সংবাদকর্মীকে ‘স্টুপিড’ বললেন ডি ব্রুইনা, সংবাদকর্মী তাঁকে বললেন ‘নষ্ট ছোঁড়া’

বেলজিয়াম তারকা কেভিন ডি ব্রুইনাএএফপি

ডুসেলডর্ফে শেষ ষোলোর ম্যাচ কিছুক্ষণ আগে শেষ হয়েছে। বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। শুধু তা-ই নয়, এই হারে বেলজিয়ামের কথিত ‘সোনালি প্রজন্মের’ও বিদায় হয়ে গেল।

কেভিন ডি ব্রুইনার মেজাজটা তাই স্বাভাবিকভাবেই একটু চড়াই থাকার কথা। ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ক্লাব ফুটবলে বেলজিয়াম মিডফিল্ডারের তুলনা চলে না। কিন্তু দেশের হয়ে কিছুই জিততে না পারার হতাশা তো আর লুকানো যায় না। ঠিক সে মুহূর্তেই এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন শোনার মতো অবস্থাও থাকে না কারও কারও। ডি ব্রুইনাও প্রশ্নটি নিতে পারেননি। রাগ লুকাতে না পেরে তাই ঝেড়েছেন সেই সংবাদকর্মীকে।

মিক্সড জোনে ৩৩ বছর বয়সী ডি ব্রুইনার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্ম কেন শিরোপা জিততে পারে না? ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘মিরর’ জানিয়েছে, সিটি তারকা প্রশ্নটি ভালোভাবে নিতে পারেননি।

ডি ব্রুইনা পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘তাহলে আপনি বলতে চাইছেন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, স্পেন ও জার্মানির দল সোনালি প্রজন্ম নয়?’ এরপর সংবাদকর্মীকে ‘ঠিক আছে, ধন্যবাদ’ বলে হাঁটা ধরেন ডি ব্রুইনা। ঘটনাটা এ পর্যন্ত হলে কোনো কথাই হতো না, কিন্তু ডি ব্রুইনা চলে যাওয়ার পথে সেই সংবাদকর্মীকে ‘স্টুপিড’ বলায় ব্যাপারটি আর স্বাভাবিক থাকেনি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সেই সংবাদকর্মী ইতালিয়ান তানক্রেদি পালমেরি, ইউরোপিয়ান ফুটবলে যিনি বেশ পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ নিজের হ্যান্ডলে সেই ঘটনায় ডি ব্রুইনার সঙ্গে কী কথা হয়েছে, তার বর্ণনা করেছেন পালমেরি। যেটা সংবাদমাধ্যমে যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে, তার চেয়ে একটু আলাদা, ‘আমি: সোনালি প্রজন্ম আবারও ফাইনালে উঠতে না পারায় কি খারাপ লাগছে? কেভিন ডি ব্রইনা: সোনালি প্রজন্ম কী? আমি: আপনারা। কেভিন ডি ব্রুইনা: তাহলে আপনি বলতে চাইছেন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, স্পেন ও জার্মানির সোনালি প্রজন্ম নেই?...স্টুপিড।’

এক্সে আরেক পোস্টে ডি ব্রুইনার তির্যক কথার জবাবও দিয়েছেন পালমেরি, ‘আহ্‌, ডি ব্রুইনা আমাকে স্টুপিড বলেছে। কেভিন, তোমার জন্য ছোট্ট এক টুকরো বার্তা—ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানি ও স্পেনের যে সোনালি প্রজন্মের কথা তুমি বলেছ, সবাই ফাইনাল খেলেছে। আর দশজন সাধারণ ফুটবলারের মতোই, যে নিজে কত ভালো, শুধু সে ব্যাপারে প্রশ্ন শুনতে চায়। নষ্ট ছোঁড়া।’

রোমেলু লুকাকু, ডি ব্রুইনা, ইয়ান ভার্তোন, থিবো কোর্তোয়া, ইয়ানিক কারাসকোদের নিয়ে বেলজিয়াম দলকে অনেক আগে থেকেই সোনালি প্রজন্ম বলা হয়। সেই পথে এডেন হ্যাজার্ড, টবি অল্ডারওয়াইল্ড, দ্রিস মের্তেনসদের পেছনে ফেলে এসেছে বেলজিয়াম। ২০১৪-১৫ সাল থেকেই বেলজিয়ামের এই প্রতিভাধর প্রজন্ম নিয়ে স্বপ্ন দেখেছেন অনেকেই। কিন্তু মাঠের ফল হতাশার। ২০১৬ ও ২০২০ ইউরোয় বিদায় নিয়েছে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। এবার তো বিদায় নিতে হলো আরও আগে। শেষ ষেলো থেকে।

এবার ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালেও উঠতে পারেনি বেলজিয়াম
এএফপি

২০১৮ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেললেও ২০২২ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় বেলজিয়াম। ডি ব্রুইনা সর্বশেষ বিশ্বকাপের আগে বেলজিয়ামের সম্ভাবনা নিয়ে ‘গার্ডিয়ান’কে বলেছিলেন, ‘কোনো সুযোগ নেই। আমাদের বয়স বেশি।’

বেলজিয়ামের জার্সিতে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েও সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন ডি ব্রুইনা। এ বিষয়ে ‘উত্তর দেওয়াটা একটু আগেভাগে হয়ে যায়’ বলে মন্তব্য করেন সিটি তারকা, ‘আগে (ফ্রান্সের বিপক্ষে) হারটি হজম করি। মৌসুমটা অনেক লম্বা। শরীরকে বিশ্রাম দিতে হবে। গ্রীষ্মের পর সিদ্ধান্ত নেব।’