সেশেলসের বিপক্ষে গোল চান জামাল
শুক্রবারের শহর সিলেট এমনিতেই নিরিবিলি। তার ওপর আজ প্রথম রোজা। ফলে শহরে লোকজন রাস্তাঘাটে খুব কমই বেরিয়েছেন। কিন্তু সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের চেহারা ভিন্ন। এখানে একদিকে মাঠের পরচর্যা চলছে। অন্যদিকে টিভির ক্রুরা ব্যস্ত ক্যামেরা নিয়ে।
বাংলাদেশ ও সেশেলস জাতীয় ফুটবল দল বেলা ১১টায় জেলা স্টেডিয়ামে এল সংবাদ সম্মেলন করতে। উদ্দেশ্য জানান দেওয়া আগামীকাল এই মাঠে বিকেল পৌনে চারটায় দুই দল খেলতে নামছে দুই ম্যাচের ফিফা প্রীতি সিরিজের প্রথমটিতে।
বেলা ১১টার কিছু আগে স্টেডিয়াম চত্বরে পা রেখে অবশ্য বোঝা গেল না, এখানে এমন একটি ম্যাচ হচ্ছে। স্টেডিয়ামে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে আজই, কিন্তু কাউন্টার ফাঁকা।
এর বড় কারণ, রোজা শুরু হয়ে গেছে। রোজায় মানুষ ধর্মকর্ম নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকেন বলে সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোজায় খেলাটা না হলে ভিন্ন ছবি হয়তো দেখতাম। তা ছাড়া সিলেটে ব্রুনেইকে নিয়ে তিন জাতি টুর্নামেন্ট হবে জানত সবাই। কিন্তু ব্রুনেই না আসায় সাধারণ মানুষের আগ্রহে কিছুটা ভাটা পড়েছে।’
অপর দিকে স্টেডিয়ামে বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন শুরুর ঠিক আগে চলে গেল বিদ্যুৎ। জেনারেটরও নেই। বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় সংবাদ সম্মেলন শুরু হলো। কয়েক মিনিট পর অবশ্য বিদ্যুৎ এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরাকে দেখে মনে হলো, বেশ চাপে আছেন। কারণ, ঘরের মাঠেও নিজেদের চেয়ে সাত ধাপ পিছিয়ে (১৯৯) থাকা দলের সঙ্গে না জিতলে সেটা বিব্রতকরই হতে পারে। আর তাই জয় ছাড়া অন্য কিছু মাথায় নেই কাবরেরার। এমনকি না জিতলে কোনো অজুহাত দেওয়া চলবে না, বলে দিয়েছেন তিনি।
কাবরেরা বলেন, ‘দেশের মাটিতে খেলতে আমরা উন্মুখ হয়ে আছি। তবে ম্যাচটা চ্যালেঞ্জিং হবে। সেশেলস অপেশাদার দল না অন্য কিছু, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমরা যে ভালো দল এবং ভালো খেলতে পারি, সেটা দেখাতে হবে। আমাদের ধারাবাহিক হতে হবে।’
এই ম্যাচ দুটি জিততেই হবে জানিয়ে কাবরেরার সাফ কথা, ‘আমাদের দেখাতে হবে যে আমরা জিততে পারি। এ ব্যাপারে কোনো অজুহাত দেওয়া চলবে না। আমাদের দল হিসেবে ভালো খেলতে হবে, যাতে দলকে নিয়ে গর্ব হয়। আমি আশাবাদী যে আমরা ভালো করব। লক্ষ্য আমাদের জয়, যেখানে ব্যবধান কোনো ব্যাপার নয়। শুধু জেতা নয়, আমাদের দেখাতে হবে যে আমরা উন্নতিও করেছি।’
সেশেলসের ফুটবলাররা শক্তিশালী
ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের দিক থেকেও কয়েকজন ফুটবলার বেশ ভালো। বিশেষ করে ফরোয়ার্ডে। তবে বাংলাদেশ কোচ জানিয়েছেন, তিনি এসব নিয়ে ভাবছেন না। তাঁর যত ভাবনা নিজেদের নিয়ে।
অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেছেন, সবকিছু ইতিবাচক আছে দলের ভেতর। দলে দেখছেন না কোনো সমস্যা। জামাল যেমন বলেন, ‘ভালো ফল করাই আমাদের লক্ষ্য। সৌদি আরবে আমরা ১২০ ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের মালাউইয়ের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছি অনুশীলন ম্যাচে। সেই ধারাবাহিকতা রাখতে চাই সিলেটে। আমরা ম্যাচের জন্য তৈরি। আশা করি, ভালো করতে পারব। এক বছর পর আমরা দেশের মাটিতে খেলব। সবাই খুব সিরিয়াস।’
বাংলাদেশ জিততে পারবে কি না—এমন প্রশ্নে অধিনায়কের জবাব, ‘আমাদের জয়ের সম্ভাবনা আছে। তবে জিততে হলে গোল করতে হবে।’ গত কয়েক ম্যাচের আগে অধিনায়ক একই কথা বলেন, ‘আমাদের গোল করতে হবে।’ কিন্তু গোল আর আসে না। কথাটা মনে করিয়ে দিলে বাংলাদেশ অধিনায়ক স্বীকার করলেন, ‘হ্যাঁ এটা ঠিক, আমরা গোল করতে পারিনি।’
আগামীকাল গোল না করলে সমালোচনার মুখে পড়তে হবে জামাল ভূঁইয়াদের। তাই তাঁরা সতর্ক এবং জিততে মরিয়া। যেমন ম্যাচ দুটি জিততে চান বলে আজ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দিয়েছেন সেশেলসের কোচ নেভিল বোথ।