হলান্ড–ডি ব্রুইনার আড়ালে থেকেও ‘ছক্কা’ মারলেন সিলভা
পরীক্ষার আগের রাতে যে প্রস্তুতি নিয়েছেন, পরীক্ষা দিতে গিয়ে তার বাইরে থেকে করা প্রশ্ন পেলে পরীক্ষার্থীর যেমন অবস্থা হয়, কাল ইতিহাদে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদের অবস্থা হয়েছিল তেমনই।
ম্যানচেস্টার সিটির আক্রমণভাগে আর্লিং হলান্ডকে নিয়েই কথা হয়েছে বেশি। তাঁকে ঠেকাতে রিয়াল মাদ্রিদের কত কৌশল, কত পরিকল্পনা। কিন্তু মাঝখান দিয়ে রিয়ালের জালে ‘ছক্কা’ মেরে বেরিয়ে গেলেন বেনার্দো সিলভা। ছোটখাটো গড়নের এই পর্তুগিজ তারকাই চ্যাম্পিয়নস লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের সব আশা–ভরসায় জল ঢেলেছেন ম্যাচের ৩৭ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে। এ তো ছক্কা মারাই!
দেখতে আপাত নিরীহ খেলোয়াড়টিই রিয়ালের মতো মহাপরাক্রমশালী দলকে কী নাকানি-চুবানিটাই না খাওয়ালেন! ২৩ মিনিটে সম্মিলিত এক আক্রমণ থেকে রিয়ালের বক্সে বল পেয়ে বাঁ পায়ে নেওয়া গুলির মতো এক শটে রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে কোনো সুযোগই দেননি। ১৪ মিনিট পর আবারও সুযোগের সদ্ব্যবহার। সেটিও এক সম্মিলিত আক্রমণ থেকে। এবার সুযোগসন্ধানী আঘাত। সিটির পোস্টে হেড করে। দুই গোলের পরই সিলভার উদ্যাপনটা হলো বাঁধভাঙা।
সিলভার কাছে রাতটা চমৎকার। জোড়া গোলে দলকে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে তুলতে রেখেছেন বড় অবদান। ম্যাচ শেষে সিলভা জানিয়েছেন, এই জয়ে প্রথম লেগের ঝাল মিটিয়েছেন। বার্নাব্যুতে ১-১ গোলে ড্র হওয়া ম্যাচে নিজের পারফরম্যান্সে একেবারেই খুশি ছিলেন না সিলভা। প্রতিজ্ঞা করে রেখেছিলেন ফিরতি লেগে পুষিয়ে দেবেন। কাল ফিরতি লেগে রিয়ালের বিপক্ষে সিটির ৪-০ গোলের জয়ে সিলভার জোড়া গোল পুষিয়ে দেওয়ার কথাই বলে। ম্যাচ শেষে সিলভা বলেন, ‘প্রথম লেগে আমার পারফরম্যান্স মোটেও ভালো ছিল না। আমার মন খুব খারাপ ছিল। আমি দ্বিতীয় লেগে সেই খামতি পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমাকে আমার দলের জন্য, নিজের জন্য ও ভক্তদের জন্য ভালো করতেই হতো।’
রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ফিরতি দ্বিতীয় লেগটা এত ‘সহজ’ হবে, সেটি বোধহয় সিটির কেউই ভাবেননি। একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েরই প্রত্যাশা ছিল। সিলভাও তেমনটিই ভেবেছিলেন। কিন্তু সেই ‘কঠিন’ রিয়ালকেই চার গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর অনুভূতিটা অসাধারণই সিলভার কাছে, ‘আমরা জানতাম খেলাটা খুব কঠিন হবে। কিন্তু আজকের রাতটা আমাদের জন্য চমৎকার এক রাত। রিয়ালকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার অনুভূতিটা অসাধারণ।’
দুই বছর আগে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে চেলসির কাছে হেরেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। এবার সিলভা শিরোপা ছাড়া আর কিছু ভাবতেই পারছেন না, ‘আমরা আবারও ফাইনালে উঠেছি। আশা করছি, এবার আমরা জিতব। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে খেলার অনুভূতিটা দারুণ।’ নিজের হেডে করা দ্বিতীয় গোলটি নিয়ে কিছুটা রসিকতাই করেছেন সিলভা, ‘দেখুন আমি দেখতে ছোটখাটো হলে কী হবে, আমি কিন্তু ভালো হেড করতে পারি।’
আগামী ১০ জুন ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটি ও ইন্টার মিলান মুখোমুখি হবে। ম্যাচটি নিয়ে সিলভা কিছুটা সাবধানই থাকতে চান, ‘ইন্টার মিলান খুবই ভালো দল। তাদের রক্ষণ অনেক শক্তিশালী, বেশ গোছানোও। প্রতি আক্রমণে খেলতে অভ্যস্ত তারা। ফাইনালে লড়াই হবে ভালোই। আমরাও লড়াই করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।’