একাডেমি থেকে খেলোয়াড় বিক্রি করে রিয়াল–বার্সার আয় কত
একজন মানুষের ফুটবলার হিসেবে গড়ে ওঠার প্রক্রিয়াটা বেশ জটিল ও চ্যালেঞ্জিং। আমরা যখন কোনো ফুটবলারকে উদীয়মান তরুণ বা প্রতিভাবান হিসেবে দেখি, তার আগেই সেই ফুটবলারকে পাড়ি দিতে হয় লম্বা এক পথ। সম্ভাবনা নিয়ে অনেক ফুটবলার যাত্রা শুরু করলেও বেশির ভাগই শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন না। এরপরও প্রতিবছর অনেক ফুটবলার কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে পেশাদার ফুটবলে পথচলা শুরু করেন। আর তাঁদের এ পর্যায়ে আসার পেছনে বড় ভূমিকা রাখে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা একাডেমিগুলো।
এই একাডেমিগুলো স্কাউটিং করে শৈশব-কৈশোরের বৃত্তে থাকা খেলোয়াড়দের সম্ভাবনার নিরিখে বাছাই করে নিজেদের আওতায় নিয়ে আসে। পরে এই ফুটবলারদের একাডেমিতে তৈরি করা হয় ভবিষ্যতের জন্য। একাডেমিতে গড়ে ওঠা সব ফুটবলার যে তাদেরই ক্লাবের হয়ে খেলেন, তা নয়। বরং বেশির ভাগ খেলোয়াড়কে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর বিক্রি করা হয় অন্য ক্লাবে। এ খাত থেকে ক্লাবগুলো বিপুল পরিমাণে অর্থও ঘরে তোলে। এ কারণে কিছু কিছু ক্লাবের একাডেমির ওপর অখণ্ড মনোযোগ।
পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকা, আয়াক্স কিংবা অলিম্পিক লিওঁর কথা ধরা যাক।
সুইজারল্যান্ডের ফুটবল পরিসংখ্যানভিত্তিক স্বাধীন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্পোর্টস স্টাডিজের (সিআইইএস) হিসাবে গত ১০ বছরে একাডেমি থেকে ফুটবলার (১৫ বছর থেকে ২১ বছর) বিক্রি করে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে এই তিন ক্লাব। গত এক দশকে বেনফিকা ৫১ কোটি ৬০ লাখ ইউরো, আয়াক্স ৩৭ কোটি ৬০ লাখ ইউরো এবং লিওঁর আয় ৩৭ কোাটি ইউরো আয় করেছে।
বেনফিকার আয়ের দুই তৃতীয়াংশই এসেছে অবশ্য গত ৫ বছরে। যদিও এই সময়ে ঘরোয়া ফুটবলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাফল্য এলেও ইউরোপিয়ান ফুটবলে তাদের সাফল্য নেই বললেই চলে। এমনকি ইউরোপিয়ান পরাশক্তিদের তালিকাতেও বিবেচিত হয় না এই ক্লাবগুলো।
ইউরোপিয়ান পরাশক্তিদের মধ্যে এই তালিকার ৪ নম্বরে আছে রিয়াল। যারা গত এক দশকে একাডেমির খেলোয়াড় বিক্রি করে আয় করেছে ৩৬ কোটি ৪০ লাখ ইউরো। আর পাঁচে থাকা চেলসির আয় ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ। অন্যদের মধ্যে ৮ ও ৯ নম্বরে আছে টটেনহাম ও ম্যানচেস্টার সিটি। গত ১০ বছরে এই দুই ক্লাবের আয় ২৫ কোটি ৬০ লাখ ইউরো ও ২৫ কোটি ৪০ লাখ ইউরো। আর লা মাসিয়ার জন্য বিখ্যাত বার্সেলোনার অবস্থান তালিকার অনেক নিচে। ১৮ কোটি ৯০ লাখ ইউরো আয় নিয়ে কাতালান ক্লাবটির অবস্থান ২২ নম্বরে। ইউরোপে অন্য পরাশক্তিদের মধ্যে ২০ নম্বরে আছে লিভারপুল। অ্যানফিল্ডের ক্লাবটির আয় ১৯ কোটি ৯০ লাখ ইউরো।
একসময় একাডেমির জন্য বিখ্যাত আর্সেনাল আছে ২৩ নম্বরে। এ সময়ে ‘গানার’রা ১৮ কোটি ১০ লাখ ইউরোর খেলোয়াড় বিক্রি করেছে। ইউরোপের বাইরে একাডেমির খেলোয়াড় বিক্রি করে সবচেয়ে বেশি আয় ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্ল্যামেঙ্গোর। ১৩ নম্বরে থাকা ক্লাবটি গত ১০ বছরে আয় করেছে ২২ কোটি ৮০ লাখ ইউরো।