বার্সা কি আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে পারবে
বার্সেলোনা যে কঠিন সময় পার করছে সে কথা সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন ক্লাব সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা। সে সংবাদ সম্মেলনে রিয়াল মাদ্রিদ এবং লা লিগাকে এক হাতও নিয়েছেন বার্সা সভাপতি। তবে উয়েফা ও উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিনের ব্যাপারে সুরটা নরমই রেখেছিলেন লাপোর্তা। পাশাপাশি তিনি ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তৃক নিষেধাজ্ঞার মুখে না পড়ার প্রত্যাশার কথাও জানান।
লাপোর্তা বলেছিলেন, ‘এমন অনেক কিছু বিষয় আছে, যা আমরা চোখে দেখি না। কিন্তু জনাব সেফেরিন বিচক্ষণভাবে এবং দায়িত্বশীলভাবে কাজ করছেন। ব্যাপার হচ্ছে, তিনি তেবাসের মতো একই ভুল করছেন না। উয়েফার তদন্ত (রেফারিকে অর্থ প্রদান করা বিষয়ে) চলমান। আমি আশা করব, স্প্যানিশ আদালতে বিচারিক কাজ শেষ হওয়ার আগে কর্তৃপক্ষ কোনো রায় প্রদান করবে না। আমি নিশ্চিত যে আমরা কোনো অন্যায়ের জন্য দোষী সাব্যস্ত হব না। আমরা স্বাভাবিকভাবেই খেলা চালিয়ে যেতে পারব।’ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এত প্রচেষ্টার পরও বার্সা কি উয়েফার নিষেধাজ্ঞার হাত থেকে বাঁচতে পারবে?
লাপোর্তার ওপরের কথাগুলো যে মূলত উয়েফাকে আগাম কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো থেকে নিরুৎসাহিত করার জন্য বলা হয়েছে, সেটিই একরকম স্পষ্ট। আর স্পেনের আদালতে কোনো ফৌজদারি মামলার বিচারে ৫ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। আর সে সুযোগটা সম্ভবত এখন নিতে চাচ্ছেন লাপোর্তা।
তবে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এএস বলছে, উয়েফা চাইলে তারপরও সামনের মাসগুলোয় বার্সাকে রেফারিকে টাকা দেওয়ার অপরাধে শাস্তি দিতে পারে। গত মার্চে তারা নেগ্রেরিয়া-কাণ্ডের তদন্তে নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা পরিদর্শকও নিয়োগ করেছিল।
আর উয়েফার নিয়ম ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক’ পর্যায়ে ম্যাচের ফলাফলকে প্রভাবিত করার অপরাধে কোনো ক্লাবকে এক মৌসুমের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সুযোগ আছে। যা আগামী মৌসুমে বার্সার চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলাকে হুমকির মুখেই রাখছে।
বার্সার জন্য পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে খেলাধুলার জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সালিসি আদালত। যদিও নিষেধাজ্ঞায় পড়লে এখানে আপিল করতে পারবে। তবে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি সাধারণত শাস্তি বহাল রাখে।
লাপোর্তার মন্তব্য নিয়ে উয়েফা অবশ্য এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে এর আগে এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সেফেরিন বলেন, ‘পরিস্থিতি খুবই মারাত্মক। আমার মতে এটা এতটাই মারাত্মক যে আমি ফুটবলে এমনটা আর দেখিনি।’
সেফেরিনের এই বক্তব্যই বলে দিচ্ছে বার্সার জন্য পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের। এখন শেষ পর্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিকে বার্সা বদলাতে পারে কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা। নয়তো আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সাকে দর্শকের ভূমিকাতেও থাকতে হতে পারে।