সাফ অনূর্ধ্ব–১৯: সাগরিকার জোড়া গোলে প্রত্যাশিত শুরু বাংলাদেশের
এই দলটা আগে কখনোই একসঙ্গে খেলেনি—মেয়েদের অনূর্ধ্ব–১৯ দল নিয়ে ম্যাচের আগে এমনই বলেছিলেন কোচ সাইফুল বারী। কিন্তু আজ সাফ অনূর্ধ্ব–১৯ টুর্নামেন্টে নেপালের বিপক্ষে ম্যাচটি দেখে একবারের জন্যও মনে হয়নি, দলটা একসঙ্গে এই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেছে। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে নেপালকে ৩–১ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশের মেয়েদের শুরুটা হয়েছে দাপটের সঙ্গেই।
অনূর্ধ্ব–১৯ দলে জাতীয় নারী দলের খেলোয়াড় আছেন কয়েকজন। অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার, সহ–অধিনায়ক স্বপ্না রানী, ইতি খাতুন ও সুরমা জান্নাত। আজ নেপালের বিপক্ষে একাদশে তাঁরা সবাই ছিলেন। বিকেএসপি থেকে বন্যা খাতুনও একাদশে ছিলেন।
তবে সবাইকে ছাপিয়ে আজ ম্যাচে আলাদাভাবেই নজর কেড়েছেন ১০ নম্বর জার্সিধারী মোসাম্মাৎ সাগরিকা। জোড়া গোল করেছেন। বল নিয়ে বারবার নেপালি রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছিলেন। ইতি খাতুন, উমেহলা মারমা আর পূজা দাসও খেলেছেন চমৎকার। পেছনে অধিনায়ক আফঈদা জয়নাব বিবি রিতা, সুরমা জান্নাত আর মুনকি আক্তারদের নিয়ে রক্ষণটাকে রেখেছিলেন আঁটসাঁট।
শুরু থেকেই নেপালি দলের ওপর চাপ তৈরি করে রেখেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ দল। সাগরিকা, ইতি, উমেহলারা বারবার নেপালি রক্ষণের ফাঁকফোকর বের করে সুযোগ তৈরি করেছেন। ৫ম মিনিটেই গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। গোলটা প্রায় হয়েই গিয়েছিল। কিন্তু স্বপ্না রানীর পাস থেকে পূজা দাস ফাঁকায় বল পেয়েও গোল করতে পারেননি।
এর কিছুক্ষণ পরই গোলের সুযোগ নষ্ট করেন সাগরিকা। ১০ মিনিটের মাথায় আফঈদার একটি শট বারে লেগে ফিরে আসে। ১৪ মিনিটে পূজা দাসের বাঁকানো শট অল্পের জন্য ক্রসবারে হাওয়া লাগিয়ে বাইরে চলে যায়। ২০ মিনিটে পূজা দাসের আরও একটি শট অল্পের জন্য বারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
৩৯ মিনিটে ইতি একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করার পর হতাশা কাটান সাগরিকা। একটি আক্রমণ থেকে বল ধরে সাগরিকা নেপালি গোলকিপার সুজাতা তামাংকে পরাস্ত করেন। তিন মিনিট পরই মুনকি স্কোরলাইন ২–০ করে ফেলেন। এরপর পেনাল্টি পেয়েও সেটি পোস্টে মারেন আফঈদা।
দ্বিতীয়ার্ধেও খেলার চিত্র একই ছিল। নেপালকে চাপেই রেখেছিল বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ আক্ষেপে পুড়তে পারে ৫৩ মিনিটে রক্ষণের এক ভুলের কারণে। সেই ভুলেই এর আগে সেভাবে গোলের সুযোগ তৈরি করতে না পারা নেপাল গোল করে ব্যবধান কমায়। গোলটি করেন সুকরিয়া মিয়া।
দ্বিতীয়ার্ধে কোচ সাইফুল বারী দুটি বদল আনেন একাদশে। উমেহলার জায়গায় নামেন তৃষ্ণা রানী। মুনকি আক্তারের বদলে নামেন নবীরন খাতুন। শেষ দিকে তৃষ্ণা রানীকেও বদলান কোচ, তাঁর জায়গায় নামেন রুমা আক্তার। শেষ বদলটি ছিল পূজা। তাঁর জায়গায় নামেন ঐশী খাতুন। তবে স্কোরলাইন ৩–১ হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ যে খুব বেশি আক্রমণে উঠেছে, তা নয়। কোচ হয়তো রোববার ভারতের বিপক্ষে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটির আগে শক্তি ক্ষয় করতে চাননি। ম্যাচের বাকি সময়ও বাংলাদেশের স্পষ্ট প্রাধান্য ছিল। ৩–১ স্কোরলাইনটাকে কখনোই অনিরাপদ মনে হয়নি।
দিনের প্রথম ম্যাচে ভারত ১০–০ গোলে ভুটানকে উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের শক্তির জানান দিয়েছে। প্রথমার্ধে ৪–০ গোলে এগিয়ে থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে ভারত গোল করেছে আরও ৬টি। রোববার এই ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশকে যে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ নিতে হবে, তা না বললেও চলে।