বার্সেলোনার নৈশক্লাবে এক নারীকে ধর্ষণের দায়ে সাড়ে চার বছরের কারাদণ্ড পাওয়া দানি আলভেজ গত পরশু জামিনে মুক্ত হয়েছেন। বার্সেলোনার আদালত গত বুধবার জামিন মঞ্জুর করলেও জামানতের অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় মুক্তি পাচ্ছিলেন না আলভেজ। শেষ পর্যন্ত অর্থ জমা দিয়েই প্রায় ১৪ মাস পর কারাগার ত্যাগ করেছেন এই ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার।
আলভেজ বেরিয়ে আসার পর তাঁর জামিনের অর্থ কে পরিশোধ করেছে, তা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। পরে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম মুন্দো দেপোর্তিভো, মেক্সিকান টেলিভিশন চ্যানেল টিইউডিএন এবং কাতারি সাংবাদিক মাবকুত আল মারির জানিয়েছেন, আলভেজের সাবেক বার্সেলোনা সতীর্থ এবং বর্তমানে আতলেতিকো মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড মেম্ফিস ডিপাই জামানতের অর্থ পরিশোধ করেছেন। জামিন নিতে আলভেজকে জমা দিতে হয়েছে ১০ লাখ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ কোটি টাকা)।
এর আগে জামিন পেলেও জামানতের অর্থ জোগাড় করতে না পারায় কারাগারে দিন কাটাতে হচ্ছিল আলভেজকে। শুরুতে নেইমারের অর্থ পরিশোধ করার কথা শোনা যায়, যিনি এর আগে বিচারকাজ চলার সময়ও আর্থিকভাবে সহায়তা করেছিলেন আলভেজকে। তবে সমালোচনার মুখে নেইমারের বাবা ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া আলভেজকে আর কোনো সহায়তা না করার সিদ্ধান্তের কথা জানান।
এর পর থেকেই মূলত অর্থের সন্ধানে ছিলেন আলভেজের মা ও ভাই। পরে অবশ্য সেই অর্থ জোগাড় হওয়ার কথা জানা যায় এবং জামিনে বেরিয়েও আসেন আলভেজ।
২০২১–২২ মৌসুমে বার্সেলোনায় মাত্র ১২ ম্যাচ একসঙ্গে খেলেছিলেন আলভেজ ও ডিপাই। তবে এর মধ্যেই নাকি একে অপরের খুব ভালো বন্ধু হয়ে ওঠেন এ দুজন। সেই বন্ধুত্বের খাতিরেই বিপদের সময় অর্থসহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছেন ডিপাই।
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পাশে ডিপাইয়ের দাঁড়ানোর ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে একাধিক ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে ম্যানচেস্টার সিটির ফরাসি ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন মেন্দি যখন বিচারের মুখোমুখি হয়েছিলেন, তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ডিপাই।
এমনকি অভিযোগ থেকে অব্যহতি পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেন্দির পক্ষে পোস্টও দিয়েছিলেন এই ডাচ ফুটবলার। এ ছাড়া মাদক পাচারের দায়ে অভিযুক্ত ও আটক ডাচ ফরোয়ার্ড কুইন্সি প্রোমেসকেও সহায়তা করেছেন ডিপাই।
সম্প্রতি আলভেজ ও মেন্দির পাশে দাঁড়ানো নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে ডিপাই বলেছেন, ‘বেঞ্জামিন মেন্দি ও দানি আলভেজ অপরাধমূলক মামলায় জড়িত। তবে এর মানে এই নয় যে তারা এখন আর আমার বন্ধু নয়। আমি কখনো আমার বন্ধু ও পরিবারকে হতাশ করব না। এর মানে এটা নয় যে তারা যা করে তার সঙ্গে আমি একমত। কিন্তু আমি তাদের পরিত্যাগ করতে পারি না। মানুষের বোঝা উচিত যে আমি ভিন্ন একটি পরিবেশ থেকে এসেছি।’