২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

‘রূপকথার চেয়েও বেশি কিছু’

আফ্রিকান কাপ অব নেশনসের ট্রফিএএফপি

শুধু শিরোপানির্ধারণী ম্যাচের ৯০ মিনিটেই ছড়িয়ে আছে অনেক গল্প।

নিজেদের মাঠে ৫৭ হাজারের বেশি দর্শকের সামনে প্রথমার্ধেই গোল হজম, ম্যাচের ঘড়ির কাঁটা ঘণ্টা পার হওয়ার পর সমতা আনা আর শেষ দিকে ক্যানসার-জয়ী একজনের গোলে জয় নিশ্চিত করা—নাইজেরিয়ার বিপক্ষে এমনই রোমাঞ্চকর ফাইনাল খেলে আফ্রিকার সেরা হয়েছে আইভরিকোস্ট। এর আগে টুর্নামেন্টজুড়ে আইভরিয়ান ফুটবল দলটি যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে, কোচ এমার্স ফায়ের মনে হচ্ছে ‘রূপকথার চেয়েও বেশি কিছু’ ঘটে গেছে। গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ার দ্বারপ্রান্তে থাকা দল যেভাবে শিরোপা জিতল, নিজেদের তাঁর অলৌকিকভাবে বেঁচে ফেরা মনে হচ্ছে।

ফায়ে আইভরিকোস্টের স্থায়ী কোচ নন। আফ্রিকান কাপ অব নেশনসের (আফকন) মাঝপথে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। যখন দায়িত্ব পেয়েছিলেন, তখন শিরোপা জেতা দূরে থাক, টুর্নামেন্টে আইভরিকোস্টের আর কোনো ম্যাচই নেই বলে ধরে নিয়েছিলেন প্রায় সবাই। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে গিনি বিসাউকে ২-০ ব্যবধানে হারালেও পরের দুই ম্যাচে নাইজেরিয়ার কাছে ১-০ আর ইকুয়াটোরিয়াল গিনির কাছে ৪-০ তে হেরে যায় আইভরিকোস্ট।

নাইজেরিয়াকে হারিয়ে তৃতীয় আফকন ট্রফি জিতেছে আইভরিকোস্ট
রয়টার্স

এর মধ্যে ইকুয়াটোরিয়াল গিনির কাছে হারটি ছিল নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে ঘরের মাঠে সবচেয়ে বড় হার। সবচেয়ে বড় কথা, গ্রুপ পর্বে টানা দুই হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় আইভরিকোস্টের। শিরোপার স্বপ্ন নিয়ে আফকন শুরুর পর এমন দুরবস্থায় ছাঁটাই করা হয় ফরাসি কোচ জঁ লুই গাসেকে। সাবেক ফুটবলার ফায়েকে দেওয়া হয় অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব।

আরও পড়ুন

ফায়েকে কোচ ঘোষণার সময় আইভরিকোস্ট তাকিয়েছিল মরক্কো-জাম্বিয়া ম্যাচের দিকে। শেষ ষোলোয় প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দুই দলের সঙ্গে তৃতীয় হওয়া সেরা চার দলের জন্য জায়গা বরাদ্দ ছিল। ‘এফ’ গ্রুপের খেলায় মরক্কো জাম্বিয়াকে হারিয়ে দিলে গ্রুপে তৃতীয় হওয়া ছয় দলের মধ্যে চতুর্থ হয় আইভরিকোস্ট। ফায়ের দল পায় নতুন করে শুরুর সুযোগ।

আইভরিকোস্টের দর্শকেরা হাজির হয়েছিলেন রঙিন সাজে
এএফপি

আইভরিকোস্ট সুযোগটা কাজে লাগায় শেষ ষোলোয় সেনেগালকে টাইব্রেকারে হারিয়ে, কোয়ার্টার ফাইনালে মালিকে ২-১ গোলে এবং সেমিফাইনালে ডিআর কঙ্গোকে ১-০ গোলে হারিয়ে। এর মধ্যে ছিল আগে গোল হজম করে ঘুরে দাঁড়ানো কিংবা শেষ দিকে গোল করে হার এড়িয়ে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও। শেষ পর্যন্ত রোববার রাতের ফাইনালেও দেখা গেল একই চিত্র। প্রথমার্ধে গোল হজমের পর ফ্রাঙ্ক কিসি ও সেবাস্তিয়ান হলারের গোলে ২-১ ব্যবধানের অবিস্মরণীয় জয়।

আরও পড়ুন

৪০তম জন্মদিনে কোচের দায়িত্ব নেওয়া ফায়ে গত কয়েক দিনের অভিযাত্রাকে দেখছেন অভাবনীয় হিসেবে, ‘এটা রূপকথার চেয়েও বেশি কিছু। আমি সবকিছু অল্প কথায় বোঝাতে হিমশিম খাচ্ছি। যখন পুরো গত কয়েক দিনের পুরো ব্যাপারটি ভাবি, মনে হচ্ছে অলৌকিকভাবে বেঁচেছি। আমরা।’

ফায়ে নিজেও আফকনের ফাইনাল খেলেছেন। ২০০৬ সালের সেই ফাইনালে অবশ্য মিসরের কাছে হেরেছিল আইভরিকোস্ট, ‘আমি খেলোয়াড় হিসেবে আফকন জেতার স্বপ্ন দেখেছিলাম। পারিনি। এখন কোচ হিসেবে সেই সুযোগটা এল। যদি খুব অদ্ভুত পরিস্থিতিতে। আমি যখন দায়িত্ব নিই, গ্রুপ পর্ব উতরেছি কিনা জানতাম না। অদ্ভুত জন্মদিনে একটা দ্বিতীয় সুযোগ পেলাম, যেটা দুহাতে লুফে নিয়েছি।’