ম্যাচ শুরুর আগেই অনন্য এক নজির স্থাপন করেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি। রিয়ালের একাদশে চার ফরাসি—করিম বেনজেমা, অরেলিয়াঁ চুয়ামেনি, এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা ও ফারলাঁ মেন্দি। লা লিগায় এর আগে রিয়ালের প্রথম একাদশে কখনোই একসঙ্গে চার ফরাসি খেলোয়াড়কে দেখা যায়নি।
লিগ শুরুর ম্যাচেই যদি এমন হয়, তাহলে মৌসুমের বাকি সময় কী হবে, তা অনেকে আন্দাজ করে নিতে পারেন। তবে রিয়ালকে কাল রাতে কোনো ফরাসি টেনে তুলতে পারেননি। লুকাস ভাসকেজ ও ডেভিড আলাবার গোলে আলমেরিয়াকে ২–১ ব্যবধানে হারিয়েছে রিয়াল।
সাত মৌসুম স্পেনের দ্বিতীয় বিভাগে কাটানোর পর এবার লা লিগায় উঠে এসেছে আলমেরিয়া। রিয়ালের বিপক্ষে দলটি বড়জোর লড়বে কিন্তু জিততে পারবে না—বেশির ভাগ মানুষ হয়তো এটাই ভেবেছিল। আশ্চর্য! নাচো, আন্তোনিও রুডিগার, মেন্দিরা ধাতস্থ হয়ে ওঠার আগেই আলমেরিয়ার উইঙ্গার লার্গি রামাজানি কি না গোল করে বসলেন!
পাওয়ার হর্স স্টেডিয়ামে ম্যাচের তখন ৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ড। রিয়ালের রক্ষণে নাচো ও রুডিগাররা রামাজানিকে মার্কিংয়ে রাখতে একটু ঢিলেমি করে ফেলেন। রক্ষণের ওপর দিয়ে আসা বল প্রথম স্পর্শে জায়গামতো নিয়ে গোল করেন এই বেলজিয়ান। ম্যাচের ৬ মিনিটের মধ্যে ১–০ গোলে পিছিয়ে রিয়াল! ২০০৭ সালে আতলেতিকো মাদ্রিদের হয়ে সের্হিও আগুয়েরোর সেই ৫৮ সেকেন্ডে গোলের পর লা লিগায় এটাই রিয়ালের দ্রুততম গোল হজমের নজির।
তবে গোল হজমের পর ধীরে ধীরে আড়মোড়া ভেঙেছে রিয়াল। প্রথমার্ধে চাপ বিস্তার করে খেলে গোল পায়নি আনচেলত্তির দল। লুকাস ভাসকেজের একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। বেনজেমা, ভিনিসিয়ুস ও ফেদে ভালভার্দেরা আলমেরিয়ার রক্ষণভাগকে তটস্থ রেখেও গোল পাননি। প্রথমার্ধেই ১২টি কর্নার পেয়েছে রিয়াল। ২০০৩–০৪ মৌসুমের পর লা লিগায় কোনো ম্যাচের প্রথমার্ধে এটাই সর্বোচ্চ কর্নার পাওয়ার নজির রিয়ালের। বোঝাই যাচ্ছে বেশ চাপেই ছিল আলমেরিয়ার রক্ষণ।
শেষ পর্যন্ত বিরতির পর ৬১ মিনিটে ভাসকেজই সমতায় ফেরান রিয়ালকে। আলমেরিয়ার রক্ষণে অরক্ষিত বল পেয়ে গোল করেন ভাসকেজ। লা লিগার নতুন মৌসুমে এটা রিয়ালের প্রথম গোল এবং সেটিও সমতাসূচক—সমর্থকদের মেনে নিতে কস্ট হওয়ার কথা। ৭৪ মিনিটে সমর্থকদের এই কস্ট দূর করেন ডেভিড আলাবা। মেন্দির বদলি হয়ে নামা এই অস্ট্রিয়ান ডিফেন্ডার ম্যাচে নিজের প্রথম স্পর্শেই গোল করেন, সেটিও ফ্রি–কিক থেকে!
লুকা মদরিচ ফাউলের শিকার হওয়ায় আলমেরিয়া বক্সের সামনে ফ্রি–কিক পায় রিয়াল। স্বাভাবিকভাবেই সবাই ভেবেছিলেন, কিক হয়তো বেনজেমা কিংবা টনি ক্রুস নেবেন। আলাবা বলের আশপাশে এসে ঘুর ঘুর করায় সন্দেহ বাড়ে অনেকের। শেষ পর্যন্ত শটটা আলাবাই নেন বাঁ পায়ে, বল বাঁক খেয়ে পোস্টে লেগে জালে! ২–১ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল।
এরপর আর আলমেরিয়া ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ আনচেলত্তি জানিয়েছেন, নিজের ইচ্ছাতেই ফ্রি–কিকটা নিয়েছেন আলাবা, ‘বেনজেমা অথবা টনির ফ্রি–কিকটা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ডেভিড শটটি নিতে চেয়েছে এবং দারুণভাবেই নিয়েছে। বেনজেমা কিংবা টনিকে বুঝিয়ে ফ্রি কিকটা নিজে নেওয়া—মোটেও সহজ বিষয় নয়।’