ইউটিউবার-কাণ্ডে বেটিংয়ের গন্ধ শুঁকছে আর্জেন্টিনার ফুটবল
খেলাধুলা নিয়ে অবৈধ বাজি? হতে পারে। আবার নাও হতে পারে। কিন্তু বিষয়টি খোলনলচে জানতে তদন্ত তো করতে হবে। আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগ সেই তদন্তই শুরু করেছে।
কীসের তদন্ত—তা সম্ভবত জানা। আর্জেন্টিনার শীর্ষ লিগের ক্লাব দেপোর্তিভো রেইসত্রা গত সোমবার ভেলেজ সার্সফিল্ডের বিপক্ষে একজন ইউটিউবারকে মাঠে নামিয়েছিল। ইভান বুহাজেরুক—যিনি ইউটিউবার ও ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে ‘এসপ্রিন’ নামে পরিচিত, তাঁকে ম্যাচের জন্য রেইসত্রার একাদশে দেখেই চমকে উঠেছেন অনেকে। পেশাদার ফুটবলে কোনো অভিজ্ঞতাই নেই তাঁর। আনুষ্ঠানিকতার জন্য তাঁকে মাঠে নামিয়ে ৫৯ সেকেন্ড পরই তুলে নেন রেইসত্রার কোচ ক্রিস্টিয়ান ফাব্বিয়ানি।
দেপোর্তিভো রেইসত্রা বুয়েনস এইরেসের ক্লাব। মাঝে মধ্যেই অপ্রচলিত বিপণন পদ্ধতি অবলম্বন করে আলোচনায় উঠে আসে রেইসত্রা। বুহাজেরুকের সঙ্গে পেশাদার চুক্তি এবং ফেব্রুয়ারিতে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে (এএফএ) তাঁকে নিবন্ধন করাও ছিল রেইসত্রার তেমনই এক কৌশল। যদিও ব্যাপারটি প্রশংসার চেয়ে সমালোচিতই হয়েছে বেশি। ম্যাচের সময় মাঠে ধারাভাষ্যকারই বলেছেন, ‘সে (বুহাজেরুক) জানেও না কোথায় দাঁড়িয়ে আছে। এটা অবিশ্বাস্য। এটা একই সঙ্গে দুঃখজনক ও অসম্মানজনক ঘটনা।’
ইউটিউবে বুহাজেরুকের অনুসারীসংখ্যা ৭০ লাখ। তাঁর মাঠে নামার বিষয়ে গতকাল তদন্ত শুরু করেছে আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগ। সরকারি কৌঁসুলিদের অফিস থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেপোর্তিভো রেইসত্রার কোচ ক্রিস্টিয়ান ফাব্বিয়ানি এবং ইনফ্লুয়েন্সার ইভান বুহাজেরুক অবৈধ প্ল্যাটফর্মে জুয়াড়িদের আকৃষ্ট করতে চেয়েছিলেন কি না, সে বিষয়ে মামলা চালু করে তদন্ত শুরু করেছে অবৈধ বাজি নিয়ে কাজ করা কৌঁসুলিদের অফিস।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ বিষয়ে জানতে রেইসত্রার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু ক্লাবটি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) জানিয়েছে, নিজেদের নৈতিকতা ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে তারাও এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। এই ইউটিউবার ও ইনফ্লয়েন্সারকে মাঠে নামানোর মাধ্যমে ‘আর্জেন্টিনা ফুটবলের নৈতিকতা ও সুনামহানির চেষ্টা করা হয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখতে চায় এএফএ। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘ওলে’কে এএফএ সভাপতি ক্লদিও তাপিয়া বলেছেন, ‘অপ্রীতিকর কোনো কিছু ঘটলে সেটা আমাদের ঠিক করতে হবে।’
রেইসত্রা অবশ্য তাদের এই কর্মকাণ্ডে ‘যারা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন’, তাদের প্রতি ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই বিপণন কৌশল অনেক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ভেলেজ কিংবা আর্জেন্টাইন ফুটবলকে আমরা কোনোভাবেই ছোট করতে চাইনি।’