এখন আর কোনো প্রশ্ন বা সন্দেহ নয়, শুধুই উপভোগ করুন।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালের বিদায়ের পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর শেষ দেখে ফেলেছিলেন অনেকে। তাঁর অবসর ঘোষণা না করা নিয়েও হাসাহাসি কম হয়নি। কিন্তু মানুষটা যে সহজে হাল ছাড়ার পাত্র নন! হারার আগে রাজি নন হারতেও। কঠিন সময়টা এবার ঠিকই জয় করে দেখালেন রোনালদো।
পর্তুগালের রাজা দেশের জার্সিতেই ফিরেছেন বীরের মতো। টানা দুই ম্যাচে জোড়া গোল করে রোনালদো বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি এখনো ফুরিয়ে যাননি। আগের ম্যাচে লিখটেনস্টেইনের বিপক্ষে করেছিলেন জোড়া গোল, এবার করলেন লুক্সেমবার্গের বিপক্ষে। আর রোনালদোর দাপট দেখানোর রাতে পর্তুগালও পেয়েছে ৬-০ গোলের বিশাল এক জয়।
লুক্সেমবার্গ স্টেডিয়ামে ইউরো বাছাইপর্বের ম্যাচে শুরু থেকেই উজ্জ্বীবিত পর্তুগাল। প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণে চোখ রাখে তারা। যার ফল পেতে সময় লাগে মাত্র ৯ মিনিট। ডি-বক্সের ভেতর নুনু মেন্দেসের কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন রোনালদো। এটি ছিল আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে রোনালদোর ১২১তম গোল। এই গোলের পর দুটি ট্রেডমার্ক উদ্যাপনকে একইসঙ্গে মিলিয়ে দিয়েও দর্শকদের আনন্দ দেন পর্তুগিজ মহাতারকা।
শুরুতে গোল পেয়ে পর্তুগাল যেন আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। লুক্সেমবার্গকে খুব একটা সুযোগ না দিয়ে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে তারা। ১৫ মিনিটে জোয়াও ফেলিক্সের দুর্দান্ত এক হেডে ব্যবধান ২-০ করে পর্তুগাল। তবে এই গোলে বের্নার্দো সিলভার ক্রসটাও ছিল দেখার মতোই।
৩ মিনিট পর অবশ্য স্কোরশিটে নাম লেখান সিলভা নিজেই। এবার জোয়াও পালিনহার ক্রসে নিজেই দূরের পোস্টে হেডে বল জালে জড়ান সিলভা। ১৮ মিনিটে ৩ গোল হজম করে লুক্সেমবার্গ তখন রীতিমতো কোনঠাসা। স্বাগতিকরা কোনো ধরনের প্রতিরোধ গড়ার আগে ৩১ মিনিটে ফের দেখা মিলে রোনালদো জাদুর।
ব্রুনো ফার্নান্দেজের বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কাছের পোস্ট দিয়ে গোল করেন রোনালদো। পর্তুগালের জার্সিতে নিজের ১২২তম গোলে দলকে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন ‘সিআর সেভেন’। এটি ছিল ইউরো বাছাইয়ে রোনালদোর ৩৭তম গোল। এ সময় এক রোনালদো ভক্তও মাঠে নেমে পড়েন। উদ্যাপনের রাতে সেই ভক্তকেও চোখ টিপে সাড়া দেন রোনালদো। বিরতির আগ পর্যন্ত পর্তুগালের দাপট অব্যাহত থাকলেও আর কোনো গোলের দেখা পায়নি ২০১৬ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নরা।
বিরতির পরও পর্তুগালের নিয়ন্ত্রণেই ছিল ম্যাচ। টানা ৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে খেলতে নামা লুক্সেমবার্গ এ সময় রীতিমতো হাঁসফাঁস করছিল। চার গোলে এগিয়ে থাকা পর্তুগালও অবশ্য এ সময় আক্রমণের ধারা থেকে কিছুটা সরে আসে। এর মাঝে ৬৫ মিনিটে রোনালদোকে নামিয়ে নেন কোচ রবার্তো মার্তিনেজ। তাঁর বদলে মাঠে নামান গনসালো রামোসকে।
একাধিক পরিবর্তন আনলেও আক্রমণের ধারা ঠিকই ধরে রেখেছিল পর্তুগাল। যা ৭৭ মিনিটে তাদের এনে দেয় ম্যাচের ৫ম গোলও। রাফায়েল লেয়াওয়ের সহায়তায় গোল করেন অক্তাবিও।
তবে বদলে যাওয়া এই পর্তুগাল দলটি যেন ৫ গোলেও সন্তুষ্ট হওয়ার নয়। আর তাই ৮৮ মিনিটে ৬ষ্ঠবারের মতো বল জালে জড়ান আগের গোলের সহায়তাকারী লেয়াও নিজেই। এরপর অবশ্য আর কোনো গোল করেনি পর্তুগাল। ম্যাচ শেষ হয় পর্তুৃগিজদের ৬-০ গোলের দাপুটে জয়ে।