মরিনিওকে বরখাস্ত করল রোমা
জোসে মরিনিও আর রোমার কোচ নন। মরিনিও এখন চাকরিহীন।
রোমার সাম্প্রতিক বাজে পারফরম্যান্সের কারণে আজ পর্তুগিজ এই কোচকে ছাটাই করা হয়েছে। ইতালিয়ান ক্লাবটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ক্লাবের স্বার্থে জরুরীভিত্তিতে এই পরিবর্তন দরকার ছিল।’
২০২২ সালে রোমাকে উয়েফা কনফারেন্স লিগ জিতিয়েছেন, গত বছর তুলেছিলেন ইউরোপা লিগের ফাইনালেও। তবে এই মৌসুমে ইতালিয়ান সিরি আ-তে রোমার অবস্থান ভালো নয়। ২০ ম্যাচ শেষে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে রোমা ৯ নম্বরে। সর্বশেষ ৬ ম্যাচে জয় মাত্র একটি। এরপর আর মরিনিওকে রাখার দরকার মনে করেনি তিনবারের ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন ক্লাবটি। মরিনিওর সঙ্গে তাঁর পুরো কোচিং স্টাফকেই বরখাস্ত করেছে রোমা।
বিবৃতিতে রোমার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ‘ক্লাবে আসার পর থেকে তাঁর আগ্রহ এবং প্রচেষ্টার জন্য আমরা এএস রোমার সবার পক্ষ থেকে জোসেকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা জোসে এবং তার সহকারীদের ভবিষ্যতের জন্য শুভ কামনা জানাই।’
২০২১ সালের মে মাসে টটেনহাম থেকে বরখাস্ত হওয়ার দুই সপ্তাহ পর তাঁকে নিয়োগ দিয়েছিল রোমা, ক্লাবটির ইতিহাসে তিনি ছিলেন ৬০তম কোচ। চলতি মৌসুম শেষেই ৬০ বছর বয়সী মরিনিওর চুক্তি শেষ হওয়ার কথা ছিল। তাঁর সময়ে কনফারেন্স লিগ আর ইউরোপা লিগে সাফল্য থাকলেও সিরি ‘আ’-তে রোমা খুব একটা ভালো করতে পারেনি।
মরিনিও যোগ দেওয়ার পর সর্বশেষ দুই মৌসুমেই লিগে ছষ্ঠ হয়েছে রোমা। চলতি মৌসুমেও এই মুহূর্তে নয় নম্বরে থাকা ইতালিয়ান ক্লাবটি সর্বশেষ হেরেছে এসি মিলানের কাছে, ৩-১ গোলে। রোমাতে মরিনিও শেষ ম্যাচ হয়ে থাকল সেটিই। গত সপ্তাহে লাৎসিওর বিপক্ষে কোপা ইতালিয়ার ম্যাচে লাল কার্ড দেখেছিলেন এই কোচ। যা ছিল ওই সময়ে ৪ দিনের মধ্যে তাঁর দ্বিতীয় লাল কার্ড। এর আগে গত বছর ইউরোপা লিগের ফাইনালে রেফারিকে উদ্দেশ্য করে কটু মন্তব্য করায় চার ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সিরি ‘আ’তে পেয়েছিলেন ১০ দিনের নিষেধাজ্ঞা। সব মিলিয়ে রোমার হয়ে ১৩৮ ম্যাচে তাঁর ৬৮ জয়, ৪০ হার, ৩০ ড্র।
অথচ রোমাতে মরিনিও অধ্যায়ের শুরুটা দারুণ ছিল। তাঁর হাত ধরেই ১৯৬১ সালের পর প্রথম ইউরোপিয়ান ট্রফি জেতে রোমা। এরপর রোমাকে ইউরোপা লিগের ফাইনালেও তোলেও সেভিয়ার কাছে হেরে যান টাইব্রেকারে।
এই মৌসুমে মাঠের পারফরম্যান্সে রোমা সেরাটা দিতে পারেনি, তেমনি মরিনিও জড়িয়েছেন নানা কাণ্ডে। ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক যে খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না, তাঁর প্রকাশ পায় কোপা ইতালিয়া থেকে বাদ পড়ার মরিনিওর কথাতে। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এখানে দুই মাস ও পাঁচ মাস ধরে আছি, আমিই একমাত্র লোক যিনি একটা অনুশীলন সেশনও বাদ দিইনি। গত আড়াই বছরে আমি একটাও ভুল করেনি। যদি পেশাদারির আদর্শ উদাহরণ দেখা হয়, সেটা আমিই। ২০ বছরের ক্যারিয়ারে একটা ম্যাচও আমি বাদ দেইনি।’
২০০০ সালে মরিনিওর কোচিং ক্যারিয়ার শুরু হয় বেনফিকাকে দিয়ে। এরপর কোচিং করিয়েছেন পোর্তো, রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি, ইন্টার মিলান, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও টটেনহামকে। দুইবার চ্যাম্পিয়নস লিগে জিতেছেন, ২০০৪ সালে পোর্তোর হয়ে, ইন্টার মিলানের হয়ে ২০১০ সালে। পর্তুগাল, ইংল্যান্ড, ইতালি ও স্পেন চারটি দেশেই লিগ জেতার স্বাদ পেয়েছেন স্বঘোষিত ‘স্পেশাল ওয়ান’ এই কোচ।