনামাইত।
বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে নিজেদের পারফরম্যান্সের ইতিহাসে গোলের হিসেবে এবার যুগ্মভাবে দ্বিতীয় সবচেয়ে বাজে পারফর্ম করল ব্রাজিল। ১৯৭৪ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বেও ৩ গোল করেছিল লাতিন দলটি। সাবেক যুগোস্লোভিয়া ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রয়ের পর জায়ারকে ৩–০ গোলে হারিয়েছিল ব্রাজিল। গোল করেছিলেন জর্জিনিও, রিভেলিনো ও ভালদোমিরো।
গোলের হিসেবে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ব্রাজিল সবচেয়ে ভালো করেছে ২০০২ বিশ্বকাপে। সেবার গ্রুপ পর্বে ৩ ম্যাচে ১১ গোল করেছিল ব্রাজিল। তুরস্ককে ২–১ গোলে হারানোর পর চীনের জালে ৪ গোল ও কোস্টারিকার জালে ৫ গোল করেছিল লাতিন আমেরিকার দলটি। রোনালদো ৪টি, রিভালদো ৩টি ও রবার্তো কার্লোস, রোনালদিনিও, এডমিলসন ও জুনিয়র ১টি করে গোল করেছিলেন।
কাতার বিশ্বকাপে যে ১৬টি দল শেষ ষোলোয় উঠেছে, সেসব দলের মধ্যে গ্রুপ পর্বে ব্রাজিল গোল করায় শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও পোল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে। ২টি করে গোল করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও পোল্যান্ড। গোলে অস্ট্রেলিয়াও ব্রাজিলের সমান অবস্থানে। ৩ গোল করেছে ‘সকারুজ’রা।
গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে বেশি গোল স্পেন ও ইংল্যান্ডের। ৯টি করে গোল করেছে দুটি দল। ৬টি করে গোল করেছে পর্তুগাল ও ফ্রান্স। ৫টি করে গোল আর্জেন্টিনা, নেদারল্যান্ডস ও সেনেগালের। দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ক্রোয়েশিয়া, মরক্কো ও সুইজারল্যান্ড ৪টি করে গোল করেছে।
বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ইতিহাসে ব্রাজিল এবারই প্রথমবারের মতো ম্যাচের প্রথমার্ধে গোল পায়নি। সার্বিয়া ও সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধে গোল এনে দিয়েছেন রিচার্লিসন ও কাসেমিরো। অথচ এই বিশ্বকাপে ব্রাজিলের আক্রমণভাগেই সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড়—৯ জন ফরোয়ার্ড। বিশ্বকাপে এর আগে শুধু একটি আসরেই দলের আক্রমণভাগে এবারের চেয়ে বেশি খেলোয়াড় নিয়ে স্কোয়াড সাজিয়েছিল ব্রাজিল, ১৯৫০ বিশ্বকাপে।