কোপা–ইউরোয় মেসি আর রোনালদোর যে বিরল অভিজ্ঞতা

রোনালদো ও মেসিগ্রাফিকস: প্রথম আলো

লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ক্যারিয়ারের গতিপথ অনেকটা একই সমান্তরালে এগিয়েছে। সাফল্য, অর্জন কিংবা ব্যর্থতায় কিছু পার্থক্য থাকলেও অনেক জায়গায় আবার মিলে যায়। গোধূলি বেলায় এসে একটি জায়গায় আবার মিললেন এ দুজন।

এই মুহূর্তে একই সময়ে চলমান দুটি মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্টে খেলছেন মেসি ও রোনালদো। ৩৭ বছর বয়সী মেসি কোপা আমেরিকায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন আর্জেন্টিনাকে। আর ৩৯ বছর বয়সী রোনালদো ইউরোতে পরেছেন পর্তুগালের আর্মব্যান্ড। কোপা আমেরিকায় টানা তিন জয়ে গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে মেসির আর্জেন্টিনা।

আরও পড়ুন

অন্যদিকে তিন ম্যাচের দুটি জিতে ইউরোর শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে রোনালদোর পর্তুগাল। তবে গ্রুপ পর্বের বাধা পেরোনোর পথে কোপায় তিন ম্যাচের দুটিতে মাঠে নেমে কোনো গোল পাননি মেসি। আর রোনালদোও ইউরোর গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচ খেলে পাননি গোলের দেখা।

রোনালদোর ক্যারিয়ারে এমন কিছু এবারই প্রথম দেখা গেল। এর আগে ইউরোতে গ্রুপ পর্ব থেকে কখনোই খালি হাতে ফেরেননি রোনালদো। মেসি অবশ্য নিজের প্রথম দুই কোপা আমেরিকায় গ্রুপ পর্বে কোনো গোলের দেখা পাননি। তবে ২০০৭ ও ২০১১ সাল বাদ দিলে পরের চার আসরের গ্রুপ পর্বে গোল পেয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা।

চোটের কারণে আজ বেঞ্চে বসে দলের খেলা উপভোগ করেছেন মেসি
রয়টার্স

ইউরোয় রোনালদোর অভিষেক হয় ২০০৪ সালে। সেবার গ্রুপ পর্বে এক গোল করেছিলেন তিনি। এরপর ২০০৮ সালেও গ্রুপ পর্বে এক গোল করেন ‘সিআর সেভেন’। ২০১২ সালে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জোড়া গোল করেন রোনালদো। এরপর ২০১৬ সালে যেবার পর্তুগাল শিরোপা জিতেছিল, সেবারও গ্রুপ পর্বে দুই গোল করেন তিনি। তবে গ্রুপ পর্বের পারফরম্যান্সের হিসাবে রোনালদোর সেরা আসর ছিল ইউরো ২০২০। সেবার গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে রোনালদো একাই করেছিলেন ৫ গোল।

আরও পড়ুন

এবারের আসরে প্রথম ম্যাচে চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে পর্তুগাল ২–১ গোলে জিতলেও গোল পাননি রোনালদো। পরের ম্যাচে অবশ্য গোল করার সুযোগ ছিল রোনালদোর সামনে। কিন্তু তিনি নিজে গোলের চেষ্টা না করে সেটি বাড়িয়ে দেন ব্রুনো ফার্নান্দেজের উদ্দেশে। আর শেষ ম্যাচে জর্জিয়ার বিপক্ষে একাধিকবার গোলবঞ্চিত হন রোনালদো। আর ম্যাচটিও পর্তুগাল হেরে যায় ২–০ গোলে।

ইউরোতে এখনো গোল পাননি রোনালদো
এএফপি

অন্যদিকে ২০০৭ ও ২০১১ সালের কোপায় গ্রুপ পর্বে গোল করতে না পারা মেসি পরের সব কটি আসরে গোলের দেখা পেয়েছেন। ২০১৫ সালের কোপা আমেরিকায় গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচেই গোল করেছিলেন মেসি। এরপর ২০১৬ সালের কোপায় গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে পানামার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন আর্জেন্টাইন তারকা। এরপর ২০১৯ সালেও গ্রুপ পর্বে এক গোল করেন মেসি। আর সর্বশেষ ২০২১ সালের কোপায় গ্রুপ পর্বে মেসি করেছিলেন ৩ গোল।

এবারের আসরে প্রথম ম্যাচে একটি গোলে সহায়তা করলেও পাননি কোনো গোলের দেখা। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে গোল বা গোলে সহায়তা কোনোটিই করতে পারেননি তিনি। আর আজ পেরুর বিপক্ষে শেষ ম্যাচে চোটের কারণে বেঞ্চেই ছিলেন তিনি। ফলে ক্যারিয়ারের সম্ভাব্য শেষ কোপা ও ইউরোতে গ্রুপ পর্বটা গোলহীনই থেকে গেল এ দুজনের। তবে শেষ পর্যন্ত ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারলে গোল না পাওয়ার বেদনা নিশ্চয়ই ভুলে যাবেন তাঁরা।