হেড করে করে ‘শরীরের ক্ষতি করেছেন’ ভারান
ফুটবল খেললে হেড করতেই হবে। তবে হেড করতে গিয়ে মাথায় বলের আঘাতের ক্ষতিকর প্রভাবও আছে। ক্যারিয়ারে হেডের পর হেড করে যাওয়া অনেক খেলোয়াড়ের শরীরে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে তা। হেডে কতটা স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে, সেটি নতুন করে বললেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারান।
এখন ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলা ফরাসি ফুটবলার বলেছেন, হেড করে করে এরই মধ্যে ‘শরীরের ক্ষতি’ করে ফেলেছেন তিনি। ৩০ বছর বয়সী ভারান জানালেন হেডের কারণে কনকাশন (মস্তিষ্কে আঘাতজনিত জটিলতা) হওয়ার পর ২০১৪ বিশ্বকাপের একটি ম্যাচ ‘অটোপাইলট’ বা ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে’ খেলেছেন। হেডের কারণে সৃষ্ট শারীরিক সমস্যা নিয়ে সচেতনতা ও সুরক্ষাব্যবস্থা বাড়ানোর দাবিও করেছেন ভারান।
ফরাসি ক্রীড়া দৈনিক লে’কিপকে ভারান বলেছেন, হেড নিয়ে ‘মাথাব্যথার’ কথা, ‘আমার সাত বছর বয়সী ছেলে ফুটবল খেলে, আমি তাকে বলে হেড করতে বারণ করি। কিন্তু আমি তো (হেড) এড়াতে পারি না। যদিও এটা তাৎক্ষণিক কোনো সমস্যা করে না, তবে আমরা জানি দীর্ঘ মেয়াদে বারবার এমন আঘাত বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।’
হেডের কারণে এরই মধ্যে যে শরীরের ক্ষতি হয়ে গেছে, সেটিও বললেন ভারান, ‘আমি জানি না ১০০ বছর বাঁচব কি না, তবে এটা জানি, আমি আমার শরীরের ক্ষতি করে ফেলেছি। হেড করার বিপদ সম্পর্কে সব শৌখিন ফুটবল মাঠে ও বাচ্চাদের জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’
ভারান বলেন, ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ ও ২০২০ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল মাদ্রিদ-ম্যানচেস্টার সিটি ম্যাচটি তিনি খেলেছেন কনকাশন নিয়েই। ২০১৪ বিশ্বকাপের ম্যাচটা স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি আছে জানার পরও খেলেছেন—সেটিও বললেন এই সেন্টারব্যাক, ‘শেষ ষোলোতে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা শেষ করতে পারলেও আমি “অটোপাইলট” মোডে ছিলাম। জার্মানির বিপক্ষে ম্যাচে আমি খেলার মতো অবস্থায় থাকব কি না, তা নিয়ে আমাদের দলের স্টাফরা চিন্তিত ছিলেন। আমি খুব দুর্বল ছিলাম, তবে ম্যাচটি আমি খেলি। বেশ ভালোই খেলেছিলাম। তবে যেটা আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়, সেটি হলো পরেরবার আমি যদি আবারও মাথায় আঘাত পাই, তখন কী হতে পারে।’
আমরা শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলাররা শারীরিক যন্ত্রণা সয়ে অভ্যস্ত। আমরা তো সৈনিকদের মতো, কঠিন মানুষ, শারীরিক সক্ষমতার প্রতীক। তবে এটা (কনকাশন) এমন একটা বিষয়, যেটি খালি চোখে বোঝার উপায় নেই।
মাথায় বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা থাকলেও পেশাদার ফুটবলে হেড যে এড়ানোর উপায় নেই, সেটি জানেন ভারান, ‘আমরা শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলাররা শারীরিক যন্ত্রণা সয়ে অভ্যস্ত। আমরা তো সৈনিকদের মতো, কঠিন মানুষ, শারীরিক সক্ষমতার প্রতীক। তবে এটা (কনকাশন) এমন একটা বিষয়, যেটি খালি চোখে বোঝার উপায় নেই।’
স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা মাথায় রেখেই ২০২১ সালে ইংল্যান্ডে পেশাদার ফুটবলারদের জন্য নতুন গাইডলাইন বা বিধিমালা জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, ২০২০-২১ মৌসুম থেকে ফুটবলাররা অনুশীলনে এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১০টি শক্তিশালী হেড নিতে পারবেন। ২০২১ সাল থেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে মস্তিষ্কে আঘাতজনিত জটিলতার কারণে খেলোয়াড় বদলি বাধ্যতামূলক করা হয়।