সাবিনাদের বন্ধু নয়, শিক্ষক ছিলেন বাটলার

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলারপ্রথম আলো ফাইল ছবি

ফাইনালের আগেই পিটার বাটলার বলেছেন সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালই সাবিনা-সানজিদাদের কোচ হিসেবে তাঁর শেষ ম্যাচ। বাটলারের ‘শেষ ম্যাচে’ নেপালকে হারিয়ে সাফের শিরোপা ধরে রেখেছে বাংলাদেশ নারী দল। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সাবেক এই ফুটবলার দলের সঙ্গে বাংলাদেশে ফিরেছেন।

তবে আজ ঢাকায় ফিরে ‘চলে যাওয়া’ নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি এই ইংলিশ কোচ। আজ সন্ধ্যায় বাফুফে ভবনে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমি বাফুফের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ঠিকই; কিন্তু কখনোই নারী দলের কোচ হিসেবে চুক্তিবদ্ধ ছিলাম না। বাফুফে আমাকে মেয়েদের জাতীয় দল নিয়ে কাজ করতে বলেছিল, আমি করেছি। আমি সফল হয়েছি। এখন আমি বাফুফের নতুন সভাপতির সঙ্গে বসব। সাবেক সভাপতি কাজী সালাহউদ্দীন ও নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরনের সঙ্গে বসব। সবকিছু নিয়ে আলোচনা করব।’

কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশের অনুশীলনে পিটার বাটলার
বাফুফে

গত ডিসেম্বরে পিটার বাটলার বাংলাদেশে আসেন বাফুফের এলিট একাডেমির দায়িত্ব নিতে। কয়েক মাস এলিট একাডেমির তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে কাজ করার পর বাফুফে গত মে মাসে তাঁকে বাংলাদেশ নারী দলের দায়িত্ব দেয়। তাঁর অধীন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের আগে বাংলাদেশ নারী দল চীনা তাইপে ও ভুটানের বিপক্ষে চারটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলেছে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম গ্রুপ ম্যাচের পর তাঁর বিরুদ্ধে দলের মধ্য থেকেই অভিযোগ ওঠে যে তিনি সিনিয়র খেলোয়াড়দের পছন্দ করেন না। সাবিনা, সানজিদা, মাসুরা, মারিয়াদের মতো সিনিয়র খেলোয়াড়দেরও খেলাতে চান না। এ নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়েছে অনেক। বাটলার নিজেও খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে টিকটক করা আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশি সময় কাটানোর অভিযোগ তোলেন। তবে সব বিতর্ক পেছনে ফেলে বাটলারের অধীন দুর্দান্ত ফুটবল খেলেই টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফের শ্রেষ্ঠত্ব ঘরে বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন
আমি তাদের বন্ধু হতে চাইনি। বন্ধু হলে আমার পক্ষে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হতো। আমার সঙ্গে তাদের (খেলোয়াড়দের) ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক ছিল।
পিটার বাটলার, কোচ, বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল

বাটলার আজ বলেন, তিনি দলের কোচ ছিলেন, খেলোয়াড়দের বন্ধু ছিলেন না, ‘আমি তাদের শেখানোর দায়িত্বে ছিলাম। আমার সব সিদ্ধান্ত যে তারা পছন্দ করেছে, ব্যাপারটা এমন নয়। আমি তাদের বন্ধু হতে চাইনি। বন্ধু হলে আমার পক্ষে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হতো। আমার সঙ্গে তাদের (খেলোয়াড়দের) ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক ছিল। শুধু শিক্ষক নয়, আমি একাধারে তাদের ট্রেইনার ছিলাম, এমনকি তাদের মনোজগৎ নিয়েও কাজ করেছি। আমি তাদের নির্দেশ দিয়েছি, তবে সবাইকে সম্মান করেছি। আমিও আশা করেছি, মেয়েদের কাছ থেকে আমি সেই শ্রদ্ধাটাই পাব।’

ঢাকায় বিমানবন্দরে সাবিনাদের সঙ্গে কোচ পিটার বাটলার
সাজিদ হোসেন

বাটলার খেলোয়াড়–জীবনে ওয়েস্টহাম ইউনাইটেড, হাডার্সফিল্ড টাউন ও ওয়েস্ট ব্রমউইচসহ আরও কয়েকটি ক্লাবে ৪৫০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। তাঁর কোচিং–জীবনও সমৃদ্ধ। তিনি দীর্ঘ দিন লাইবেরিয়া ও বতসোয়ানায় জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন।

আরও পড়ুন