আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন বেনজেমা
হৃদয় কীভাবে ভাঙে তা গতকাল রাতে লুসাইলে টের পেয়েছে ফ্রান্স। বিশ্বকাপের ফাইনাল হেরেছে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। পরদিনই দুঃসংবাদ শুনল ফরাসি ফুটবল।
ফ্রান্স জাতীয় দলকে বিদায় বলে দিলেন করিম বেনজেমা। আজ ইনস্টাগ্রামের এক পোস্টে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানানোর ঘোষণা দেন ব্যালন ডি’অরজয়ী রিয়াল মাদ্রিদ তারকা।
চোটের কারণে কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ফ্রান্স দল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন ৩৫ বছর বয়সী বেনজেমা। বিশ্বকাপ চলাকালীন চোট কাটিয়ে সুস্থও হয়ে ওঠেন। শুরু করেন অনুশীলন। গুঞ্জন ওঠে, ফ্রান্স তাঁকে বিশ্বকাপে খেলাতেও পারে। কারণ, ফ্রান্সের বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকে তাঁর নাম কাটা পড়েনি। নিবন্ধিত ছিলেন। ফাইনালের আগে এই গুঞ্জন আরও জোরালো হয়। কিন্তু কোচ দিদিয়ের দেশম তাঁকে খেলাননি।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ তাঁকে ফাইনাল দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট যে বিমানে দোহায় যাবেন, সেই বিমানেই বেনজেমাকে যাওয়ার নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু জিনেদিন জিদানের মতো বেনজেমাও প্রস্তাবটি গ্রহণ করেননি। না করে দেন। ফাইনালের আগে শুক্রবার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বেনজেমা জানিয়েও দেন সে কথা, ‘আমি আগ্রহী না।’
আজ ইনস্টাগ্রামে আন্তর্জাতিক ফুটবল ছাড়ার ঘোষণা বেনজেমা দেন এভাবে, ‘আমার সব চেষ্টা ও ভুলগুলোর কারণেই আজ আমি এখানে। আমি এ নিয়ে গর্বিত। আশপাশের সবাইকে নিয়ে আমার নিজের গল্পটা শেষ হলো।’
২০১৪ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ গোলদাতা (৩) বেনজেমা। কিন্তু এরপর তখনকার জাতীয় দল সতীর্থ ম্যাথু ভালবুয়েনাকে ব্ল্যাকমেইলিং করার বিতর্কে জড়িয়ে জাতীয় দলে ব্রাত্য হয়ে পড়েন। জায়গা হয়নি ২০১৮ বিশ্বকাপের ফ্রান্স দলে। সেবার বেনজেমাকে ছাড়াই চ্যাম্পিয়ন হয় ফ্রান্স। গত ইউরোয় বেনজেমাকে জাতীয় দলে ফেরান ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম। সে টুর্নামেন্টেও ৪ গোল করে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন বেনজেমা।
ফ্রান্সের হয়ে ২০০৭ সালে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে অভিষেকে গোল পেয়েছিলেন বেনজেমা। এই ১৫ বছরে ৯৭ ম্যাচে করেছেন ৩৭ গোল। দেশের পঞ্চম সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বললেন।
গত অক্টোবের ব্যালন ডি’অর জেতা বেনজেমা কাতার বিশ্বকাপ খেলতে মরিয়া ছিলেন। শেষ পর্যন্ত না পারলেও ফ্রান্স দলের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ছিল বেনজেমা। ইএসপিএন সূত্র মারফত এর আগে জানিয়েছিল, বেনজেমার ‘দলের প্রতি পূর্ণ সমর্থন আছে এবং সে চায় দল বিশ্বকাপ জিতুক।’