অবকাশের আনন্দে আছে দুশ্চিন্তাও 

বাংলাদেশ দলের ফুটবলার বিশ্বনাথ ও মোরছালিনপ্রথম আলো

এই ছুটির জন্যই যেন মুখিয়ে ছিলেন তপু বর্মণ। আট মাস বয়সী ছেলে সাগ্নিককে এত দিন সেভাবে সময়ই দেওয়া হয়নি। ব্যস্ত একটা মৌসুম শেষ করে তাই ছেলে ছাড়া আর কিছু ভাবতেই পারছেন না জাতীয় দলের এই ফুটবলার, ‘আর কিছুদিন পরেই মৌসুম শুরু হয়ে যাবে। ব্যস্ত হয়ে পড়ব খেলা নিয়ে। এখন যতটা পারি ছেলের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি।’

প্রিমিয়ার লিগ শেষ হয়েছে গত ২৯ মে। এরপর ছিল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অস্ট্রেলিয়া ও লেবাননের বিপক্ষে বাংলাদেশের গ্রুপের শেষ দুটি ম্যাচ। ৬ জুন ঢাকায় অস্ট্রেলিয়া ও ১১ জুন লেবাননের বিপক্ষে ম্যাচের পর থেকেই ছুটির মতো সময় কাটছে জাতীয় দলের ফুটবলারদের। এবার ছুটিটা একটু লম্বা হওয়ায় খুশি তপু, ‘গত কয়েক মৌসুমে লিগের পরেও কিছু না কিছু খেলা ছিল। এবার পুরোপুরি ছুটি। ছেলে ছোট বলে কোথাও বেড়াতে যাওয়া হয়নি। তবে বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে সময়টা দারুণ কাটছে।’

আরও পড়ুন

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের বাড়িতে তপু অবশ্য ফিটনেস নিয়েও কাজ করছেন, ‘ফিটনেস নিয়ে কাজ করতেই হয়, নয়তো ক্লাবের অনুশীলনে অনেক পিছিয়ে পড়তে হয়। এটা নিজের প্রয়োজনেই। সুযোগ পেলে বাড়ির আশপাশে এলাকার ছেলেদের সঙ্গে ফুটবলও খেলছি।’

বাংলাদেশ দলের ডিফেন্ডার তপু বর্মণ
বাফুফে

জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন অবকাশের এ সময়ে আছেন তাঁর বরিশাল সদরের বাড়িতে। তাঁরও সময় কাটছে পরিবারের সঙ্গে,‘পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি। নিজের মতো করে ফুটবল অনুশীলন করছি। বাড়িতে কিছু সরঞ্জাম আছে। ফিটনেস রুটিন অনুসরণ করছি। এমন ছুটি অনেক দিন পর পেলাম।’

আরও পড়ুন

জাতীয় দলের ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ সময়টা কাটাতে স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তান নিয়ে গিয়েছিলেন দেশের বাইরে। আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন, মৌসুম শেষে পরিবার নিয়ে দেশের বাইরে বেড়াতে যাবেন, ‘স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে মালয়েশিয়া গিয়েছিলাম। কুয়ালালামপুর ও লাঙ্কাউইতে ভালো সময় কেটেছে। এখন বাড়িতেই পরিবারকে সময় দিচ্ছি।’

জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন
প্রথম আলো

জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড শেখ মোরছালিনের ছুটি কাটছে একটু অন্যভাবে। তিনি আছেন ফরিদপুরের চর ভদ্রাসনের গ্রামের বাড়িতে। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মনটা তাঁর একটু খারাপই। নিজের পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন মোরছালিন, ‘দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা ছিল এর মধ্যে। এখন দেশের যে অবস্থা, তাতে পরীক্ষার কথা কীভাবে ভাবি। বিশ্ববিদ্যালয় কবে খুলবে, জানি না। এর মধ্যে পরীক্ষাটা হয়ে গেলে ভালো হতো। পরে ফুটবল মৌসুমের মধ্যে পরীক্ষা হবে, ঝামেলায় পড়ব।’

আরও পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাসের ছাত্র মোরছালিন তারপরও চেষ্টা করছেন অনেক দিন পর পাওয়া এই ছুটি ভালোভাবে কাজে লাগাতে। জাতীয় দলের খেলোয়াড় তিনি, এলাকায় গেলে উঠতি ফুটবলাররা তাঁর কাছে আসেন। টিপস চান। মোরছালিন সেটা উপভোগই করেন, ‘এলাকার ছেলেদের সঙ্গে প্রতিদিন বিকেলে ফুটবল খেলি। অভিজ্ঞতা বিনিময় করি। সঙ্গে ফিটনেস রুটিনটাও অনুসরণ করছি। তবে বাড়িতে এলে খাওয়া-দাওয়ার লাগাম টানাটা কঠিন। তারপরও ফিটনেসের চিন্তা মাথায় রাখতেই হয়।’