কর ফাঁকির মামলা থেকে মুক্তি ম্যারাডোনার

আর্জেন্টিনার প্রয়াত কিংবদন্তি ডিয়োগো ম্যারাডোনাফিফা

৩০ বছর! দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে লড়াইয়ের পর অবশেষে কর ফাঁকি মামলায় কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে অব্যাহতি দিল ইতালির সর্বোচ্চ আদালত। ইতালির রাজস্ব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই লড়াইয়ে জেতার খবরটি যখন এল, তার তিন বছর আগেই অন্যলোকে পাড়ি জমিয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা।

অনেকের কাছে সর্বকালের সেরা ফুটবলার ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি লিখটেনস্টাইনের প্রক্সি কোম্পানি ব্যবহার করে ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত তখনকার ক্লাব নাপোলি থেকে পাওয়া ইমেজ স্বত্বের কর ফাঁকি দিয়েছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত এ অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

ম্যারাডোনার অন্য রকম এ জয় নিয়ে তাঁর আইনজীবী অ্যাঞ্জেলো পিসানি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এটা শেষ হলো। আমি স্পষ্টভাবে নির্ভয়ে বলতে পারি যে ম্যারাডোনা কখনোই কর ফাঁকি দেননি।’

ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়নি
রয়টার্স

ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে কর ফাঁকি অভিযোগে তদন্ত শুরু হয় ১৯৯০ সালে। যে ধারাবাহিকতায় ৩ কোটি ৭০ লাখ ইউরো কর ফাঁকির অভিযোগও পরবর্তীকালে সামনে আনা হয়। এরপর বিভিন্ন সময় ইতালি সফরকালে তাঁর বেশ কিছু সম্পদও বাজেয়াপ্ত করা হয়। এর মধ্যে লম্বা সময় ধরে আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন ম্যারাডোনা। তবে এ মামলার নিষ্পত্তির আগেই ২০২০ সালে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক।

আরও পড়ুন

মৃত্যুর পরও অবশ্য থামেনি আইনি লড়াই। তবে শেষ পর্যন্ত এ লড়াইয়েও জয় পেয়েছেন ম্যারাডোনা। পিসানি বলেছেন, ‘চূড়ান্ত রায় ভক্ত, ফুটবলের মূল্যবোধ ও ম্যারাডোনার স্মৃতির প্রতি ন্যায়বিচার করেছে। ৩০ বছর ধরে যে নিপীড়ন তাঁর ওপর চলছিল, তারও সমাপ্তি ঘটল। পাশাপাশি এখন তার উত্তরাধিকারীদের ক্ষতিপূরণ দাবি করার আইনগত অধিকার রয়েছে। আমি আশা করি, তারাই এ সুযোগ গ্রহণ করবে। তাদের বাবার স্মৃতির উদ্দেশে তারা এটি করবে।’

ম্যারাডোনার অবদান এখনো শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন নেপলসবাসী
এএফপি

উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে বার্সেলোনা থেকে ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলিতে আসেন ম্যারাডোনা। আর্জেন্টাইন জাদুকরের হাত ধরে পুরোপুরি বদলে যায় নেপলসের ক্লাবটি। মাফিয়া ও সন্ত্রাসীদের শহর হিসেবে পরিচিত নাপোলিকে ফুটবলের জাদুতে রাঙিয়ে দেন ম্যারাডোনা। ১৯৮৬-৮৭ ও ১৯৮৯-৯০ সালে নাপোলিকে লিগ শিরোপা এবং ১৯৮৮-৮৯ সালে উয়েফা কাপ জেতান এই কিংবদন্তি। ম্যারাডোনার এ অবদান এখনো শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন নেপলসের আধিবাসীরা। ভালোবেসে অনেকে তাঁকে ‘নেপলসের রাজা’ বলেও ডাকেন।