২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

৮ পাসের দারুণ গোলে সেমিফাইনালে কিংস

জয়সূচক গোলের পর দরিয়েলতনকে নিয়ে সতীর্থদের উদ্‌যাপনছবি: বাফুফে

চার বিদেশি ফুটবলার নিয়ে সেনাবাহিনী ফুটবল দলের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বসুন্ধরা কিংস। শক্তির বিচারে দুই দলের তুলনায় কিংস এগিয়ে ছিল বড় ব্যবধানেই। তবে শক্তিমত্তা কিংবা মাঠের পারফরম্যান্স অনেক সময় স্কোরলাইনে ঠিকভাবে ফুটে ওঠে না। আজ কিংস অ্যারেনায় স্বাধীনতা কাপ ফুটবলে চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটিও তেমনই। একের পর এক আক্রমণ করেও কিংস সেনাবাহিনী ফুটবল দলকে হারিয়েছে ২-১ গোলে। দুটি গোলই এসেছে বিদেশিদের কাছ থেকে। প্রথম গোলটি উজবেক ফুটবলার বাবুরবেক ইউলদাশোভ আর দ্বিতীয়টি দরিয়েলতন গোমেজের। সেনাবাহিনীর একমাত্র গোলটি শাহরিয়ার ইমনের।

প্রথম থেকেই সেনাবাহিনী ফুটবল দলের ওপর ঝাঁপিয়েছে কিংস। মিগেল ফেরেইরা, দরিয়েলতন গোমেজ, শেখ মোরছালিনরা তৈরি করেছেন একের পর এক সুযোগ। সেনাবাহিনী ফুটবল দল রক্ষণেই মনোযোগ দিয়েছে বেশি। মাঝেমধ্যে প্রতি আক্রমণে ওঠার চেষ্টা ছিল। কিন্তু সেগুলো ছিল এলোমেলো। কিংসের রক্ষণেও প্রতি হয়েছে সেনাবাহিনীর কিছু আক্রমণ। স্পষ্ট প্রাধান্য থাকলেও প্রথম গোলটি পেতে কিংসকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩৮ মিনিট পর্যন্ত। মিগেলের কর্নার থেকে বাবুরবেক ইউলদাশোভ হেড করে এগিয়ে দেন কিংসকে। বলটি জাল স্পর্শ করেনি। কিন্তু গোল লাইন অতিক্রম করেছিল।

সেনাবাহিনীর গোলমুখে হেড করতে লাফিয়েছেন বাবুরবেক ইউলদাশোভ। কিংসের প্রথম গোলটি তাঁরই
ছবি: বাফুফে

গোল খেয়ে সেনাবাহিনী ফুটবল দলের যেভাবে পাল্টা আক্রমণে ওঠার কথা ছিল, সেভাবে অবশ্য তারা পারেনি। শক্তির পার্থক্যও প্রকট হয়ে দেখা দিচ্ছিল। কিন্তু কিংসও একের এক সুযোগ নষ্ট করেছে। যদিও ৬১ মিনিটে সেনাবাহিনী দল ভাগ্যক্রমে গোল পেয়ে ফিরেছিল সমতায়।

মিগেল ফেরেইরার (৮) একটি প্রচেষ্টা
ছবি: বাফুফে

গোলটির জন্য দায়ী কিংসের গোলকিপার মেহেদী হাসান শ্রাবণ। অল্প সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বার নিজের ভুলে গোল হজম করেছেন তিনি। এর আগে কিংস অ্যারেনাতেই এএফসি কাপে মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিপক্ষে বক্সের মধ্যে ভুল পাস দিয়ে দলকে গোল খাইয়েছিলেন এই গোলরক্ষক। আজও একই অবস্থা। গোলের কোনো সম্ভাবনাই ছিল না বলতে গেলে। উজবেক ডিফেন্ডার আশরার গফুরভ নিরীহ একটা পাস বাড়িয়েছিলেন মেহেদী হাসানের দিকে। কিংস গোলকিপার সেটি তুলে দেন শাহরিয়ার ইমনের পায়ে। সেনাবাহিনীর এই ফরোয়ার্ড সুযোগটা কাজে লাগান ভালোভাবেই।

কয়েকটি সুযোগ নষ্টের পর দরিয়েলতনের কাছ থেকেই এসেছে জয় সূচক গোলটি
ছবি: বাফুফে

অতর্কিত গোল খেয়ে অবশ্য হতোদ্যম হয়নি কিংস। বরং দারুণ এক বিল্ডআপ গোলে ৭৬ মিনিটেই তারা এগিয়ে যায় ২-১ গোলে। ৮ পাসের গোলটির গোড়াপত্তন গোলকিপার মেহেদী হাসান শ্রাবণের কাছ থেকেই। তাঁর কাছ থেকে বল পান বিশ্বনাথ ঘোষ। এরপর গফুরভের পা ঘুরে সেটি চলে যায় মিগেল ফেরেইরার কাছে। তিনি সামনে ডান প্রান্তে বাড়ান রফিকুল ইসলামের কাছে। রফিক আড়াআড়ি সেটি দেন রাকিব হোসেনকে। বাঁ প্রান্ত দিয়ে উঠে আসা সাদউদ্দিনকে বাড়ান তিনি। সাদ গোলমুখে ক্রস করলে তা থেকে গোল করতে কোনো ভুল হয়নি ব্রাজিলিয়ান দরিয়েলতন গোমেজের।

পুরো ম্যাচে সেনাবাহিনী ফুটবল দলের একমাত্র সাফল্য ছিল সমতাসূচক গোলটিই। কখনোই মনে হয়নি কিংসের শক্তিমত্তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে দলটি। ২-১ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর বাকি সময়টাতেই কিংসকে সেভাবে শঙ্কায় ফেলতে পারেনি তারা। জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।

ভালো খেলেছেন মোরছালিন
ছবি: বাফুফে

১১ ডিসেম্বর এএফসি কাপে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে ভূবনেশ্বরে যাবে কিংস। ‘ডি’ গ্রুপে শীর্ষ থাকা বাংলাদেশের লিগ চ্যাম্পিয়নদের সামনে বাধা ভারতের ওড়িশা এফসি। এ ম্যাচে জিতলে, এমনকি ড্র করলেও আন্ত–আঞ্চলিক সেমিফাইনাল রাউন্ড নিশ্চিত করবে তারা। স্বাধীনতা কাপও বন্ধ থাকবে সে জন্য।

দুটি সেমিফাইনালের লাইনআপই চূড়ান্ত হয়েছে আজ। ১৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সেমিফাইনাল দুটি। আজ দুপুরে মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব চট্টগ্রাম আবাহনীকে ১-০ গোলে হারিয়ে উঠে গেছে সেমিতে। তাদের প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। বসুন্ধরা কিংস খেলবে ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে।