স্কালোনিকে তাঁর বাবা বলেছিলেন, ‘তুমি বিশ্বকাপ জিততে যাচ্ছ’
বুয়েনস এইরেসে নেমেই যেন আর তর সইছিল না লিওনেল স্কালোনির। তাঁর জন্মস্থান পুজোতোয় কখন ফিরবেন, সেটি নিয়েই অস্থির ছিলেন। কিন্তু আনুষ্ঠানিকতার তো শেষ ছিল না। রাজধানীতে ‘বিজয় প্যারেড’ করতে হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ অপেক্ষায় ছিল আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী দলের। বিজয় মিছিল শেষে সুযোগ পেয়েই ফিরেছেন তাঁর জন্মস্থানে। যেখানে তাঁর অপেক্ষায় ছিলেন তাঁর বাবাসহ পুরো পরিবার।
পুজোতোতেও জনসমাগম এড়াতে পারেননি স্কালোনি। তাঁকে দেওয়া হয়েছে বিপুল সংবর্ধনা। হাজার হাজার মানুষ বরণ করে নিয়েছেন তাঁদের মাটির সন্তানকে। হাজার হাজার মানুষের জনসমাগমে বক্তৃতা দিতে হয়েছে। যোগ দিতে হয়েছে স্থানীয় সংবাদ সম্মেলনও। সেখানেই তিনি স্মরণ করেছেন তাঁর বাবাকে। বলেছেন, ‘বাবাই আমার জীবনের প্রথম কোচ। ফুটবল যা কিছু শিখেছি, সেটি তো বাবার কাছ থেকেই।’
বিশ্বকাপ দেখতে কাতারে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল স্কালোনির বাবার। কিন্তু বয়স হয়ে গেছে, সে কারণেই এত দূর যেতে পারেননি। তবে স্কালোনি জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বকাপ জিতে ফিরে বাবাকে তাঁর ইতিহাস গড়ার গল্পটা বলেছেন, ‘দেড় মাস আগে তাঁর সঙ্গে শেষবার যখন কথা হয়েছিল, তখনো জানতাম না, আমি বিশ্বকাপ জিততে যাচ্ছি। আমি বিশ্বকাপ জিতে বাবার সঙ্গে কথা বলেছি। ইতিহাস গড়ার কাহিনি শুনিয়েছি। তিনি দারুণ খুশি।’
স্কালোনিকে তাঁর বাবা দেড় মাস আগেই নাকি বলেছিলেন বিশ্বকাপ জয়ের কথা, ‘তিনি খুবই আশাবাদী মানুষ। সব সময়ই আশাবাদী। মনে পড়ছে, তিনি বিশ্বকাপের আগেই আমাকে বলেছিলেন যে আমরা বিশ্বকাপ জিততে যাচ্ছি। শেষ পর্যন্ত সেটিই হয়েছে।’
২০১৮ বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনা দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন স্কালোনি। সে সময় তাঁর নিয়োগ খুব একটা ‘স্বাগত’ ছিল না আর্জেন্টিনা ফুটবলে। ডিয়েগো ম্যারাডোনার মতো কিংবদন্তিও তাঁকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। আসলে কোচ হিসেবে নামডাক সেভাবে ছিল না আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সাবেক এই ফুটবলারের।
তবে সব ভ্রুকুটি অগ্রাহ্য করে পাবলো আইমার আর ওয়াল্টার স্যামুয়েলকে সঙ্গে নিয়ে তিনি আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন, এক বছর আগে জিতিয়েছিলেন কোপা আমেরিকার শিরোপা। কোপা ফিনালিসিমার শিরোপাও জিতেছে আর্জেন্টিনা। সিজার লুইস মেনোত্তি আর কার্লোস বিলার্দোর পর আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিশ্বকাপজয়ী কোচ তিনি। মারিও জাগালো ও কার্লোস আলবার্তো পাহেইরার পর লাতিন অঞ্চলের তৃতীয় কোচ স্কালোনি, যিনি একই সঙ্গে কোপা আমেরিকা ও বিশ্বকাপ জিতলেন।