‘আপনারা কি আনন্দ পাননি’, থ্রিলার লিখে ইউনাইটেডকে বিদায় করে বললেন টটেনহাম কোচ
‘আপনারা কি আনন্দ পাননি’—ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে কারাবাও কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল শেষে প্রশ্নটা ছুড়ে দিয়েছেন টটেনহাম কোচ অ্যাঞ্জ পোস্তেকোগলু। ম্যাচটা যাঁরা দেখেছেন, পোস্তেকোগলুর প্রশ্নের উত্তরে তাঁদের সবারই হাত তোলার কথা।
এমন ম্যাচ তো আর সব সময় দেখা যায় না, যখন জয়-পরাজয় ছাপিয়ে খেলা দেখার আনন্দই বড় হয়ে ওঠে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও তাদের সমর্থকদের হয়তো সেই আনন্দ উপভোগ করার কথা নয়, তবে এর বাইরে সবারই এই ম্যাচ দেখে মন ভরে যাওয়ার কথা। স্পার্স সমর্থকদের তো কথাই নেই।
ইউনাইটেডের বিপক্ষে এই ম্যাচের আগেই প্রিমিয়ার লিগে কোচিং করানোকে প্রধানমন্ত্রীর চাকরির চেয়েও কঠিন বলে মন্তব্য করেছিলেন পোস্তেকোগলু। সেই উত্তাপটা যেন কাল রাতে ডাগআউটে আবারও টের পেলেন গ্রিসে জন্ম নেওয়া এই অস্ট্রেলিয়ান কোচ। তবে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে শেষ হাসিটা তিনিই হেসেছেন। কারাবাও কাপের সেমিতে ওঠার লড়াইয়ে টটেনহাম ইউনাইটেডকে হারিয়েছে ৪-৩ গোলে।
টটেনহামের মাঠে ৬২ মিনিট পর্যন্ত স্পার্সদের যে জয়টা খুব সহজেই আসবে বলে মনে হচ্ছিল। স্বাগতিকেরা এগিয়ে গেছে ৩-০ গোলে। জোড়া গোল করেছেন ডমিনিক সোলাঙ্কি, অন্য গোলটি দেজান কুলুসোভস্কি। নাটকের শুরু এরপরই। ৬৩ থেকে ৭০—এই সাত মিনিটের মধ্যে ২ গোল শোধ করে ম্যাচের রং পাল্টে দেশ ইউনাইটেড। গোল দুটি করেন জশুয়া জিরেকজে ও আমাদ দিয়ালো।
একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল, ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে আগের ম্যাচের স্মৃতিই হয়তো ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছে ইউনাইটেড। পিছিয়ে পড়েও জিততে যাচ্ছে। ৮৮ মিনিটে সন হিউং-মিন গোল করে ব্যবধান ৪-২ করে দেওয়ার পর সেই সম্ভাবনা একটু মিইয়ে যায়। এরপরও হাল ছাড়েনি ইউনাইটেড। যোগ করা সময়ের ৪ মিনিটে গোল করে জনি ইভান্স নাটকীয় কিছুর সম্ভাবনায় জিয়নকাঠি ছোঁয়ান। শেষ পর্যন্ত অবশ্য হয়নি। কারাবাও কাপের শেষ আট থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে ‘রেড ডেভিল’দের।
এ তো শুধু গোলের হিসাব। এই ম্যাচ তো সেসব ছাড়িয়ে ফুটবলের এক আনন্দ প্রদর্শনী। ম্যাচ শেষে দলের কোচ পোস্তেকোগলু তাই বলতে পারেন, ‘আমি ফুটবল ভালোবাসি এবং যারা আনন্দ দেওয়ার জন্য মাঠে খেলতে নামে, তাদের খেলা দেখতে পছন্দ করি। আমরাও সাফল্য চাই, তবে সেটা সম্ভব হবে না যদি আমরা সবকিছু এমন জটিল করে ফেলি। কিন্তু এমনও না যে আমরা মাঠে নেমে ১-০ গোলের জয়ের জন্য খেলব।’
ইউনাইটেড কোচ রুবেন আমোরিম এই পরাজয়কে ব্যাখ্যা করছেন ৮ মিনিটের ব্যর্থতায়, ‘ম্যাচজুড়ে আমরা সেরা দল ছিলাম না। কিন্তু কিছু কিছু অংশে আমরাই সেরা ছিলাম। আমার ধারণা ম্যাচের ৮ মিনিট (৪৬ থেকে ৫৪ মিনিট) আমরা ম্যাচে ছিলাম না, যা পুষিয়ে ওঠা সত্যিই কঠিন ছিল। তবে ছেলেরা অনেক চেষ্টা করেছে।’
তা তো করেছেই। করেছে বলেই না এমন আনন্দময় এক ফুটবলের সাক্ষী হয়ে থাকলেন দর্শকেরা, যাতে টটেনহামের কৃতিত্ব বেশি হতে পারে, তবে শুধু টটেনহাম কি আর তা পারত!