চ্যাম্পিয়নস লিগের ড্র হওয়ার পর যদি কাউকে জিজ্ঞেস করা হতো সবচেয়ে কম আকর্ষণীয় গ্রুপ কোনটি- বেশিরভাগই হয়তো একবাক্যে উত্তর দিত গ্রুপ ‘ডি’। গ্রুপের চার দল হলো টটেনহাম, স্পোর্টিং লিসবন, এইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট এবং মার্শেই।
সে অর্থে কাউকেই ইউরোপীয় ফুটবলের পরাশক্তি বলা যায় না। তবে গ্রুপ পর্বের শেষ রাউন্ডে এসে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা ছড়াচ্ছিল এই গ্রুপটিই। যেখান থেকে প্রত্যেককটি দলের আজ রাতে সম্ভাবনা ছিল নকআউট পর্বে যাওয়ার।
তবে শেষ পর্যন্ত জমে উঠা এই গ্রুপ থেকে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে টটেনহাম ও এইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট। টটেনহাম ২-১ গোলে হারিয়েছে মার্শেইকে। একই ব্যবধানে এইনট্রাখট হারিয়েছে লিসবনকে।
প্রথমার্ধ শেষেই নাটক জমে ক্ষীর। মার্শেইয়ের মাঠে পিছিয়ে পড়ে টটেনহাম শীর্ষ থেকে নেমে যায় তিন নম্বরে। মার্শেই উঠে আসে দুইয়ে। আর এইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে নিজেদের মাঠে এগিয়ে গিয়ে শীর্ষে উঠে আসে স্পোর্টিং লিসবন।
তবে এরচেয়েও বড় নাটক অপেক্ষা করছিল দ্বিতীয়ার্ধেই। প্রথমার্ধে যে পয়েন্ট টেবিল সেট হয়ে ছিল, দ্বিতীয়ার্ধের রুদ্ধশ্বাস রোমাঞ্চে তা বদলে গেছে পুরোপুরি।
টটেনহাম-মার্শেই ম্যাচের কথায় আগে বলা যাক। প্রথমার্ধে আন্তোনিও কন্তের শিষ্যদের রীতমতো চাপে রাখে ফরাসি ক্লাবটি। তবে সুযোগ ও রূপান্তরগুলো ঠিকঠাক না হওয়ায় হতাশ হতে হচ্ছিল মার্শেইকে। প্রথমার্ধে দাপট দেখানোর ফল অবশ্য ঠিকই পেয়েছে তারা।
বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে শর্ট কর্নার থেকে ডি-বক্সে ক্রস করেন ফরাসি তারকা জর্ডান ভেরেটট। ব্যাক পোস্টে অনেকটা ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা চান্সেল এমবেম্বা দারুণ এক উড়ন্ত হেডে লক্ষ্যভেদ করে নাচিয়ে তোলেন স্তাদে অরেঞ্জ ভেলোদ্রোমকে। তখন নকআউট যেন দেখতেই পাচ্ছিল মার্শেই।
বিরতির পর অবশ্য ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালাতে থাকে টটেনহাম। ৫৪ মিনিটে ইভান পেরিসিচের ইনসুইংগিং সেট পিস থেকে বল পেয়ে দারুণ এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ক্লেমেন্ত লংলে। নকআউটে যাওয়ার জন্য এই ১-১ ব্যবধানই যথেষ্ট ছিল টটেনহামের জন্য।
তবে শেষ মুহূর্তে পিয়েরে-এমিল হয়েবিয়ের গোলে শেষ পর্যন্ত জয় দিয়ে গ্রুপ সেরার পদ নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়ে টটেনহাম। আর সুযোগ মিসের হতাশা নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে মার্শেইকে।
পাশার দান বদলেছে অন্য ম্যাচেও। প্রথমার্ধে ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে লিড নিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছিল স্পোর্টিং লিসবন। ৩৯ মিনিটে গোল করেন আর্থুর গোমেজ। তবে দ্বিতীয়ার্ধে হিসাব বদলে দেন দাইচি কামাদা ও কোলো মোয়ানি। এ দুজনের গোলে লিসবনকে হারিয়ে নকআউটের টিকিট নিশ্চিত করেছে ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন ফ্রাঙ্কফুর্ট।