মেসির পরা সেই ‘বিশতের’ দাম কত
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ যখন লিওনেল মেসির গায়ে কালো পোশাকটি পরিয়ে দিচ্ছিলেন, দেখে বেশ অবাকই হয়েছিলেন আহমেদ আল–সালেম।
না, পোশাকটি না চেনা বা সাংস্কৃতিক কোনো কারণ ছিল না। আহমেদ আল সালেম একজন কাতারি, পেশায় ব্যবসায়ী। মেসিকে পরিয়ে দেওয়া পোশাকটি তাঁর দোকান থেকেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি যে মেসির জন্য, তা ওই সময় ভাবতে পারেননি।
নিজের কোম্পানির ট্যাগ দেখে পোশাকটি চিনতে পেরেছেন জানিয়ে আল সালেম এএফপিকে বলেন, ‘জানতাম না কী কারণে নেওয়া হয়েছে। যখন দেখলাম, ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম।’
পদক প্রদানের পর মেসিকে পরিয়ে দেওয়া পোশাকটি আরবে ‘বিশত’ নামে পরিচিত।
লম্বা এই পোশাকটি পরা হয় সাদা আলখাল্লার ওপর। তৈরি করা হয় খুবই হালকা সুতা দিয়ে। থাকে খাঁটি সোনার কাজও। মর্যাদার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয় বিশত।
সাধারণত শীর্ষ কর্মকর্তা, শেখ ও সমাজের উচ্চমর্যাদার ব্যক্তিরা বিশত পরে থাকেন। শত শত বছর ধরে উপসাগরীয় দেশগুলোতে বিশেষ সব অনুষ্ঠানে পরা হয় পোশাকটি।
কাতারে বিশত প্রস্তুতকারী শীর্ষ পাঁচ প্রতিষ্ঠানের একটি আল–সালেমের পরিবারের। প্রতিষ্ঠানটিতে ৬০ জন দরজি কাজ করেন। কয়েক দিন আগে আল–সালেমের দোকান থেকে দুটি বিশত কিনে নিয়ে যান বিশ্বকাপ আয়োজকেরা। একটি ছিল কিছুটা ছোট আকারের, আরেকটি একটু বড়।
আল সালেম বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছিল যেন হালকা এবং স্বচ্ছ ফেব্রিকের বিশত দিই। শীতকালে এমন পোশাক চাওয়ায় অবাক হয়েছিলাম। এখন মনে হচ্ছে তাঁরা চেয়েছিলেন ভেতরের জার্সি যেন ঢাকা না পড়ে।’
মেসির গায়ে যে বিশতটি পরিয়ে দেওয়া হয়, সেটির দাম ২ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি। এটি জাপান থেকে আনা নাজাফি কটন আর জার্মানি থেকে আনা স্বর্ণের থ্রেড দিয়ে বানানো। এ ধরনের একেকটি বিশত বানাতে সময় লাগে এক সপ্তাহ।
আল–সালেম জানান, রোববার রাতের ফাইনালে মেসির গায়ে বিশত দেখে আর্জেন্টাইন দর্শকদের মধ্যে পোশাকটি কেনার আগ্রহ তুঙ্গে ওঠে।
সাধারণত দিনে ৮ থেকে ১০টি বিক্রি করলেও বিশ্বকাপ ফাইনালের পরদিন ১৫০টি পর্যন্ত বিশত বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি, ‘একপর্যায়ে বেশ কিছু মানুষ দোকানের বাইরেও দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের সবাই আর্জেন্টাইন মনে হয়েছে। ট্রফির রেপ্লিকা হাতে নিয়ে বিশতের সঙ্গে ছবি তুলছিল আর আর্জেন্টিনার সংগীত মুচাচোজ গাইছিল।’