৭০ লাখ টাকার কোচ মারুফুল এবার কোথায়
গত মৌসুমে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন কোচ মারফুল হক। কিন্তু এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে কোচ হিসেবে তিনি কোনো দলেই নেই! এ মৌসুমে কোচিং করাবেন না দেশসেরা কোচ। তবে চট্টগ্রাম আবাহনীতে থাকছেন উপদেষ্টা কোচ হিসেবে, যেখানে পরামর্শ দেওয়া ছাড়া কার্যত তাঁর কোনো ভূমিকা থাকবে না।
২০০৮ থেকে টানা কোচিং করিয়ে এ মৌসুমে বিশ্রাম নিতে চেয়েছিলেন মারুফুল। ভালো প্রস্তাব পেলে হয়তো কোচিং করাতেন ঠিকই। কিন্তু মনমতো কোনো প্রস্তাব পাননি। কাজেই এই মৌসুমে তিনি বিশ্রামই নিচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে মারুফুল হক প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘টানা ১৫ বছর ধরে কোচিং করাচ্ছি। একটা বিরতি নেওয়া দরকার ছিল। সেটাই আসলে মূল কারণ। তা ছাড়া এখন পরিবেশটা কেমন যেন হয়ে গেছে। সব কিছু মিলিয়ে খাপ খাওয়ানো কঠিন। তবে ওই রকম কোনো প্রস্তাব থাকলে বিবেচনা করা যেত।’
মারুফুলের শেষ কথাতেই বেরিয়ে আসছে দেশি কোচদের বর্তমান অবস্থা। বড় ক্লাবগুলো বিদেশিতেই ঝুঁকে আছে অনেক আগে থেকে। মাঝারি মানের কোনো কোনো দলের চোখও থাকে বিদেশি কোচে। দেশের নামীদামি কোচেরা তাই আড়ালে চলে যান। এবার যেমন গেলেন গত ১৫ বছরে ঘরোয়া ফুটবলে সবচেয়ে বেশি ট্রফি জেতা কোচ মারুফুল।
কিন্তু কোচিং না করালে উপদেষ্টা কোচই–বা কেন হওয়া? মারুফুল বলেছেন কারণটা, ‘ওরা বুয়েটের মাঠে অনুশীলন করবে, ফলে আমার জন্য সুবিধা হবে। তাই উপদেষ্টা হিসেবে থাকছি ওদের সঙ্গে।’
২০০৮ থেকে এ পর্যন্ত ৬টি ক্লাবের কোচ ছিলেন মারুফুল হক। মোহামেডান, মুক্তিযোদ্ধা, শেখ রাসেল, শেখ জামাল, আরামবাগ ও চট্টগ্রাম আবাহনীকে কোচিং করিয়েছেন দাপটের সঙ্গে। ট্রফি দিয়ে যদি একজন কোচের সাফল্য বিবেচনা করা হয়, তাহলে গত ১৫ বছরে ১১টি শিরোপা জেতা মারুফুল হক নিজেকে সফল ভাবতেই পারেন। রানার্সআপ হয়েছেন ৬টি টুর্নামেন্টে।
মোহামেডানের হয়ে মারুফুল শিরোপা জিতেছেন দুটি ফেডারেশন কাপ ও একটি সুপার কাপে। সঙ্গে দুবার লিগ রানার্সআপ। মুক্তিযোদ্ধার হয়ে একবার লিগ রানার্সআপ। শেখ রাসেলে এক মৌসুমে জিতেছেন ‘ট্রেবল’। নীল জার্সিধারীদের হয়ে সুপার কাপে রানার্সআপ, লিগেও একবার রানার্সআপ। শেখ জামালকে জিতিয়েছেন দুটি লিগ, ভুটানে কিংস কাপ ও একটি ফেডারেশন কাপ। আরামবাগের কোচ হিসেবে জিতেছেন স্বাধীনতা কাপ। চট্টগ্রামে শেখ কামাল ক্লাব কাপে হয়েছেন রানার্সআপ।
তবে এখানেই ইতি টানছেন না মারুফুল। আগামী মৌসুমে ভালো প্রস্তাব পেলে আবার কোচিংয়ে ফেরার ইচ্ছা তাঁর।