রেফারিকে টাকা দিয়ে বড় শাস্তির শঙ্কায় বার্সেলোনা
কদিন আগে দলবদলের আর্থিক বিবরণীতে মিথ্যাচার করে ১৫ পয়েন্ট জরিমানার মুখে পড়েছিল ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাস। এবার একই ধরনের শাস্তি চোখ রাঙাচ্ছে বার্সেলোনাকেও। তবে শাস্তির মাত্রা বড় হয়ে লা লিগা থেকে অবনমিতও হয়ে যেতে পারে বার্সা।
কাতালুনিয়ার ক্লাবটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, জোসেফ মারিয়া বার্তেমেউ সভাপতি থাকাকালে পরামর্শের জন্য তৎকালীন লা লিগার রেফারিদের টেকনিক্যাল কমিটির সহসভাপতি জোসে নেগ্রেরিয়াকে ১.৪ মিলিয়ন ইউরো (১৪ লাখ ইউরো) প্রদান করেছে তারা। ২০১৬-১৮ সাল পর্যন্ত তিন বছর ধরে এই অর্থ প্রদান করা হয়।
১৯৯৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত নেগ্রেরিয়া রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনে দায়িত্ব পালন করেন। এসইআর কাতালুনিয়া রেডিওর দাবি, লা লিগায় একসময় রেফারির দায়িত্ব পালন করা নেগ্রেরিয়াকে তাঁর কোম্পানি ডিএএসএনআইএলের মাধ্যমে ২০১৬ সালে ৫ লাখ ৩২ হাজার ৭২৮ ইউরো, ২০১৭ সালে ৫ লাখ ৪১ হাজার ইউরো এবং ২০১৮ সালে ৩ লাখ ১৮ হাজার ২০০ ইউরো দেয় বার্সেলোনা।
প্রসিকিউটর অফিসে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় নেগ্রেরিয়া এবং তাঁর ছেলে অবশ্য বার্সাকে অর্থের বিনিময়ে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। বিশেষ করে রেফারির দায়িত্ব পালনের সময় বার্সাকে বিশেষ কোনো সুবিধা দেননি বলে জানান নেগ্রেরিয়া।
তাঁদের দাবি, এই টাকা দেওয়া হয়েছিল পরামর্শক হিসেবে কাজ করার জন্য। যেখানে তাঁরা বার্সেলোনা খেলোয়াড়দের কীভাবে রেফারির সঙ্গে আচরণ করতে হয়, তা শিখিয়েছে। পাশাপাশি ম্যাচে কোন রেফারি দায়িত্ব পালন করছেন, তা বিবেচনায় নিয়ে কোন আচরণ করা যাবে এবং কোন আচরণ করা যাবে না, তা–ও খেলোয়াড়দের শিখিয়েছেন নেগ্রেরিয়া।
নেগ্রেরিয়া অবশ্য এ–সংক্রান্ত কাজের কোনো নথিপত্র দেখাতে পারেননি। তবে এক প্রতিক্রিয়ায় নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে বার্সেলোনা কর্তৃপক্ষ। বার্সা বলছে, বাইরের টেকনিক্যাল পরামর্শক হিসেবে তারা নেগ্রেরিয়ার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অতীতে সেবা নিয়েছিল। তবে কোনো ধরনের অনৈতিক ও অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেছে তারা।
বিবৃতিতে বার্সার পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বাহ্যিক কোম্পানিগুলোকে অর্থ দেওয়ার ব্যাপারে যে তদন্ত চলছে, সে সম্পর্কে বার্সেলোনা অবগত আছে। আমরা যা পরিষ্কার করতে চাই তা হলো, বাইরের টেকনিক্যাল পরামর্শকের সাহায্য বার্সা আগেও নিয়েছে। যার মাধ্যমে ক্লাবের কর্মকর্তাদের স্পেনের অন্যান্য ক্লাবের তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে তৈরি করা ভিডিও ফরম্যাটে প্রতিবেদন প্রদান করা হতো। পাশাপাশি কোচিং স্টাফদের অনুরোধে তারা পেশাদার রেফারিদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করত, যা কিনা পেশাদার ফুটবলে খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।’ নিজেদের সেরা ছন্দে থাকাকালীন এই তথ্য সামনে আসাতে হতাশাও প্রকাশ করেছে বার্সা কর্তৃপক্ষ। সে সঙ্গে যারা বার্সার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে ক্লাবটি।