‘এমবাপ্পে চুক্তি নবায়ন করলে ভালো, না করলেও পিএসজির ক্ষতি নেই’
এখন তো ১২ ঘণ্টার কম সময় আছে। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত কিলিয়ান এমবাপ্পের দলবদল বা পিএসজির সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে নতুন কোনো খবর আসেনি। সেটা এ মুহূর্তে পাওয়ার কথাও নয়। প্যারিসে মাত্রই সকাল হয়েছে। অফিসের সময় এখনো শুরু হয়নি। সেটা শুরু হলে হয়তো কোনো খবর আসবে।
এরও আগে, দলবদলের দরজা বন্ধ হওয়ার যখন ২৪ ঘণ্টা বাকি, সেই সময় এমবাপ্পের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল পিএসজির সভাপতি নাসের আল খেলাইফিকে। নতুন কোনো খবর দিতে পারেননি তিনিও। শুধু বলতে পেরেছেন, পিএসজি এমবাপ্পের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন নিয়ে কাজ করছে। সফল হলে ভালো, না হলেও ক্ষতি নেই!
চুক্তি নবায়ন নিয়ে পিএসজি কাজ করছে আরও আগে থেকেই। ক্লাবের সঙ্গে প্রাথমিক ঝামেলা মিটমাট করে এমবাপ্পে যখন এ মৌসুম থেকে যেতে চেয়েছেন, তখন থেকে। কিন্তু প্যারিসের সময় আজ সকাল পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি দুই পক্ষ।
গতকাল আরএমসি স্পোর্তকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে কথা বলেছেন খেলাইফি। পিএসজির সভাপতি সেখানে বলেছেন, ‘আমাদের হাতে আরও ২৪ ঘণ্টা সময় আছে। কিলিয়ান এখনো পিএসজির খেলোয়াড়। তার সঙ্গে আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। সে একজন খেলোয়াড়, মানুষ আর পেশাদার হিসেবে অসাধারণ।’
চুক্তি নবায়নের বিষয়ে খেলাইফি এরপর যোগ করেন, ‘তার পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি। আমরা এটা নিয়ে কাজ করব। কিছু একটা করার চেষ্টা করব। যদি আমরা সেটা করতে পারি, তাহলে সেটা কেন করব না? যদি শেষ পর্যন্ত সেটা (এমবাপ্পের চুক্তি নবায়ন) করতে না পারি, তাহলেও আমাদের ক্ষতি নেই। আমরা এর জন্য তৈরি। আমি চুক্তি নবায়ন নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না।’
গত মৌসুম শেষেই এমবাপ্পে পিএসজিকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন, ২০২৩-২৪ মৌসুমের পর আর চুক্তি নবায়ন করবেন না। তাঁর সম্ভাব৵ গন্তব্য ধরে নেওয়া হয় রিয়াল মাদ্রিদ। এমবাপ্পে চুক্তি নবায়ন না করার কথা জানিয়ে দেওয়ার পর তাঁকে বিক্রি করতে উঠেপড়ে লাগে পিএসজি। কিন্তু এমবাপ্পে চুক্তির মেয়াদ শেষ না করে ক্লাব ছাড়বেন না বলেও তখন জানিয়ে দেন।
এমবাপ্পেকে পিএসজি এবারের দলবদলেই বিক্রি করে দিতে চাওয়ার কারণ ছিল একটাই—মৌসুম শেষে যে তিনি মুক্ত খেলোয়াড় হয়ে যাবেন। তখন তাঁর দলবদল থেকে কোনো ট্রান্সফার ফি পাবে না পিএসজি। আর এমবাপ্পে চুক্তির মেয়াদ শেষ করে যেতে চান আনুগত্য বোনাসের পুরোটা পেতে।
এটা নিয়ে ক্লাবের সঙ্গে ঝামেলাই বাধে এমবাপ্পের। এমনকি এমবাপ্পেকে প্রাক্–মৌসুম প্রস্তুতির এশিয়া সফরের দল থেকেও বাদ দেয় পিএসজি। এর মধ্যেই এমবাপ্পের জন্য সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল ৩০ কোটি ইউরোর প্রস্তাব দেয় পিএসজিকে। কিন্তু এমবাপ্পে আল হিলালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতেই রাজি হননি।
পিএসজি কর্তৃপক্ষ রেগেমেগে এমবাপ্পেকে পাঠিয়ে দেয় বম্ব স্কোয়াডে। সাধারণত অতি বেতনের খেলোয়াড়, যাঁরা প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেন না কিংবা ক্লাব আর যাঁদের দরকারি মনে করে না, তাঁদের যখন মূল দল থেকে আলাদা করে ফেলা হয়, তাঁদের ‘বম্ব স্কোয়াড’-এর সদস্য বলা হয়।
কিন্তু এমবাপ্পেকে বম্ব স্কোয়াডে বেশি দিন রাখতে পারেনি পিএসজি। লিওনেল মেসি আগেই পিএসজি ছেড়ে ইন্টার মায়ামিতে নাম লিখিয়েছেন। এরপর এমবাপ্পেকে বম্ব স্কোয়াডে পাঠানোর পর নেইমারও পিএসজি ছাড়ার ঘোষণা দেন। পরে তিনি আল হিলালে যোগ দেন।
আল হিলালে যোগ দেওয়ার আগে নেইমারকে লিগের প্রথম ম্যাচের স্কোয়াডের বাইরে রাখে পিএসজি। মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেবিহীন পিএসজি লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ঘরের মাঠে লোরিয়াঁর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে।
দ্বিতীয় ম্যাচেই এমবাপ্পেকে দলে ফেরায় পিএসজি। তুলুসের বিপক্ষে সেই ম্যাচে এমবাপ্পে গোলও পান। কিন্তু দল আবারও ড্র (১-১) নিয়ে মাঠ ছাড়ে। এরপর লাঁসের বিপক্ষে এমবাপ্পের জোড়া গোলেই ৩-১ ব্যবধানে জিতেছে পিএসজি।