ফুটবলে দুই মাঠেই আজ বাংলাদেশ হেরেছে ভারতের কাছে। চীনের হাংজুতে এশিয়ান গেমসে স্কোরলাইন ১–০। কাঠমান্ডুতে সাফ অনূর্ধ্ব–১৯ ফুটবলে ৩–০।
এশিয়াডে বাংলাদেশের বিপক্ষে অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীই গড়ে দিলেন পার্থক্যটা। যদিও ৮৪ মিনিটে পেনাল্টি আদায় করে নিয়েছিলেন ভারতের আরেক ফরোয়ার্ড ব্রেস মিরান্দা। তাঁকে রুখতে গিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক রহমত মিয়া ট্যাকল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফরি।
বাংলাদেশের ফুটবলাররা প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু রেফারির সিদ্ধান্তের কি আর নড়চড় হয়! খুব ঠান্ডা মাখায় গোলকিপার মিতুল মারমার ডান দিক দিয়ে বল জালে পাঠান ছেত্রী। এবারের এশিয়াডে সিনিয়র কোটায় ভারতীয় দলে খেলছেন দেশের হয়ে ১৪২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ আর ৯২ গোল করা ৩৯ বছর বয়সী এই তারকা।
পুরো ম্যাচে বেশিরভাগ সময়েই ছিল ভারতের প্রাধান্য। ভারতীয় ফরোয়ার্ডরা ম্যাচজুড়েই বাংলাদেশের রক্ষণে হানা দিয়ে গেছেন। গোলের সুযোগও তৈরি করেছেন। কিন্তু গোলটাই পাচ্ছিলেন না। বাংলাদেশের রক্ষণ আর গোলকিপার মিতুল মারমাকে বাহবা দিতেই হবে। মিতুল তো প্রথমার্ধের শেষ দিকে এক আক্রমণ থেকেই অবিশ্বাস্যভাবে তিনবার গোল বঞ্চিত করেন ভারতকে।
আগের ম্যাচে ভালো খেলেও মিয়ানমারের কাছে ৭৫ মিনিটে মুরাদ হাসানের আত্মঘাতী গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। যে ম্যাচকে লক্ষ্য বানিয়ে যাওয়া, সেই ম্যাচেই এমন দুর্ভাগ্যজনক হার।
তবে আজ ভারতের বিপক্ষে সামর্থ্য অনুযায়ী খুব খারাপ খেলেনি বাংলাদেশ। ২৮ মিনিটে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু শটটাই ঠিকমতো নিতে পারেননি। ৭২ মিনিটে মজিবর রহমান জনি দারুণ একটি আক্রমণ থেকে বল পেলেও তাঁর শটটি কর্নারের বিনিময়ে আটকেছেন ভারতের গোলকিপার। আক্রমণে সুমন রেজা, রবিউল হাসানরা ছিলেন অনেক নিস্প্রভ। প্রতিপক্ষের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে খেললেও গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে কোনো লাভ নেই। এবারের এশিয়ান গেমসে প্রথম দুই ম্যাচ থেকে এই শিক্ষাই পেয়েছে বাংলাদেশ।
তবে প্রথমার্ধের শেষ দিকে মিতুল মারমার সেভ তিনটির কথা বলতেই হয়। ব্রেস মিরান্দার ক্রস থেকে বক্সের ভেতর দাঁড়িয়ে শট নিয়েছিলেন সুনীল। সেটি প্রথমে ঠেকান মিতুল। ফিরতি বলে আরেকটি শট নেন রাহুল কেপি। মিতুল সেটিও ফিরিয়ে দেন। এরপর মিরান্দার হেডও ঠেকান মিতুল। পুরো ম্যাচে ছয়টি দারুণ সেভ করেছেন মিতুল। ছেত্রীর নেওয়া পেনাল্টি ঠেকাতে ঠিকঠাক ঝাঁপও দিয়েছিলেন কিন্তু বলের নাগাল পাননি।
সময় যতো গড়িয়েছে, ভারত চাপে পড়ে যাচ্ছিল। গোল করতে তারা ছিল মরিয়া। ভারতীয়দের মরিয়াভাবের সুযোগ নিচ্ছিল বাংলাদেশ। নিচ থেকে বেশ কয়েকবার বল দখলের লড়াইয়ে জিতে পাল্টা আক্রমণে উঠেছিল দল। নিজেদের মধ্যে পাসিং ভালো করলেও গোলমুখে গিয়ে খেই হারিয়েছে। ৬৪ মিনিটে অবশ্য ব্রেস মিরান্দার ফ্রি–কিক বারে লেগে ফিরে আসে। শেষ পর্যন্ত বাধার প্রাচীর টপকাতে পেরে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে ভারত। প্রথম দুই ম্যাচই হেরে দ্বিতীয় রাউন্ডের যাওয়ার সম্ভাবনা কাগজ–কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই বললেই চলছে।