মেসিকে ‘শাস্তি দিয়ে পিএসজি ঠিক কাজটাই করেছে’
লিওনেল মেসিকে দলে টেনে ভুল করেছে পিএসজি—গত ফেব্রুয়ারিতে এমন মন্তব্য করে ঝড় তুলেছিলেন জেরোম রোথেন। পরের মাসে বলেছিলেন, পিএসজির গুরুত্বপূর্ণ সব ম্যাচে গায়েব হয়ে যান মেসি। আর্জেন্টাইন তারকাকে নিয়ে পিএসজির সাবেক এ উইঙ্গারের মুখ বন্ধ হয়নি।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম আরএমসিতে আবারও মেসিকে নিয়ে কথা বলেছেন রোথেন। এবারও আর্জেন্টাইন তারকার প্রতি সমালোচনামূলক সুরে রোথেন বলেছেন, মেসিকে নিষিদ্ধ করে পিএসজি ঠিক কাজটাই করেছে। কারণ, পেশাগত দৃষ্টিকোণ থেকে পিএসজির সঙ্গে মেসির আচরণ নাকি ঠিক ছিল না—এমনটাই মনে করেন রোথেন।
সবার আগে রোথেনের পরিচয়টা দেওয়া যাক। মোনাকোর হয়ে ২০০৩-০৪ চ্যাম্পিয়নস লিগে রানার্সআপ হওয়া রোথেন ফ্রান্সের হয়ে খেলেছেন ১৩ ম্যাচ। পিএসজিতে ২০০৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত খেলে পাঁচ মৌসুমে ফ্রেঞ্চ কাপ ও ফ্রেঞ্চ সুপার কাপ জিতেছেন ৪৪ বছর বয়সী রোথেন। আরএমসিতে বিশ্লেষক হিসেবে বরাবরই মেসির সমালোচনায় মুখর থাকেন। এর আগেও মেসিকে এনে পিএসজি ভুল করেছে বলে মন্তব্য করেছিলেন রোথেন। পিএসজিতে মেসির সঙ্গে সম্প্রতি যে ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ফরাসি ক্লাবটির পক্ষেই অবস্থান রোথেনের।
পিএসজির অভিযোগ, ক্লাবের অনুমতি না নিয়ে মেসি সৌদি আরব গিয়েছেন। এ জন্য তাঁকে দুই সপ্তাহের জন্য নিষিদ্ধও করে পিএসজি। সৌদি আরবের পর্যটনদূত মেসি কাল এ নিয়ে ভিডিওবার্তায় ক্লাবের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, ‘যা ঘটছে, তা শেষ হওয়ার পর আমি এই ভিডিও তৈরি করতে চেয়েছি। প্রথমত, আমি আমার ক্লাব ও সতীর্থদের কাছে ক্ষমা চাইছি। ভেবেছিলাম, ম্যাচের পরে সব সময়ের মতো দলে ছুটি থাকবে। এ সফর আগে থেকেই ঠিক করা ছিল, এটা আমি বাতিল করতে পারিনি। আগেও আমি এ সফর বাতিল করেছি।’
রোথেন মনে করেন, মেসির ক্ষমা চাওয়াতেই সব মিটে যায়নি, ‘সে ভুল করে তা স্বীকারও করেছে। অর্থাৎ পিএসজি তাকে শাস্তি দিয়ে ঠিক কাজটাই করেছে। কারণ, এটা পেশাগত অসদাচরণ।’ রোথেন এরপর যোগ করেন, ‘আমি (পিএসজির) কোচ নই, তবে আমার কাছে বিষয়টি সরল। জবাবটা মেসিই দিক; সে এখানে (পিএসজি) দুই বছর ধরে আছে, মাঠে তার খেলা কি ক্লাবের জন্য যথেষ্ট প্রমাণিত হচ্ছে? উত্তর হলো “না”। পিএসজি তার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়াবে না এবং সে চলে যাবে—এটা জেনেই বলছি, আমার মনে হয় ফ্রান্সে চ্যাম্পিয়ন হতে পিএসজির মেসিকে প্রয়োজন নেই।’
মেসির প্রতি রোথেন এরপর বেশ আক্রমণাত্মক সুরেই কথা বলেছেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক হলেও ক্ষমা চাওয়ায় তো পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে না। মাঠে নিজের পারফরম্যান্স ও আচরণের জন্য সে কি একাধিকবার ক্ষমা চেয়েছে? তার ওপর যে টাকা ঢালা হয়েছে, সে জন্য কি ক্ষমা চেয়েছে? কিংবা ফরাসি ভাষায় কথা না বলার জন্য, ফরাসি কোনো সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার না দেওয়ার জন্য কি সে ক্ষমা চেয়েছে? কিংবা ভক্তদের কাছে?’
মেসির ক্ষমা চাওয়ার বক্তব্যে কিছু অসংগতিও ধরেছেন রোথেন, ‘ক্ষমা চাওয়ার ভিডিওটি সে যত ভালোই বানাক, আমার কাছে ভালো লাগেনি। সে কোচ ও সতীর্থদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে, কিন্তু ভক্তদের কাছে চায়নি। তার এমন ভাবমূর্তিই প্রকাশ পেয়েছে ভক্তদের কাছে। বুঝতে পারছি না, সে কেন বলল, এই সফর বাতিল করতে পারেনি। অর্থাৎ ক্ষমা চাইলেও সে ঠিকই অজুহাত দেখিয়েছে। তাহলে আপনার কাজটা কী? এমন কাণ্ড করে টাকা নেওয়া, নাকি মাঠে পিএসজির জন্য সর্বোচ্চটুকু নিংড়ে দেওয়া?’