সপ্তাহে ১০ কোটি টাকা বেতনের প্রস্তাব সৌদির, রাশফোর্ডের প্রত্যাখ্যান
সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলারদের একজন হওয়ার সুযোগটা হেলায় হারালেন মার্কাস রাশফোর্ড। ম্যানচেস্টার ইউনাইডের এই ইংলিশ ফরোয়ার্ডকে বছরে ৩ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ড বেতনের প্রস্তাব দিয়েছিল সৌদি প্রো লিগ, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৫৩০ কোটি টাকারও বেশি। সেই হিসেবে সাপ্তাহিক বেতন হওয়ার কথা ৬ লাখ ৭৫ হাজার পাউন্ড, টাকায় রূপান্তর করলে দাঁড়ায় ১০ কোটি ২২ লাখ!
এমন লোভনীয় প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছেন রাশফোর্ড। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টাইমস’ এই তথ্য জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশফোর্ড সৌদি আরবের তিনটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। রাজি হলে তিনি সৌদি প্রো লিগের শীর্ষ ১০ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলারের তালিকায় ঢুকে যেতেন।
সৌদি প্রো লিগের কোনো ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি করলে আরেকটি দিক থেকেও লাভবান হতেন ২৭ বছর বয়সী ফুটবলার। কারণ, মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে তাঁকে আয়কর দিতে হতো না। বর্তমানে নিজ দেশ ইংল্যান্ডে তাঁকে ৪৫ শতাংশ আয়কর দিতে হচ্ছে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত চুক্তি আছে রাশফোর্ডের। কিন্তু পারফরম্যান্স আশাব্যঞ্জক না হওয়ায় চলমান শীতকালীন দলবদলে তাঁকে বিক্রি করে দিতে চায় ক্লাবটি। রাশফোর্ডও জানিয়েছেন, তিনি নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চান। তবে ইউনাইটেড অন্য কোনো ক্লাবের কাছ থেকে পছন্দনীয় প্রস্তাব পায়নি।
আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য সান’–এর দাবি, ইউনাইটেডই আগ বাড়িয়ে প্রস্তাব দিতে পারে। ক্লাবটি নাকি নাপোলির ভিক্টর ওসিমেনের সঙ্গে রাশফোর্ডকে অদলবদল করতে আগ্রহী।
‘দ্য টাইমস’ জানিয়েছে, রাশফোর্ডও চান ইউরোপে থেকে যেতে। তাঁর ইচ্ছা ইংল্যান্ড জাতীয় দলে ফেরা। কিন্তু ইউরোপীয় ফুটবলের পাট চুকিয়ে এখনই সৌদিতে গেলে তা জাতীয় দলে ফেরার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, সেই ভাবনা থেকেই লোভনীয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
সৌদি প্রো লিগের জৌলুশ বাড়াতে গত দুই বছরে দেশটি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, নেইমার, করিম বেনজেমা, সাদিও মানেদের মতো তারকাদের বিভিন্ন ক্লাবে ভেড়ালেও খেলার মানে তা যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ধারেকাছে নেই, সেটা সবার জানা।
গত বুধবার বছরের প্রথম দিনেই ইংল্যান্ড জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন টমাস টুখেল। আগামী মার্চে আলবেনিয়া ও লাটভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টুখেলের নতুন অধ্যায় শুরু হবে। এর আগে তাঁর চাওয়া ক্লাব ফুটবলে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করে দল গোছানো।
ইংল্যান্ডের জার্সিতে এখন পর্যন্ত ৬০ ম্যাচে ১৭ গোল করেছেন রাশফোর্ড। গত বছরের মার্চে ব্রাজিলের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে হারের পর তিনি দল থেকে বাদ পড়েন। তবে টুখেল সম্প্রতি জানিয়েছেন, সবার জন্যই জাতীয় দলের দরজা খোলা। ক্লাব ফুটবলে ভালো খেলে কেউ তাঁর মন ভরাতে পারলে অবশ্যই স্কোয়াডে রাখা হবে।
সম্প্রতি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের একাদশেও জায়গা হারিয়েছেন রাশফোর্ড। তাঁকে বসিয়ে রাখার কারণ হিসেবে কোচ রুবেন আমোরিম জানান, অনুশীলনে ও ম্যাচে তিনি রাশফোর্ডের মধ্যে নিবেদনে ঘাটতি দেখেছেন। যদিও ৪ গোল করে রাশফোর্ডই প্রিমিয়ার লিগের এই মৌসুমে ইউনাইটেডের যৌথ শীর্ষ গোলদাতা।
শেষ পর্যন্ত রাশফোর্ডকে যদি ইউনাইটেড বিক্রি করতে না পারে, তাহলে ধারে পাঠাতে পারে। সে ক্ষেত্রে দেখা হবে, ওই ক্লাব রাশফোর্ডের বেতনের সিংহভাগ দিতে পারে কি না। তবে সবকিছুই করতে হবে লাভ ও টেকসই নীতি মেনে।