২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ইতালির নতুন কোচ কে হচ্ছেন

নতুন কোচ খুঁজছে ইতালি ফুটবল ফেডারেশন (এফআইজিসি)ছবি: টুইটার

২০২৬ সাল পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে চুক্তি ছিল ইতালি ফুটবল ফেডারেশনের (এফআইজিসি)। কিন্তু সেই চুক্তি বাতিল করে হঠাৎই গতকাল পদত্যাগ করেন রবার্তো মানচিনি। আগামী বছর হতে যাওয়া ইউরো ও বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আগে যেটা বড় ধাক্কাই ইতালির জন্য।

এফআইজিসি তাই তড়িঘড়ি করে নেমেছে নতুন কোচের খোঁজে। কয়েক দিনের মধ্যে নতুন কোচের নাম ঘোষণা করা হবে—মানচিনির বিদায়ের পর এফআইজিসির এমন বিবৃতিতে বোঝা যায় কিছু নামই এরই মধ্যে তারা ভেবে রেখেছে। তো কে হতেন পারেন ইতালির নতুন কোচ? মানচিনির সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে কারা আছেন এফআইজিসির সংক্ষিপ্ত তালিকায়, দেখা যাক একনজরে।

আরও পড়ুন

লুসিয়ানো স্পালেত্তি

৩৩ বছর পর নাপোলিতে সিরি ‘আ’র জিতিয়েছেন গত মৌসুমে। স্বাভাবিকভাবেই মনে হচ্ছিল লুসিয়ানো স্পালেত্তির সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে চুক্তি নবায়ন করবে নাপোলি। কিন্তু হলো উল্টোটা। নাপোলির কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই স্পালেত্তি ঘোষণা দেন ক্লাব ছেড়ে দেওয়ার। আপাতত তিনি চাকরিহীন। সাম্প্রতিক সাফল্য বিবেচনায় তাই স্পালেত্তিই হতে পারেন ইতালির প্রথম পছন্দ। প্রায় ২০ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে বেশির ভাগ সময় ইতালিয়ান ক্লাবগুলোর কোচ ছিলেন স্পালেত্তি, ফলে ইতালিয়ান ফুটবলের আগাগোড়া তাঁর নখদর্পনে। মানচিনির কোচিং দর্শনের সঙ্গে তাঁর কিছু মিলও আছে, ফলে পালাবদলটাও খুব একটা কঠিন হবে না ইতালির জন্য।

লুসিয়ানো স্পালেত্তি
ছবি: টুইটার

আন্তোনিও কন্তে

এ বছর মার্চে টটেনহাম থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর থেকে আন্তোনিও কন্তেও বেকার। আগেও তিনি ইতালির কোচের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন, তাঁর অধীনে ইতালি খেলেছে ২০১৬ ইউরোতে, পথচলা থেমেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। তবে সেই সময় বেশ বাজে অবস্থা থেকে ইতালিকে কিছুটা পথে ফেরানোর জন্য কন্তে প্রশংসাই পেয়েছেন। জুভেন্টাস, চেলসি ও ইন্টার মিলানের কোচ হিসেবে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার হলেও সম্প্রতি টটেনহামে তাঁর ব্যর্থতা কিছুটা হলেও কন্তেকে ইতালির কোচ হওয়ার লড়াইয়ে পেছনে ফেলে দিতে পারে।

আরও পড়ুন

ফ্যাবিও ক্যানাভারো

ইতালি যখন ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হলো, মানচিনির জায়গায় সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে ফ্যাবিও ক্যানাভারোর নাম শোনা যাচ্ছিল। তবে সেই গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে এফআইজিসি শেষ পর্যন্ত মানচিনির ওপরই আস্থা রেখেছিল। এখন মানচিনি সরে যাওয়ায় আবার ক্যানাভারোর নাম শোনা যাচ্ছে। ইতালির সর্বশেষ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক তিনি, সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার এবং ইতিহাসের একমাত্র ডিফেন্ডার হিসেবে ব্যালন ডি’অরজয়ী ক্যানাভারোর খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার অসাধারণ। তবে কোচ হিসেবে ইউরোপের শীর্ষ পর্যায়ে তিনি খুব একটা অভিজ্ঞ নন। চীন ও সৌদি আরবের কয়েকটি ক্লাবে কোচিং করিয়েছেন। ইউরোপে কোচিং অভিজ্ঞতা বলতে শুধু ইতালিয়ান ক্লাব বেনেভেন্তোতে এক বছর। দেখার অপেক্ষা, এফআইজিসি তাঁকে নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেয় কি না।

ফাবিও ক্যানাভারো
ফাইল ছবি: এএফপি

জেন্নারো গাত্তুসো

ইতালির ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের মিডফিল্ডার জেন্নারো গাত্তুসোর ভ্যালেন্সিয়ার কোচের পদ থেকে বরখাস্ত হয়েছেন এ বছরের শুরুর দিকে। এর আগে নাপোলি ও এসি মিলানের মতো দলের কোচ ছিলেন। তবে কোথাও দীর্ঘ সময় টিকতে পারেননি। সাফল্য বলতে নাপোলিকে ২০১৯-২০ মৌসুমে ইতালিয়ান কাপ জেতানো। কোচ হিসেবে তিনি কন্তে বা স্পালেত্তিদের মতো অভিজ্ঞ নন, ইতালির দায়িত্ব নিতে কতটা তৈরি, সেই প্রশ্ন তো তাই আছেই। খেলোয়াড়ি জীবনে নিজের অফুরন্ত প্রাণশক্তি ও হার না মানা মানসিকতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তবে কোচ হিসেবে সেই গাত্তুসোকে খুঁজে পাওয়া গেছে খুব কমই।

আরও পড়ুন

মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি

তাঁকে নিতে চাইলে আগে জুভেন্টাসকে রাজি করাতে হবে। কারণ, মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি এখনো জুভেন্টাসের কোচের দায়িত্বে। এর বাইরে ইতালির কোচ হতে যা যা দরকার এর সবই আছে অ্যালেগ্রির। জুভেন্টাসে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার, ৫ বার জিতেছেন ইতালিয়ান লিগ। এর আগে মিলানকে লিগ জিতিয়েছেন একবার।

মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি
ছবি: টুইটার

খেলোয়াড় ব্যবস্থাপনায় দারুণ, ইতালিয়ান ফুটবলে মূল দর্শনের সঙ্গে তাঁর কোচিং–দর্শনেরও বেশ মিল। এখন জুভেন্টাস দেশের জন্য তাঁকে ছাড়বে কি না, কিংবা অ্যালেগ্রি ক্লাব ফুটবলের প্রতিদিনের রোমাঞ্চ ছেড়ে জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে রাজি হবেন কি না, সেটাই প্রশ্ন।