ছোটখাটো গড়নের প্রীতি রায় গত বছর সেপ্টেম্বরে নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলেছিলেন নেপালের জাতীয় দলে। সেই প্রীতি এবার ঢাকায় এসেছেন অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের অধিনায়ক হয়ে।
কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে সাফের ফাইনালে বাংলাদেশের কাছে হারের ক্ষতটা এখনো শুকায়নি এই ফরোয়ার্ডের মন থেকে। কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে এবার গ্রুপ পর্বেও বাংলাদেশের কাছে হার ৩-১ ব্যবধানে। সে কারণেই কিনা আজ বাফুফে ভবনে অনুষ্ঠিত ফাইনাল পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনের পুরোটা সময়জুড়ে প্রীতির মুখটা ছিল গম্ভীর।
প্রীতির মনের কথাটা যেন সহজেই পড়তে পেরেছেন নেপালের কোচ ইয়াম প্রসাদ গুরুং। তাই তো সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বলে উঠলেন, ‘আমরা এবার জিততে চাই। আগামীকাল ফাইনাল। আশা করি, এবার বাংলাদেশকে হারিয়ে সাফের ফাইনালে হারের ক্ষতে প্রলেপ দিতে পারব।’
কমলাপুর স্টেডিয়ামে আগামীকাল সন্ধ্যা ছয়টায় ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেপাল। গত সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় ও বয়সভিত্তিক সাফ মিলিয়ে তিনবার নেপালের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে কাঠমান্ডুতে নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন সাবিনা খাতুনরা। নভেম্বরে ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৫ সাফে রাউন্ড রবিন লিগের টুর্নামেন্টে নেপালের সঙ্গে শেষ ম্যাচে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। জিতলেই চ্যাম্পিয়ন এমন সমীকরণের ম্যাচে সেদিন ড্র করায় ট্রফি গিয়েছিল নেপালে। তবে এবার ঘরের মাঠে ট্রফিটা রেখে দিতে চান শামসুন্নাহাররা।
গ্রুপ পর্বের মতো ফাইনালেও নেপালকে হারানোর আশা বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানীর, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল ফাইনালে ওঠা। মেয়েরা সেটা পূরণ করেছে। আমরা গ্রুপ সেরা হয়ে ফাইনালে উঠেছি। এখন শুধু আরেকটা ম্যাচ বাকি আছে। মেয়েরা গত কয়েক দিন কমলাপুরে যে ফুটবল উপহার দিয়েছে, ফাইনালে সেটিই উপহার দেবে। আশা করি, আমরাই এবার চ্যাম্পিয়ন হব।’
টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট ছিল ভারত। কিন্তু গতকাল সেই ভারতকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে নেপাল। এই নেপালকে তাই হালকাভাবে নিচ্ছেন না কোচ, ‘ফাইনালটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও কঠিন হবে। নেপাল অবশ্যই ভালো দল। গতকাল শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে ওরা জিতে আরও আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামবে। আমাদের তাই সতর্ক হয়েই খেলতে হবে।’
ভুটানের বিপক্ষে গতকাল হ্যাটট্রিক করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক শামসুন্নাহার। টুর্নামেন্টে ৪ গোল করে নেপালের আমিশা কারকির সঙ্গে সর্বোচ্চ গোলদাতার দৌড়ে রয়েছেন এগিয়ে। আগামীকালও গোল করতে চান শামসুন্নাহার। তবে দলের প্রয়োজনে গোল করানোটাই জরুরি বলে মানলেন তিনি, ‘আমি আগে চেষ্টা করব দলকে জেতাতে। আমার বেলায় গোলের সুযোগ যদি ৫০ শতাংশ থাকে কিন্তু অন্যের যদি ৭০ শতাংশ থাকে, তাহলে আমি তাকেই পাস দেব।’
এর আগে দুটি বয়সভিত্তিক সাফের অধিনায়ক ছিলেন শামসুন্নাহার। কিন্তু দুবারই বাংলাদেশ হয়েছে রানার্স আপ। নিজের হাতে চ্যাম্পিয়নের ট্রফিটা কোনোবারই তুলে ধরতে পারেননি। এবার সেই অধরা স্বপ্নটা পূরণ করতে চান শামসুন্নাহার, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল ফাইনালে ওঠা। সেটা উঠেছি। এবার চেষ্টা থাকবে ঘরের মাঠে ট্রফিটা রেখে দিতে। সেই লক্ষ্যেই আমরা মাঠে নামব।’