পিছিয়ে পড়েও শেখ জামালকে হারাল আবাহনী

পিছিয়ে পড়েও শেখ জামালকে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেডসংগৃহীত

ম্যাচের ৮ মিনিটেই চমক। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সেনেগালের ফরোয়ার্ড আবু তোরে আবাহনীর বক্সে ঢুকে আড়াআড়ি বল দিলেন মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে। ডি-বক্সের ঠিক মাথায় বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গড়ানো শটে তিনি পরাস্ত করলেন গোলকিপার শহীদুল আলমকে। কিন্তু আবাহনীর ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগেনি। প্রথমার্ধেই দুই গোল ফিরিয়ে দিয়ে কৌশল আর শক্তিতে প্রতিপক্ষের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেই গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে আবাহনী ম্যাচটা জিতেছে ২–১ গোলে।

আবাহনীর বিপক্ষে শুরুতেই ১–০ গোলে এগিয়ে গিয়ে শেখ জামাল কেমন যেন মিইয়ে গেল। অগ্রগামিতা ধরে রাখতে কিংবা আরও গোল বের করে নিতে যে খেলাটা খেলার দরকার ছিল, সেটিই অনুপস্থিত রইল তাদের খেলায়। হিগল লেইতে, আবু তোরে, আবদুল্লাহরা কিছুই করতে পারলেন না। উল্টো আবাহনীর ফরোয়ার্ডরা চেপে ধরেন শেখ জামালের রক্ষণকে। সেন্ট ভিনসেন্টের ফরোয়ার্ড কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট, ব্রাজিলের জোনাথন ফার্নান্দেজ আর ওয়াশিংটনরা একের পর এক আক্রমণে দ্রুতই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণটা নিজেদের হাতে তুলে নেন।

গোল হজমের পরের মুহূর্তেই আবাহনীর সুযোগ এসেছিল। ওয়াশিংটনের শট ঠেকিয়ে দেন শেখ জামালের গোলকিপার মাহফুজ হাসান। ১৫ মিনিটে অবশ্য শেখ জামাল একটা সুযোগ পেয়েছিল। আবাহনীর রক্ষণকে বোকা বানিয়ে বলটা দখলে নিয়েছিলেন আবু তোরে। রেফারির বাঁশি ছিল অফসাইডের। ২৫ মিনিটে পেছন থেকে পাওয়া থ্রু বল পেয়ে গিয়েছিলেন আবদুল্লাহ। তাঁর কাটব্যাক গিয়েছিল হিগল লেইতের কাছে। কিন্তু তিনি শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। ২৮ মিনিটে আবাহনীকে সমতায় ফেরান জোনাথন ফার্নান্দেজ। এই গোলে শেখ জামালের রক্ষণভাগের দায় যথেষ্টই।

মাঠের বাঁ প্রান্ত দিয়ে একটা বল নিয়ে শেখ জামালের বক্সে ঢুকে সোজা গোলে শট নিয়েছিলেন কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট। বলটা শেখ জামালের রক্ষণভাগের শাখজেদ ঠিকমতো ফেরাতে পারেননি। ফিরতি বলটা ধরে জোনাথন ফার্নান্দেজ বল জালে পাঠিয়ে দেন। খেলার ৩৩ মিনিটে আরও একটি সুযোগ মিলেছিল আবাহনীর। কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্টের সঙ্গে ওয়ান–টু খেলে বল নিয়ে শেখ জামালের বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন জোনাথন। কিন্তু তাঁর শট গোলকিপার মাহফুজ হাসান ফিরিয়ে দেন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় আবাহনী। গোলটা করেন কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট। ২–১ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় আবাহনী।

আবাহনীকে জয়সূচক গোল এনে দেওয়া কর্নেলিয়াস সটুয়ার্ট
সংগৃহীত

দ্বিতীয়ার্ধে শেখ জামাল ধানমন্ডির ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছিল আবাহনী। শেখ জামালকে মাঝমাঠেই আটকে রাখছিলেন মোহাম্মদ হৃদয়, আলমগীর মোল্লা, জোনাথন ফার্নান্দেজরা। তবে আবাহনী শেখ জামালের সীমানায় সুযোগ তৈরি করেছে একাধিক। ৭৭ মিনিটে জোনাথন ফার্নান্দেজের একটি প্রচেষ্টা গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন তাজউদ্দিন।

দিনের অন্য ম্যাচে ময়মনসিংহে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রকে ১–০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ এসসি। জয়সূচক গোলটি করেছেন কাজেম শাহ। শেখ জামালকে হারিয়ে ১২ ম্যাচে আবাহনীর পয়েন্ট ২২। তাদের অবস্থান লিগের পয়েন্ট তালিকায় তিনে। ১২ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শেখ জামাল আছে পঞ্চম স্থানে। শেখ রাসেলকে হারিয়ে পুলিশের পয়েন্ট ১২ ম্যাচে ১৭। তারা আছে চারে। শেখ রাসেল ১১ পয়েন্ট (১২ ম্যাচে) নিয়ে আছে সপ্তম স্থানে। ১১ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগের শীর্ষে আছে বসুন্ধরা কিংস। সমানসংখ্যক ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে মোহামেডান দুইয়ে।