এশিয়ান গেমসে সানজিদাদের ‘অমূল্য অভিজ্ঞতা’
হাংজু এশিয়ান গেমসে ভালোই অভিজ্ঞতা হলো বাংলাদেশ নারী দলের। অন্যতম সেরা খেলোয়াড় সানজিদা আক্তার মনে করেন, ‘অমূল্য অভিজ্ঞতা। এই অভিজ্ঞতা আমাদের ভবিষ্যতে অনেক কাজে লাগবে।’
জাপান, ভিয়েতনাম আর নেপালের সঙ্গে একই গ্রুপে পড়েছিল বাংলাদেশ। মেয়েদের ফুটবলের ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে জাপানের অবস্থান ৮, ভিয়েতনামের ৩৪। দুটি দলই কিছুদিন আগে শেষ হওয়া মেয়েদের বিশ্বকাপে খেলেছে।
গ্রুপিং চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকেই এ দুটি ম্যাচ নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়েছে। সাবিনা–সানজিদা–কৃষ্ণারা কি আদৌ এ দুটি শক্তিশালী দলের বিপক্ষে দাঁড়াতে পারবেন? ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১৫২তম স্থানে থাকা বাংলাদেশের জন্য এ দুটি ম্যাচ ছিল রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষা। হাংজু এশিয়ান গেমসে জাপানের বিপক্ষে আগের শঙ্কাটাই সত্যি হয়েছে। ৮–০ গোলে হেরেছে মেয়েরা।
যদিও ভিয়েতনামের বিপক্ষে স্কোরলাইন ৬–১, তবু এ ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েদের পারফরম্যান্স খুব খারাপ নয় বলেছেন কোচ সাইফুল বারী, ‘ভিয়েতনামের বিপক্ষে স্কোরলাইনটা আসলে বাংলাদেশের মেয়েদের পারফরম্যান্সের সঠিক প্রতিফলন নয়।’
তবে নেপালের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমে ১–১ ড্র, ভালো কিছু বলা যাবে না মোটেও। অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের গোলে ১–০ গোলে এগিয়ে গিয়েও ৮৩ মিনিটে গোল হজম মেনে নিতে পারছেন না সানজিদা, কোচ সাইফুল বারী—কেউই। কোচের কথা, ‘নেপালের বিপক্ষে আমরা প্রথমার্ধে খুব ভালো খেলেছি। নেপালকে সুযোগই দিইনি। এক গোলে এগিয়ে গিয়ে ৮৩ মিনিটে গোল খাওয়াটা মনোযোগের ঘাটতি হিসেবেই দেখছি। ম্যাচটা আমাদের জেতা উচিত ছিল।’
সানজিদা জাপানের সঙ্গে ম্যাচটিকেই অমূল্য অভিজ্ঞতা বলছেন, ‘আমরা সব সময়ই নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভারত—এমন সব দলের সঙ্গেই খেলি। জাপান বিশ্বের আট নম্বর দল। ওরা যে কত শক্তিশালী, সেটা মাঠে নেমে বুঝেছি। ওদের পাস খেলা, ব্যক্তিগত দক্ষতা, গোল করার ক্ষমতা—সবই অন্য পর্যায়ের। ওদের সঙ্গে পেরে ওঠা খুবই কঠিন।’
ভিয়েতনামের সঙ্গে স্কোরলাইনটা পীড়া দিচ্ছে সানজিদাকে, ‘ওই ম্যাচ আমরা কিন্তু ভালো খেলেছি। ৬৬ মিনিট পর্যন্ত ২–০ ছিল। আমরা ভিয়েতনামের সঙ্গে অনেক আক্রমণাত্মক খেলেছি। ওরা গোলগুলো করেছে আমরা বেশি হাইলাইনে চলে যাওয়ার কারণে। জাপান, ভিয়েতনাম—দুটি ম্যাচই আমাদের বিরাট অভিজ্ঞতা।’
এশিয়ান গেমস দিয়েই প্রথমবারের মতো মেয়েদের জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন কোচ সাইফুল বারী। কেমন হলো তাঁর এই অভিজ্ঞতা, ‘আমাদের মেয়েদের দলটার শেখার ক্ষমতা অসাধারণ। গোলাম রব্বানী দারুণ করেছে মেয়েদের। আমি ওদের যেটাই শেখাতে চেয়েছি, ওরা শেখার চেষ্টা করেছে। ওরা পরিশ্রমী, কষ্টসহিষ্ণু এবং কমিটেড। ওদের নিয়ে অনেক দূর যেতে চাই আমি।’
হাংজুতে বাংলাদেশের তিনটি ম্যাচের মূল্যায়ন সাইফুল বারী করেন এভাবে, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল নেপালকে হারিয়ে দেশে ফিরব। কিন্তু পারিনি। এটা ব্যর্থতা। জাপান আর ভিয়েতনামের বিপক্ষে স্কোরলাইনটা ভদ্রোচিত রাখতে চেয়েছি। কিন্তু দুটি দলই খুবই শক্তিশালী। তারপরও ভুল কম করলে গোলও কম খেতাম। এই এশিয়ান গেমস নিয়ে আমরা বিশ্লেষণ করব। ভুলভ্রান্তি থেকে আমরা শিক্ষা নেব।’