সিটির জয়ের রাতে ইউনাইটেডের হার
ডাবল হ্যাটট্রিক করতে পারতেন আর্লিং হলান্ড! না মানে, আজ প্রিমিয়ার লিগে ওয়েস্ট হামের বিপক্ষে যে পরিমাণ গোলের সুযোগ হলান্ড পেয়েছেন, তা কাজে লাগাতে পারলে এমনটা হতেও পারত। আর হলান্ডের সামর্থ্য নিয়ে তো আর প্রশ্ন নেই। তবে হলান্ড তা পারেননি। গোল পেয়েছেন মাত্র একটি। তাতে অবশ্য জয় পেতে কোনো সমস্যা হয়নি বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। অ্যাওয়ে ম্যাচে ওয়েস্ট হামকে সিটি হারিয়েছে ৩-১ গোলে। সিটি জয় পেলেও লিগের আরেক ম্যাচে ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে ব্রাইটনের কাছে ৩-১ গোলে হেরেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
পিঠের অস্ত্রোপচারের কারণে দুই ম্যাচ ডাগআউটে না থাকা পেপ গার্দিওলা আজ মাঠে ফিরেছেন। তবে ফিরেই প্রথমার্ধে ফরোয়ার্ডদের গোল মিসের ‘প্রদর্শনী’ দেখেছেন। শুরু থেকেই দাপট দেখালেও হলান্ডদের মিস আর সিটির রক্ষণের ভুল কাজে লাগিয়ে ম্যাচে প্রথম গোলটা পায় ওয়েস্ট হামই। জেমস ওয়ার্ড প্রস ম্যাচের ৩৬ মিনিটে হেডে গোল করেন। ম্যাচের ৪২ মিনিটে সহজতম সুযোগের একটি নষ্ট করেন হলান্ড। জেরেমি ডোকুর বাড়ানো বল ফাঁকা পোস্ট পেয়েও জালে জড়াতে পারেননি হলান্ড।
১-০ গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় পেপ গার্দিওলার দল। বিরতি থেকে ফিরেই অবশ্য সিটি সমতা ফেরায়। ৪৬ মিনিটে গোল এনে দেন আন্ডারলেখট থেকে ৭৬৫ কোটি টাকায় কেনা সেই ডোকু। গোলটাও করেন দুর্দান্ত। আলভারেজের কাছ থেকে বল পেয়ে ওয়েস্ট হামের বক্সে ঢুকে পড়েন এই বেলজিয়ান। এরপর তাঁর বাঁকানো শটে সমতায় ফেরে সিটি। ডোকুকে দিয়ে গোল করানোর পর নিজেও অসাধারণ একটা গোল পেতে পারতেন আলভারেজ। ৫১ মিনিটে তাঁর নেওয়া ফ্রি–কিক লাগে পোস্টে।
দুই মিনিট পর আবারও গোল করার সুযোগ পান হলান্ড। তবে এবার তাঁর ভুলের চেয়ে ওয়েস্ট হাম গোলরক্ষকের বীরত্বই বেশি। রদ্রির ভাসানো বলে উড়ন্ত হলান্ডের শট ঠেকিয়ে দেন ওয়েস্ট হামের গোলরক্ষক আলফনসে আরিওলা। সিটির দ্বিতীয় গোলেও অবদান রাখেন আলভারেজের। ডি–বক্সের বাইরে থেকে তাঁর ভাসানো বলে গোল করেন বেনার্দো সিলভা। আর ৮৬ মিনিটে গোল পেয়ে যান হলান্ড। তাতেই লিগে টানা পাঁচ ম্যাচ জয় আর পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ফেরা নিশ্চিত হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।
অন্যদিকে সিটির মতো দারুণ শুরু করে টেন হাগের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। শুরু থেকেই আক্রমণে ব্যস্ত রাখে ব্রাইটনের রক্ষণকে। তবে স্রোতের বিপরীতে প্রথম গোলটা পেয়ে যায় ব্রাইটন। ম্যাচের ২০ মিনিটে এগিয়ে যায় তারা। গোল করেন ইংলিশ ফুটবলার ড্যানি ওয়েলব্যাক। প্রিমিয়ার লিগে এটি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ওয়েলব্যাকের চতুর্থ গোল। রেড ডেভিলদের হয়ে খেলেছেন এমন ফুটবলারদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।
এক গোল হজমের পর আরও মরিয়া হয়ে ওঠে ইউনাইটেড। বিশেষ করে রাশফোর্ড, তবে ভাগ্য তাঁর সঙ্গে ছিল না। ম্যাচের ৪০ মিনিটে রাশফোর্ডের সহায়তায় গোলও পেয়ে যায় টেন হাগের দল। গোল করেন রাসমুস হয়লুন্দ। তবে বল টাচলাইনের বাইরে যাওয়ায় ভিএআরে গোল বাতিল হয়। ১-০ ব্যবধানে এগিয়েই বিরতিতে যায় ব্রাইটন।
তবে বিরতির পর দ্বিতীয়ার্ধে ম্যানচেস্টার সিটির মতো ম্যাচে ফিরতে পারেনি ইউনাইটেড। উল্টো ৫৩ মিনিটে রক্ষণের ভুলে আবারও গোল খেয়ে বসে ইউনাইটেড। ব্রাইটনের হয়ে গোল করেন প্যাসকাল গ্রোস। ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে ম্যাচে ফেরা দূরে থাক, ৭১ মিনিটে আরও একটি গোল হজম করে টেন হাগের দল। গোল করেন ব্রাজিলের জোয়াও পেদ্রো। ইউনাইটেড তাদের সান্ত্বনার গোলটি পায় এর দুই মিনিট পর। গোলটি আসে তরুণ মিডফিল্ডার হ্যানিবাল মেজব্রির কাছ থেকে। ৫ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার ১২ নম্বরে আছে ইউনাইটেড।