৬ লাল কার্ড, ৮ হলুদ কার্ড ও হাতাহাতির আর্জেন্টাইন ‘সুপারক্ল্যাসিকো’

বোকা জুনিয়র্স–রিভার প্লেট ম্যাচে এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়ছবি: টুইটার

নব্বই মিনিটজুড়ে যা খেলা হলো, এককথায় ম্যাড়মেড়ে। কোনো দলই এর মধ্যে গোল করতে পারেনি, নেই দর্শককে আনন্দ দেওয়া আক্রমণ ও প্রতিআক্রমণে জমজমাট প্রতিদ্বন্দ্বিতাও। কিন্তু যে ম্যাচে মুখোমুখি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী, সে ম্যাচ এতটা নীরবে শেষ হয় কী করে!

আর্জেন্টাইন ফুটবলের শীর্ষ স্তর এলপিএফে কাল বোকা জুনিয়র্স-রিভার প্লেট ‘সুপারক্ল্যাসিকো’ও নীরবে শেষ হয়নি। প্রথমার্ধে দুই দলের খেলোয়াড়েরাই একের পর এক ফাউলে জড়িয়েছেন। যার জেরে শেষ দিকে একটি পেনাল্টিকে কেন্দ্র করে শুরু হয় হাতাহাতি। যে হাতাহাতি সামাল দিতে দাঙ্গা পুলিশকে পর্যন্ত মাঠে ঢুকতে হয়। দায়ী হিসেবে তাৎক্ষণিকভাবে দুই দলের ৩ জন করে মোট ৬ ফুটবলারকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। ডাগআউট ছেড়ে যেতে হয় বোকা জুনিয়র্স কোচকেও। এ ছাড়া ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখানো হয় ৮টি।

আরও পড়ুন

এস্তাদিও দ্য মনুমেন্তালে হাতাহাতিময় ম্যাচটি হয়েছে রোববার আর্জেন্টিনার স্থানীয় সময় রাতে। গোলশূন্য স্কোরলাইনে শেষ হতে চলা ম্যাচে ৯২ মিনিটে পেনাল্টি পায় রিভার। স্পটকিকে বোকার গোলরক্ষক সের্হিও রোমেরোকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন মিগুয়েল বোরজা।

কলম্বিয়ান স্ট্রাইকার যখন গোলের উদ্‌যাপনে মাঠের এক পাশের দিকে ছুট দেন, তখন রোমেরোর সঙ্গে রিভার প্লেট খেলোয়াড়দের কয়েকজনের তর্কাতর্কি শুরু হয়। ধাক্কাধাক্কি শুরু হতে না হতে সেখানে জড়ো হতে থাকেন দুই দলের অন্য খেলোয়াড়েরাও। মাঠের ভেতরে চলা হট্টগোল আর মারামারি কেউ থামাবেন কি, উল্টো দুই দলের কোচিং স্টাফের সদস্যরা যাঁর যাঁর পক্ষ হয়ে মাঠের ভেতরে ঢুকে হট্টগোলে যোগ দেন। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ৮৩ হাজার আসনবিশিষ্ট গ্যালারি। পারলে তাঁরাও নেমে পড়েন!

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে একপর্যায়ে দাঙ্গা পুলিশকে ডাকা হয়। মাঠের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বরত ও দাঙ্গা পুলিশের হস্তক্ষেপে যখন মারামারি থামে, ততক্ষণে প্রায় ১০ মিনিট পেরিয়ে গেছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

আবার খেলা শুরুর মুহূর্তে দুই দলের খেলোয়াড়দের ডেকে এক এক করে লাল কার্ড দেখানো শুরু করেন রেফারি। মাঠ ছেড়ে যেতে হয় রিভারের অগাস্টিন পালাভেসিনো, এজেকুয়েল সেনচুরিয়ন ও এলিয়াস গোমেজ এবং বোকা জুনিয়র্সের এজেকুয়েল ফার্নান্দেজ, মিগুলেয় মেরেনতিয়েল ও নিকোলাস ভ্যালেন্তিনিকে। বোকা কোচ জর্জ আলমিরনকেও মাঠের বাইরে পাঠান রেফারি।

হাতাহাতি শুরুর ঘটনায় জড়িত থাকলেও রোমেরো অবশ্য শাস্তি পাননি। আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সাবেক এই গোলরক্ষক ম্যাচ শেষে দায় দেন রিভারের পালাভেসিনোকে, ‘ও আমাদের মুখের সামনে এসে গোল নিয়ে চিৎকার করছিল। আমি ভালোভাবেই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছি। ওর কাছে গিয়ে কোমর ধরে বলছিলাম, আমার প্রতিক্রিয়ার কারণ কী। আমার সতীর্থরা ভেবেছিল মারামারি করতে গেছি। ওরা সবাই ছুটে আসল।’

মাঝখানে বেশ কিছুটা সময় বন্ধ থাকা ম্যাচটিতে সব মিলিয়ে যোগ করা সময় ছিল ১৯ মিনিট। রিভার প্লেট ম্যাচ জেতে ১-০ ব্যবধানে। এই মুহূর্তে আর্জেন্টাইন প্রিমেরা ডিভিশনে শীর্ষে অবস্থান করছে রিভার, বোকার অবস্থান ১৩ নম্বরে।

আরও পড়ুন