মার্তিনেজের সেই উদ্যাপন ফিরল আর্জেন্টিনার উৎসবে
সেদিন কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের মঞ্চে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের উদ্যাপন শ্লীলতার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল বলে মনে করেন অনেকেই। আর্জেন্টিনার গোলকিপারকে সেজন্য নানা কথাও শুনতে হয়েছে। মার্তিনেজ নিজেও পরে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, আর এমন হবে না। কিন্তু কথা রাখতে কি পারলেন!
আসলে চাইলেও কখনো কখনো কথা রাখা যায় না। ভেবে দেখুন, বিশ্বকাপ জয়ের পর আর্জেন্টিনার প্রথম ম্যাচ, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ তিন তারকা জার্সি পরে প্রথম মাঠে নামার আনন্দ— বাংলাদেশ সময় আজ ভোরে পানামার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে এসবের পাশাপাশি জয়ও এসেছে ২-০ গোলে। আর মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে আর্জেন্টাইন সমর্থকেরাও ছিলেন উন্মাতাল। ম্যাচ শেষে কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলের প্রায় সবকিছুই নানাভাবে স্মরণ করা হয়। তাহলে বিতর্কিত সেই উদ্যাপনও বাদ পড়বে কেন!
কোন উদ্যাপন? বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর টুর্নামেন্টে সেরা গোলকিপারের পুরস্কার ‘গোল্ডেন গ্লোভস’ নিতে মঞ্চে উঠেছিলেন মার্তিনেজ। পুরস্কারটি নিয়ে তা ঠিক কোমরের সামনের অংশে ধরে উদ্যাপন করেন মঞ্চেই—যে দৃশ্য অনেকেরই ভালো লাগেনি।
পরে সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল’কে মার্তিনেজ ওই উদ্যাপন নিয়ে বলেছিলেন, ‘ওই উদ্যাপনের জন্য অনুশোচনা হয় কি না? আসলে এমন কিছু বিষয় আছে যা আমি দ্বিতীয়বার কখনো একইভাবে করতে চাইব না...সতীর্থদের সঙ্গে মজা করতে ওটা করেছিলাম। কোপা আমেরিকাতেও করেছি। এমনকি লিও নিজেও আমাকে ওটা করতে নিষেধ করেছিল। কিন্তু আমি ওদের জন্যই করেছি।’
মার্তিনেজ দ্বিতীয়বার সেই উদ্যাপন করতে না চাইলেও পারেননি। পানামার বিপক্ষে জয়ের পর বিতর্কিত সেই উদ্যাপন মার্তিনেজ একাই করেননি, তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন আরও এরমান পেৎসেলা, গিদো রদ্রিগেজ, জেরোনিমো রুলি ও মার্কোস আকুনা। পাঁচজনই বিশ্বকাপের রেপ্লিকা ট্রফি কোমরের সামনের অংশে উঁচিয়ে ধরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে উদ্যাপন করেন। মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামের দর্শকেরাও দৃশ্যটি উপভোগ করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিটি ভাইরাল হতে সময় লাগেনি।
আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘ক্লারিন’ জানিয়েছে, ম্যাচের আগে এই পাঁচ খেলোয়াড়কে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) স্টুডিওতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সাক্ষাৎকারের জন্য। সেখানে মার্তিনেজের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, অমন উদ্যাপন করেছিলেন কেন? অ্যাস্টন ভিলা গোলকিপার সে ব্যাখ্যায় না গিয়ে সরাসরি ভুল স্বীকার করেন, ‘ওটা ভুল ছিল। (আকুনাকে দেখিয়ে) সে বলেছিল কোপা আমেরিকার মতো কোরো না। কিন্তু আমি বোকার মতো কাজটা করে বসি। বুঝতে পারিনি এটা নিয়ে এত কথা হবে। বিশ্বকাপের চেয়ে বেশি কথা হয়েছে ওই উদ্যাপন নিয়ে।’
ফিফার বর্ষসেরা ‘বেষ্ট’ পুরস্কারে সেরা গোলকিপার হওয়ার পর মঞ্চে কিন্তু ওই উদ্যাপন করতে দেখা যায়নি মার্তিনেজকে। এ বিষয়ে সাক্ষাৎকারে মার্তিনেজ মজার কিছু কথা বলেছেন, ‘অনুষ্ঠানটিতে অংশ নিতে ফ্রান্সে যাওয়ার পথে আমার স্ত্রী অনুরোধ করেছিল উদ্যাপনটি যেন না করি। বলেছিলাম, না আমার ভালোবাসা, ওটা করব না। ওই উদ্যাপন করলে আমি মঞ্চ থেকে নামতে পারব না। ওটা ফ্রান্সের প্যারিসে...ওখানে অমন কিছু করলে বাড়ি ফিরতে পারব না। তোমাকেও হারাতে হবে। আর কখনো ইউরোপে ঢুকতে পারব না।’